Friday, August 22, 2025

দেড় বছরের শিশুকে খুন এবং প্রমাণ লোপাটে মা ও প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড

Date:

Share post:

দেড় বছরের শিশুকে খুন এবং প্রমাণ লোপাটের দায়ে মা ও তার প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল আদালত। বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলা আদালতের ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক সন্দীপ চক্রবর্তী শিশুর মা হাসিনা সুলতানা এবং তার প্রেমিক ভাল্লু শা’কে এই দণ্ড দেন। ২০১৬ সালের ২২শে জানুয়ারি রাতে হাসিনা ও ভাল্লু মিলে প্রথমে শিশুটিকে এক পাতা সেন্ট্রিজিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে খাওয়ায়। শিশুটি ঘুমিয়ে পড়লে তাকে একাধিক আঘাত করা হয়। পরের দিন একটি ট্রাভেল ব্যাগে তার মৃতদেহ ভরে সেকেন্দ্রাবাদে দাঁড়ানো ফলকনামা এক্সপ্রেসের সিটের নিচে রেখে দেয়। পরে হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার হয় সেই শিশুটির দেহ। হাওড়া জিআরপি’র এই মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।

এদের মধ্যে বেশিরভাগ সাক্ষীর তেলেগু ভাষী হওয়ায় দোভাষী নিয়োগ করে সাক্ষীদের বক্তব্য আদালতে নথিভুক্ত করা হয়। আট বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় অভিযুক্তদের ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আজ হয় সাজা ঘোষণা। দুজনেই অন্ধ্রপ্রদেশের গুণ্টুরের বাসিন্দা। বিয়ে বাড়ি যাওয়ার নাম করে ছেলে শেখ জিসান আহমেদকে নিয়ে সেখানকার টেনালী থানা এলাকায় মায়ের কাছ থেকে বেড়িয়ে যান হাসিনা। এরপর প্রেমিক ভান্নুর সঙ্গে হায়দরাবাদের বানজারা এলাকায় গিয়ে তারা থাকতে শুরু করেন। তাদের মেলামেশায় ছোট্ট জিসান বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় হাসিনা তার প্রেমিক ভান্নুর সঙ্গে মিলে তাকে খুন করার ছক কষে।

জিসানের মৃতদেহ মা হাসিনা নিজের ট্র্যাভেল ব্যাগে ভরে সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে গিয়ে ডাউন হাওড়াগামী ফলকনামা এক্সপ্রেসে সিটের নিচে গিয়ে রেখে আসেন। ট্রেনটি হাওড়ায় এলে জিআরপি রুটিন তল্লাশি চালানোর সময় ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি সিটের নিচে থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে। তার মধ্যে পাওয়া যায় জিসানের দেহ। ঘটনার তদন্ত শুরু করে হাওড়া জিআরপি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায় জিসানকে নৃশংসভবে খুন করা হয়েছে। এদিকে হাসিনার মা অন্ধ্রপ্রদেশের টেনালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করায় শিশুটির ছবি হাওড়া জিআরপির নজরে আসে। এরপরই ধীরে ধীরে রহস্য উদঘাটিত হয়। হাওড়া জিআরপি গ্রেফতার করে জিসানের মা হাসিনা ও তার প্রেমিক ভান্নুকে। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২,২০১ ও ৩৪ ধারায় ধতদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়।

মঙ্গলবার আদালত দুজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে। হাওড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় জানান, ‘এটিকে বিরলতম অপরাধ বলে ঘোষণা করে অভিযুক্ত মা হাসিনা ও তার প্রেমিক ভান্নুকে ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। এই মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। কয়েকজন সাক্ষীকে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করে এনে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।’

 

spot_img

Related articles

বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীর পেনশনের আবেদনও খারিজ! আদালতে মুখ পুড়ল কেন্দ্রের

ইতিহাসকে বিকৃত করার বিজেপি-আরএসএসের যৌথ পরিকল্পনায় চরম দুর্দশা বাঙালি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের। নরেন্দ্র মোদি মুখে বাঙালি বিপ্লবীদের নাম নিলেও...

নতুন রঙ নতুন আনন্দ: বাংলার দুর্গাপুজোকে মোদির বন্দনায় কটাক্ষ তৃণমূলের

বাংলায় পুজো করতে গেলে আদালতের অনুমতি লাগে। প্রায় প্রতিদিন ছুটে ছুটে এসব প্রচার করে বেড়াচ্ছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা...

ইমান বেচলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী: শিখ সম্প্রদায়ের অপমানে নীরব রবনিতকে প্রশ্ন তৃণমূলের

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবনিত সিং বিট্টু  শিখ সম্প্রদায়ের মানুষের সম্মানকে বাংলার বিজেপি নেতাদের সামনে বিক্রি করে দিলেন। নরেন্দ্র মোদির...

আইনি জটিলতা কাটিয়ে স্নাতকের মেধাতালিকা প্রকাশ, শুরু হচ্ছে ভর্তি: জানালেন শিক্ষামন্ত্রী

আইনি জটিলতা কাটিয়ে স্নাতকস্তরে প্রকাশিত হল অনলাইনে পোর্টালে ভর্তির ফলাফল। শুক্রবার ফল (Result) প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই ভর্তি প্রক্রিয়া...