হিন্দু রাষ্ট্রের লক্ষ্যে ৪০০ আসন, বিতর্কে বিজেপি সাংসদ হেগড়ে

ছয়বারের বিজেপি সাংসদ কর্ণাটক থেকে ২০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে কর্মীদের নতুন সংবিধানের জন্য উস্কানি দেন। তিনি বলেন, "সংবিধানের যথাযথ পরিবর্তন ও কংগ্রেস আরোপিত অতিরিক্ত সংযোজন বাতিল করা প্রয়োজন"।

ফের হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির উস্কানি বিজেপি সাংসদের মুখে। ছয় বছর আগে কর্ণাটকের যে বিজেপি সাংসদ অনন্তকুমার হেগড়ে (Anantkumar Hegde) ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র তৈরির বার্তা দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন, সেই হেগড়েই ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির স্বৈরাচারি (dictatorship) মনোভাবকেই স্পষ্ট করছে। সংবিধানের প্রস্তাবনা থেকে ‘অতিরিক্ত’ শব্দ ছেঁটে ফেলে ‘হিন্দু সমাজের আইন’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য কর্মীদের বার্তা দেন হেগড়ে। তাঁর এই বক্তব্যের পর একদিকে বিরোধীরা কঠোর সমালোচনা শুরু করেছে। অন্যদিকে বিজেপি কীভাবে তাঁর এই বক্তব্যের দায় ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যস্ততা।

কর্ণাটকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে নরেন্দ্র মোদির ৪০০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা মনে করিয়ে দিতে গিয়ে হেগড়ে সংবিধান সংশোধনকেই মূল অ্যাজেন্ডা (agenda) হিসাবে তুলে ধরেন। ছয়বারের বিজেপি সাংসদ কর্ণাটক থেকে ২০ আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে কর্মীদের নতুন সংবিধানের জন্য উস্কানি দেন। তিনি বলেন, “সংবিধানের যথাযথ পরিবর্তন (right distortions) ও কংগ্রেস আরোপিত অতিরিক্ত সংযোজন (unnecessary additions) বাতিল করা প্রয়োজন”।

তারই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, “কংগ্রেস সংবিধানের মৌলিকতা নষ্ট করেছে কিছু অপ্রয়োজনীয় জিনিস জুড়ে, বিশেষত এমন কিছু আইন এনে যাতে হিন্দু সমাজকে দমিয়ে রাখা যাবে। যদি এর পরিবর্তন চান তাহলে বর্তমানে যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আছে তাতে সম্ভব না। লোকসভায় কংগ্রেস না থাকলেও হবে না, নরেন্দ্র মোদি লোকসভায় সংখ্যা গরিষ্ঠ হলেও সম্ভব না।” অর্থাৎ লোকসভার প্রচারে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ৪০০ আসনের দাবি যে দেশের সংবিধানকে বদলে ফেলার জন্য, দেশের প্রাক্তন মন্ত্রীর বার্তায় তারই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে।

এরপরই সমালোচনায় আসরে নামে কংগ্রেস। সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, “মোদি সরকার, বিজেপি, আরএসএস চুপিসাড়ে স্বৈরাচারি শাসন চাপাতে চাইছে। এর ফলে মনুবাদী মনোভাব প্রতিষ্ঠা করে এসসি, এসটি, ওবিসিদের অধিকার কেড়ে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়াই বন্ধ হবে বা ছদ্ম নির্বাচন হবে। সংবিধানের স্বাধীনতা হরণ করা হবে। বাকস্বাধীনতা দমন করে দেওয়া হবে। বিজেপি ও আরএসএস ধর্মনিরপেক্ষতার গঠন ও বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য নষ্ট হয়ে যাবে।” তবে আবার একবার সাংসদের বিরুদ্ধে ভোটের আগে এই ধরনের অভিযোগ ওঠায় তড়িঘড়ি মঞ্চে নেমেছে বিজেপি। ভোটে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঠেকাতে দলের তরফ থেকে দূরত্ব তৈরি চেষ্টা করা হলেও সাংসদ হেগড়ে কর্মীদের সামনে মোদির আসল উদ্দেশ্যকে তুলে ধরেছে।

Previous articleদুর্নীতিগ্রস্তদের দ্রুত সাজা না হলে বিচার ব্যবস্থা অর্থহীন হয়ে পড়বে: হাই কোর্ট
Next article“এই উপলব্ধি আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ”! অস্কার মঞ্চে ওপেনহাইমারের জয়জয়কারে আবেগপ্রবণ নোলান