কেন্দ্রকে ভর্ৎসনা, পতঞ্জলির ওষুধের বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

কেন্দ্রীয় সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

ওষুধের বিজ্ঞাপন নিয়ে সুপ্রিম নির্দেশে বড়সড় সমস্যার মুখে যোগগুরু রামদেবের পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থা। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও ভর্ৎসনা করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, সরকার দেখেও না দেখার ভান করছে। তারা চোখ বন্ধ করে বসে আছে!
এরই পাশাপাশি, বৈদ্যুতিন মাধ্যম এবং সংবাদপত্রে পতঞ্জলির ওষুধের বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের নভেম্বরে পতঞ্জলিকে নিজেদের ওষুধ সম্পর্কে ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ প্রচার করার বিষয়ে সতর্ক করেছিল শীর্ষ আদালত। এমনকী, জরিমানা হতে পারে বলেও মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল। সেই মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, এই ধরনের বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গোটা দেশকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার চোখ বন্ধ করে বসে আছে। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। সরকারকে অবিলম্বে ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, রামদেবের সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেছিল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (আইএমএ)। তাদের অভিযোগ ছিল, পতঞ্জলির বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে সরাসরি অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা এবং চিকিৎসককে অসম্মান করা হয়েছে। এমনভাবে বিজ্ঞাপনগুলি তৈরি করা হয়েছে যে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। আইএমএ-র আরও অভিযোগ ছিল, কোভিড প্রতিরোধী না-হওয়া সত্ত্বেও শুধু করোনিল কিট বিক্রি করেই ২৫০ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে রামদেবের পতঞ্জলি। এই কিট বিক্রি করার জন্য ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানো হয়েছিল। ২০২৩-এর নভেম্বরে মামলাটির শুনানির সময় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল, ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা’ বিজ্ঞাপনী প্রচার বন্ধ না করলে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ সংস্থাকে জরিমানা করা হবে।

২০২০ সালের ২৩ জুন প্রথম বার করোনিল কিট বাজারে এনেছিল পতঞ্জলি। ‘করোনিল’ এবং ‘শ্বাসারি বটি’ নামে দু’ধরনের ট্যাবলেট এবং ‘অণু তৈল’ নামের ২০ মিলিলিটারের একটি তেলের শিশি নিয়ে তৈরি ওই কিটের দাম রাখা হয়েছিল ৫৪৫ টাকা। চাইলে আলাদা ভাবে ট্যাবলেট এবং তেল কেনা যাবে বলেও জানানো হয়েছিল। তার পর ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ২৩ লক্ষ ৫৪ হাজার করোনিল কিট বিক্রি হয়েছে বলে সংস্থার তরফে জানানো হয়।আইএমএ পিটিশনে দাবি করে যে পতঞ্জলির বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনগুলি অ্যালোপ্যাথিকে অবমাননা করে এবং কিছু রোগ নিরাময়ের বিষয়ে মিথ্যা দাবি করে। আইএমএ দাবি করেছে যে প্রতিটি বাণিজ্যিক সত্তার তার পণ্যগুলিকে প্রচার করার অধিকার থাকলেও, পতঞ্জলির দ্বারা করা অপ্রত্যাশিত দাবিগুলি ড্রাগস এবং অন্যান্য জাদু প্রতিকার আইন, ১৯৫৪ এবং ভোক্তা সুরক্ষা আইন, ২০১৯-এর মতো আইনের সরাসরি লঙ্ঘন।

 

 

Previous articleকেন এখনও অধরা শাহজাহান? ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নবান্নর রিপোর্ট চাইলেন রাজ্যপাল
Next articleবাংলায় দোস্তি-কেরালায় কুস্তি! রাহুল গান্ধীর কেন্দ্রে বাম প্রার্থী ডি রাজার স্ত্রী অ্যানি