Saturday, December 20, 2025

দেড় বছরের শিশুকে খুন এবং প্রমাণ লোপাটে মা ও প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ড

Date:

Share post:

দেড় বছরের শিশুকে খুন এবং প্রমাণ লোপাটের দায়ে মা ও তার প্রেমিককে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিল আদালত। বৃহস্পতিবার হাওড়া জেলা আদালতের ফাস্ট ট্রাক কোর্টের বিচারক সন্দীপ চক্রবর্তী শিশুর মা হাসিনা সুলতানা এবং তার প্রেমিক ভাল্লু শা’কে এই দণ্ড দেন। ২০১৬ সালের ২২শে জানুয়ারি রাতে হাসিনা ও ভাল্লু মিলে প্রথমে শিশুটিকে এক পাতা সেন্ট্রিজিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে খাওয়ায়। শিশুটি ঘুমিয়ে পড়লে তাকে একাধিক আঘাত করা হয়। পরের দিন একটি ট্রাভেল ব্যাগে তার মৃতদেহ ভরে সেকেন্দ্রাবাদে দাঁড়ানো ফলকনামা এক্সপ্রেসের সিটের নিচে রেখে দেয়। পরে হাওড়া স্টেশন থেকে উদ্ধার হয় সেই শিশুটির দেহ। হাওড়া জিআরপি’র এই মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।

এদের মধ্যে বেশিরভাগ সাক্ষীর তেলেগু ভাষী হওয়ায় দোভাষী নিয়োগ করে সাক্ষীদের বক্তব্য আদালতে নথিভুক্ত করা হয়। আট বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই মামলায় অভিযুক্তদের ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মঙ্গলবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আজ হয় সাজা ঘোষণা। দুজনেই অন্ধ্রপ্রদেশের গুণ্টুরের বাসিন্দা। বিয়ে বাড়ি যাওয়ার নাম করে ছেলে শেখ জিসান আহমেদকে নিয়ে সেখানকার টেনালী থানা এলাকায় মায়ের কাছ থেকে বেড়িয়ে যান হাসিনা। এরপর প্রেমিক ভান্নুর সঙ্গে হায়দরাবাদের বানজারা এলাকায় গিয়ে তারা থাকতে শুরু করেন। তাদের মেলামেশায় ছোট্ট জিসান বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় হাসিনা তার প্রেমিক ভান্নুর সঙ্গে মিলে তাকে খুন করার ছক কষে।

জিসানের মৃতদেহ মা হাসিনা নিজের ট্র্যাভেল ব্যাগে ভরে সেকেন্দ্রাবাদ স্টেশনে গিয়ে ডাউন হাওড়াগামী ফলকনামা এক্সপ্রেসে সিটের নিচে গিয়ে রেখে আসেন। ট্রেনটি হাওড়ায় এলে জিআরপি রুটিন তল্লাশি চালানোর সময় ২০১৬ সালের ২৪ জানুয়ারি সিটের নিচে থেকে ব্যাগটি উদ্ধার করে। তার মধ্যে পাওয়া যায় জিসানের দেহ। ঘটনার তদন্ত শুরু করে হাওড়া জিআরপি। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা যায় জিসানকে নৃশংসভবে খুন করা হয়েছে। এদিকে হাসিনার মা অন্ধ্রপ্রদেশের টেনালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করায় শিশুটির ছবি হাওড়া জিআরপির নজরে আসে। এরপরই ধীরে ধীরে রহস্য উদঘাটিত হয়। হাওড়া জিআরপি গ্রেফতার করে জিসানের মা হাসিনা ও তার প্রেমিক ভান্নুকে। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২,২০১ ও ৩৪ ধারায় ধতদের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়।

মঙ্গলবার আদালত দুজনকেই দোষী সাব্যস্ত করে। হাওড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় জানান, ‘এটিকে বিরলতম অপরাধ বলে ঘোষণা করে অভিযুক্ত মা হাসিনা ও তার প্রেমিক ভান্নুকে ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। এই মামলায় ১৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। কয়েকজন সাক্ষীকে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করে এনে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।’

 

spot_img

Related articles

বিজয় হাজারে ট্রফির প্রস্তুতিতে সমস্যা বাড়ল বাংলা দলের

বিজয় হাজারে ট্রফি জয়ের লক্ষ্যে অনুশীলন শুরু করে দিয়েছে বাংলা। কিন্তু প্রথম দিন মাঠে যেতেই সমস্যার সম্মুখীন হতে...

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দায়িত্ব বাড়লো অক্ষরের, ওয়াইল্ড কার্ডে চমক দিলেন ঈশান!

বছর ঘুরলেই ক্রিকেটপ্রেমীদের নজরে বাইশ গজে কুড়ি-কুড়ি বিশ্বকাপের লড়াই (T20 World Cup 2026)। পূর্ব ঘোষণা মতোই শনিবার ২০২৬...

We want East Bengal Back: মোদির সভায় কী বাংলাদেশ দখলের ডাক!

প্রতিবেশী বাংলাদেশে অস্থির পরিস্থিতি। রাজনৈতিক নেতা থেকে মৌলবাদী নেতারা বারবার ভারত-বিরোধী ডাক দিচ্ছেন। আক্রান্ত হচ্ছে ভারতের দূতাবাস। তা...

SIR-এ বিপদে পড়া মানুষদের জন্য একটি শব্দ নেই! মোদির বৈঠকে কটাক্ষ তৃণমূলের

মতুয়া গড়ে এসআইআরে বাদ মতুয়া সম্প্রদায়ের বহু মানুষের নাম। সেই পরিস্থিতিতে রানাঘাটের মানুষের জন্য কী বার্তা দেবেন প্রধানমন্ত্রী...