যোগী সরকারের ‘গণবিবাহ প্রকল্পে’ ফের বড়সড় দুর্নীতি! টাকা হাতাতে নিজের ভাইকেই বিয়ে করলেন দিদি

যোগীরাজ্যে 'গণবিবাহের' নামে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেই দুর্নীতিই যেন একপ্রকার আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী গণবিবাহ প্রকল্পে (Chief Minister Mass Marriage Scheme) টাকা হাতানোই লক্ষ্য! আর সেই টাকা হাতে পেতেই বড়সড় কাণ্ড ঘটালেন যোগীরাজ্যের (Yogi State) এক যুবক। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো চাপে উত্তর প্রদেশের যোগী সরকার (Yogi Adityanath Govt)। সূত্রের খবর, যোগীরাজ্যে ‘গণবিবাহের’ নামে দুর্নীতির অভিযোগ নতুন কিছু নয়। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে সেই দুর্নীতিই যেন একপ্রকার আকাশছোঁয়া হয়ে গিয়েছে। ‘মুখ্যমন্ত্রী গণবিবাহ প্রকল্পে’ রাজ্যের কনেদের ৫১ হাজার টাকা দেয় যোগী সরকার। আর সেই টাকা হাতাতেই এবার সবকিছু ভুলে নিজের দিদির সঙ্গেই সাত পাকে বাঁধা পড়লেন উত্তর প্রদেশের লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা কৃষ্ণ যাদব। তবে এই কারসাজিতে মাস্টারমাইন্ড ছিলেন দিদি (কনে) প্রীতি যাদবই। প্রকল্পের টাকা নিজেদের পকেটে পুরতে ভুয়ো কাগজপত্র তৈরি করা থেকে শুরু করে নিজের ভাইকেই বিয়ে করার পরিকল্পনা করেন প্রীতি। তিনি ভেবেছিলেন ভাইকে বিয়ে করে প্রকল্পের পুরো টাকাটাই নিজের হাতে পাবেন। কিন্তু কোথায় কী? সবকিছু ঠিক থাকলেও বাঁধ সাধে তাঁদের বিয়ের একটি ভিডিও। আর সেই ভিডিও ভাইরাল হতেই তড়িঘড়ি নিজেদের মুখ বাঁচাতে আসরে নামতে বাধ্য হয় যোগী সরকার।

 

পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য! সরকারের খাতায় নিজেকে বিবাহিত দেখিয়ে টাকা হাতানোর জন্য নিজেরই ভাই কৃষ্ণের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেন তিনি। যদিও সরকারি পঞ্চায়েত আধিকারিকের উপস্থিতিতেই একেবারে রীতি মেনে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর বিয়ের ছবি তুলে সরকারের কাছে টাকার অনুমোদনের জন্য পাঠানো নয়। আর তাতেই বাঁধে গণ্ডগোল। পরে জানা যায়, প্রীতি নাকি আগে থেকেই বিবাহিত। এলাকারই রমেশ নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে আগেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। এমন অভিযোগ তুলে স্থানীয় পুরন্দরপুর থানায় তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধেই এফআইআর দায়ের করেন খোদ এডিও চন্দন পাণ্ডে। শুধু তাই নয়, ভুয়ো বিয়ের আসরে উপস্থিত ছিলেন কাজরি গ্রাম পঞ্চায়েতের সরকারি আধিকারিক মিলিন্দ চৌধুরী। ইতিমধ্যে, ঘটনায় তাঁর ‘কারসাজি’ সামনে আসতেই নিজেদের মুখ বাঁচাতে ওই সরকারি আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে যোগী সরকার। পাশাপাশি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইন্দ্রেশ ভারতী নামে আরও এক সরকারি কর্মীকেও বরখাস্ত করা হয়েছে বলে খবর।

যদিও বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই যোগী সরকারের সমালোচনায় সরব বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, গণবিবাহের নামে দুর্নীতি করতেই এটা যোগী সরকারের নয়া চাল। কীভাবে একজন মেয়ে নিজের বিয়ে লুকিয়ে এবং ভুয়ো পরিচয় দিয়ে টাকার দাবি করতে পারে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। যদিও গণবিবাহে দুর্নীতির বিষয় সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে যোগী সরকার। ইতিমধ্যেই উত্তর প্রদেশের একাধিক প্রান্ত থেকে কমপক্ষে ১৭ বর কনেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি চাপে পড়তেই প্রতিটি বিয়ে খতিয়ে দেখতে গঠন করা হয়েছে ৩ সদস্যের কমিটি। তবে কমিটির তরফে সাফ জানানো হয়েছে আগে কনেকে টাকা চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করতে হবে। আর সেই আবেদন জমা পড়লেই তা খতিয়ে দেখে টাকা তুলে দেওয়া হবে।

Previous articleদাড়িভিট নিয়ে এবার ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার!
Next article৪ মাস বয়সেই ২৪০ কোটির মালিক! ইনফোসিস কর্তার নাতির দখলে কত শেয়ার