মার্চের এক তারিখ তৃণমূলের সমস্ত পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। সোমবার বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকেও পদত্যাগ করলেন তাপস রায়। দল ও দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি একরাশ ক্ষোভ, হতাশা, অভিমান থেকেই তাঁর পদত্যাগ বলে জানিয়েছেন তাপস। তাঁর অভিযোগ, বাড়িতে ইডি তল্লাশি চালানোর পর দলের কেউ খোঁজ নেয়নি। সন্দেশখালি ও দুর্নীতিও তাঁকে নারা দিয়েছে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস তাঁর জন্য নয়।

সোমবার বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে-পরে তাপস রায় যে মন্তব্য করেছেন, তা কার্যত উড়িয়ে দিল তৃণমূল। পাল্টা শাসকদলের তরফে তাপস রায়কে কাঠগড়ায় তুলে দাবি করা হচ্ছে, “হয় তিনি অন্য কোনও দলের সঙ্গে বড় ডিল করেছেন, তাই এতো আত্মবিশ্বাস। অথবা, তাঁর বাড়িতে ইডির তল্লাশির পর তাপসবাবু ভয় পেয়েছেন। শিরদাঁড়া সোজা রাখতে পারছেন না।”

ঘটনাচক্রে, তাপস যখন সোমবার বিধায়কের পদে ইস্তফা দেওয়ার পরে বিধানসভার গেটে সাংবাদিক বৈঠক করছেন, ঠিক সেই সময়েই পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে সরকারি সভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি তাপসের নাম করে কিছু বলেননি। তবে বলেছেন, ‘‘বিজেপি সিবিআই-ইডির ভয় দেখিয়ে তৃণমূলকে ভাঙতে চাইছে!’’

সোমবার তৃণমূল তাপসের উদ্দেশে বলেছে, হয় তিনি অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী, নয়তো বাংলার মানুষকে বোকা ভাবছেন। দলের এক নেতার কথায়, “আগামিদিনে দিদির ছবি নিয়ে বিজেপির জমিদারির বিরুদ্ধে লড়াই হবে। যে দিদি কোভিড, আমপানের মতো কঠিন সময়ে মানুষের পাশে থেকেছেন।’’

শাসকদলের তরফে আরও বলা হয়েছে, তাপস রায় যে দাবি করেছেন, ইডি হানার পর তাঁর পাশে দলীয় নেতৃত্ব দাঁড়াননি, তাঁর সঙ্গে কোনও কথাও বলেননি, সে দাবি একেবারেই অসত্য। তৃণমূলের বক্তব্য, ইডি তাপসের ফোন বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল। দু’দিন পর তাঁর নম্বর সক্রিয় হয়। সেই সময়েই দলীয় নেতৃত্ব তাঁর সঙ্গে একাধিক বার কথা বলেছিলেন। শাসকদলের আরও বক্তব্য, একটা সময় তাপস রায়কে উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, তখন তিনি এই কথাগুলি বললেন না কেন? লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণার ১৫দিন আগেই কেন প্রকাশ্যে দলের বিরুদ্ধে কথা বলে পদত্যাগ করলেন। তাহলে কি অন্য দলের সঙ্গে যোগ রেখেই এমনটা করলেন তাপস রায়?
