”মোদি-শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে”, খালিস্থানি মন্তব্যে বিজেপি অফিস ঘেরাও শিখদের

বিক্ষোভকারীদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, "এই ঘটনার জন্য যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোডি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ক্ষমা চাইবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলবে।"

বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি ফের প্রকাশ্যে চলে এলো।সন্দেশখালি যাওয়ার পথে এক পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিতর্কিত ও উস্কানিমূলক মন্তব্য বিজেপির। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই প্রতিবাদ করলেন ওই নির্ভীক ও সৎ পুলিশ অফিসার। এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলেন তিনি।

এই ঘটনার জল যে বহুদূর গড়াবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতায় বিজেপি অফিস ঘেরাও করলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। বিক্ষোভকারীদের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি, “এই ঘটনার জন্য যতক্ষণ না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোডি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ক্ষমা চাইবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চলবে।” এদিন রাজ্যসভায় বাংলা থেকে নব নির্বাচিত সাংসদ পেয়েছে বিজেপি। সেই শমীক ভট্টাচার্য সেন্ট্রাল এভিনিউয়ের পার্টি অফিসে এলে, তাঁকেও ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে শিখ সম্প্রদায়ের মানুষরা। গো-ব্যাক স্লোগান দেওয়া হয় বিজেপি নেতাকে। বিজেপি মুর্দাবাদ বলেও স্লোগান তোলা হয়। অন্যদিকে, বিজেপির কর্মি-সমর্থকরা শিখদের কাউন্টার করতে জয় শ্রীরাম স্লোগান তোলে। সবমিলিয়ে মুরলিধর সেন লেনের পরিস্থিতি উত্তপ্ত। কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ অবশ্য দু’পক্ষকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে।

ঘটনাটি ঠিক কী? তখনও হাইকোর্টের অনুমতি আসেনি। দলবল নিয়ে কলকাতা থেকে সন্দেশখালি উদ্দেশ্যে রওনা হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ছিলেন অগ্নিমিত্রা পল, শংকর ঘোষ-সহ বিজেপি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। পথে ধামাখালিতে তাঁদের আটকায় পুলিশ। ব্যারিকেড করে দেওয়া হয় রাস্তায়। এরপর পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়, তখন পাগরি পরা এক পুলিশ আধিকারিককে উদ্দেশ্য করে “খালিস্থানি” মন্তব্য করেন বিজেপি নেতানেত্রীরা। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই তীব্র প্রতিবাদ করেন ওই পুলিশ কর্তা।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র নিন্দা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন পথে নেমেছেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। এদিন দুপুরে কলকাতায় বিজেপি অফিস ঘেরাও করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা। এমনকী, ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। কিন্তু নিজেদের অবস্থান অনড় শিখ। তাঁদের দাবি, ”প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ক্ষমা চাইতে হবে”! বিজেপি অফিসের সামনে জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে যেভাবে শিখ পুলিশ কর্তাকে বিজেপি খালিস্থানি বলে আঘাত করেছে সেই ক্লিপিংও দেখানো হয়।