SLST নিয়োগে আইনি জট কাটাতে বৈঠক, সরকার খোলা মনে বিচার করছে: কুণাল ঘোষ

সমস্যার দ্রুত সমাধানের সবকটি পথে চেষ্টা করা হবে। তবে আবার কেউ কোনও মামলা করে দিলে বিষয়টা আবার আটকে যাবে বা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হতে পারে, এই আশঙ্কাও আলোচিত হয়।

এসএলএসটি নিয়োগ জটিলতায় ফের একবার সদর্থক ভূমিকা নিয়ে এগিয়ে এলো রাজ্য সরকার। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি মেনে আইনি প্রক্রিয়া চলার সঙ্গেই নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু শিক্ষা দফতরের। শূন্যপদের তালিকা চেয়ে পাঠালেন শিক্ষাসচিব। পাশাপাশি আইনি জটিলতা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে আবার আলোচনায় বসবে শিক্ষা দফতর, জানালেন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।

এসএলএসটি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির কর্মপ্রার্থীদের জটিলতার অবসানের চেষ্টায় এবার আন্দোলনকারীদের দেওয়া প্রস্তাবও জরুরি ভিত্তিতে খতিয়ে দেখতে শুরু করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। আন্দোলনকারীদের বক্তব‌্য নিয়ে বুধবার বিকাশ ভবনে আলোচনায় বসেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত‌্য বসু, শিক্ষা সচিব মণীশ জৈন, কমিশনের চেয়ারম‌্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার, তাঁদের আইনি আধিকারিকরা। কর্মপ্রার্থীদের বক্তব‌্যগুলি তাঁদের সামনে তুলে ধরেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ, যাঁর কাছে গিয়ে প্রস্তাবগুলি রেখেছিলেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠকে বারবার আইনি জটিলতার কথা উঠে আসে। পরিস্থিতির চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। ঠিক হয় সমস‌্যার দ্রুত সমাধানের সবকটি পথে চেষ্টা করা হবে। তবে আবার কেউ কোনও মামলা করে দিলে বিষয়টা আবার আটকে যাবে বা সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হতে পারে, এই আশঙ্কাও আলোচিত হয়।

আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব ছিল আদালতে সমাধানের পাশাপাশি বিকল্প পথেও চেষ্টা হোক। আইনি শর্তাধীনভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করুক কমিশন। পরে যদি আদালত তাতে স্থগিতাদেশ দেয় তখন কর্মপ্রার্থীরা সেটা মেনে নেবেন। এই আইনি শর্তাধীনভাবে প্রক্রিয়াটি এগোনোর প্রস্তাব খোলামনে আলোচনা করেন সরকারপক্ষের কর্তারা। শেষে ঠিক হয়, এ ব‌্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে আইনি পরামর্শ নেবে কমিশন। কমিশনের চেয়ারম‌্যান কথা বলবেন আইনজ্ঞদের সঙ্গে, বিশেষ করে রাজ্যের অ‌্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তর সঙ্গে। যদি আইনি দিক থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যায়, তাহলে কমিশন সেইমতো এগোবে। শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন সংশ্লিষ্ট অফিসারদের শূন‌্য পদের তালিকা তৈরি করে কমিশনকে পাঠিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন। যদি আইনি সম্মতি পাওয়া যায়, সে ক্ষেত্রে সেই শূন‌্য পদকে সামনে রেখেই এগোবে নিয়োগ প্রক্রিয়া। এবং এই সংক্রান্ত আরও যা যা বিষয় রয়েছে সেইগুলি নিয়ে সরকারি পদক্ষেপ শুরু হবে।

বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘আমি সরকারের কেউ নই। আন্দোলনকারীরা আমাকে যা বলেছিলেন, আমি সেগুলি তুলে ধরেছি। সরকার সদিচ্ছা দেখাচ্ছে। শিক্ষামন্ত্রী আন্তরিক। আদালত সংক্রান্ত জটিলতাগুলির জন‌্য দ্রুত পদক্ষেপ আটকে যাচ্ছে। আমরা দ্রুত নিয়োগ চাই। শেষপর্যন্ত আন্দোলনকারীদের তরফে যে আইনি শর্তাধীন নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছিল, সেটি নিয়েও কথা হয়েছে। কমিশন এ বিষয়ে দ্রুত আইনি পরামর্শ নেবে।’’ এদিন এসএলএসটি শারীরশিক্ষা, কর্মশিক্ষা সংক্রান্ত মামলাটিও ছিল। কিন্তু বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এদিন এজলাসে না বসায় শুনানি হয়নি। হতাশ কর্মপ্রার্থীরা বলেন, ‘‘মাননীয়া মুখ‌্যমন্ত্রী আমাদের নিয়োগের জন‌্য যা যা করার করে দিয়েছেন। প্রক্রিয়া চলছিল। আমাদের প‌্যানেলে কোনও বিতর্ক নেই। কিন্তু যারা চায় না চাকরি হোক, তারা কোর্টে গিয়ে অযোগ‌্যদের হয়ে মামলা করে স্থগিতাদেশ দিয়ে আমাদের নিয়োগ আটকে রেখেছে। আমাদের আশা ছিল, আগের শুনানিগুলির পর এদিন মহামান‌্য হাই কোর্ট স্থগিতাদেশ সরিয়ে আমাদের নিয়োগে ছাড়পত্র দেবেন। কিন্তু আজ আদালত না বসায় আমাদের মন ভেঙে গিয়েছে। এই সময় পেয়ে গেলে চাকরি ঠেকাতে যারা ব‌্যস্ত, সেই চক্রান্তকারীদের হাত শক্তিশালী হচ্ছে।’’

Previous articleমনিপুরে মেতেই সংগঠনের হামলা, অভিনব প্রতিবাদ পুলিশ কমান্ডোদের
Next articleজেলে জ্যোতিপ্রিয়র ওজন কমেছে ২৫ কেজি! দাবি আইনজীবীর