Friday, August 22, 2025

নির্জন দ্বীপে স্বেচ্ছাবন্দি, মোহ কাটলেও  ব্যর্থ ফেরার চেষ্টা !

Date:

Share post:

প্রশান্ত মহাসাগরে একাধিক আগ্নেয়  দ্বীপগুলির মধ্যে কোনও দ্বীপই বসবাসযোগ্য নয়। সেখানে একমাত্র, বাসযোগ্য হল পিটকায়ের্ন দ্বীপটি। জানলে অবাক হবেন, গোটা পিটকায়ের্ন দ্বীপ জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি কাঠের বাড়ি। আর এই কাঠের বাড়িগুলিতেই থাকেন দ্বীপের বাসিন্দারা। তবে শুধুমাত্র নৌকা ছাড়া ওই দ্বীপে যাতায়াতের আর কোনও ব্যবস্থা নেই।

তথ্য বলছে, প্রশান্ত মহাসাগরের পিটকায়ের্ন দ্বীপটি প্রথম নজরে পড়ে ১৫ বছরের এক বালকের। ১৭৬৭ সালের ৩ জুলাই প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে ভেসে যাচ্ছিল ব্রিটেনের একটি যুদ্ধাজাহাজ। ওই যুদ্ধজাহাজের মধ্যেই ছিল ব্রিটেনের নৌবাহিনীর মেজর জন পিটকায়ের্নের ছেলে ১৫ বছরের রবার্ট পিটকায়ের্ন।ওই পিটকায়ের্ন দ্বীপটি নাকি দেখতে পায় ওই ছোট বালক রবার্ট পিটকায়ের্নের। যেহেতু, রবার্ট প্রথমে ওই দ্বীপটি দেখতে পায় বলে ওই দ্বীপের নাম রাখা হয় পিটকায়ের্ন।

১৭৬৭ সালের দ্বিপের নামকরণের পর ১৭৯০ সালে ওই পিটকায়ের্ন দ্বীপে আটকে পড়ে ব্রিটেনের একটি জাহাজ। জানা যায়, সেই জাহাজে ছিলেন ন জন নৌসেনা, ও ৬ জন পুরুষ, ১১জন মহিলা ও একজন শিশু। সকলেই তাহিতি দ্বীপের বাসিন্দা ছিলেন। আশ্চর্যভাবে, ওই দ্বীপে পৌঁছানোর পরই নিজেদের জাহাজটি পুড়িয়ে ওই দ্বীপেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন ওই জাহাজের ২৭জন যাত্রী। ওই দ্বীপে চাষবাস করে ও মাছ ধরে জীবনযাপন করতেন তারা। প্রায় পাঁচ বছর ওই দ্বীপেই বন্দি হয়ে ছিলেন সকলে। এরপরই, মূল ভূখন্ডে ফেরার জন্য আকুল হয়ে ওঠেন তারা।

তাদের মধ্যে ক্রমশ ব্যাকুলতা বাড়তে থাকে। এরপর, ১৭৯৫ সালে একটি জাহাজ দেখতে পান ওই দ্বীপের বাসিন্দারা। কিন্তু তাদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তীরে এসে ভেড়েনি ওই জাহাজ। এরপর, ১৮০১ সালে আরও একটি জাহাজ দেখতে পান পিটকায়ের্নের বাসিন্দারা। কিন্তু সেটি এসে পৌঁছায়নি দ্বীপে। এরপরবর্তী সময়েও ওই দ্বীপের সামনে দিয়ে জাহাজ গেলেও, কোনও জাহাজই থামেনি ওই দ্বীপে। এইভাবে, ১৮০৮ সাল পর্যন্ত ওই দ্বীপেই বন্দি হয়ে থাকেন বাসিন্দারা।

এরপর, ১৮০৮ সালের পর পিটকায়ের্ন দ্বীপে নোঙর ফেলে টোপাজ নামে এক আমেরিকার জাহাজ। ওই দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় কাটান ওই জাহাজের ক্যাপ্টেন। ওই ক্যাপ্টেন মেহিউ-এর মাধ্যমেই ওই দ্বীপের জনবসতির কথা প্রকাশ্যে আসে। এরপর থেকেই ওই দ্বীপের সামনে দিয়ে কোনও জাহাজ গেলেই দ্বীপের বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে যেত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস।শেষ পর্যন্ত, ১৮৩৮ সালের ৩০ নভেম্বর ব্রিটিশ শাসনের অন্তর্ভূক্ত হয় ওই দ্বীপটি। এরপকর ১৮৫০ সালে ব্রিটেন সরকারের কাছে তাঁদের বসবাসের জায়গা চাওয়ায়, এরপর, নরফক দ্বীপে যান ১৯৩ জন। নরফক দ্বীপে পৌঁছানোর ১৮ মাস পর আবারও তাদের মধ্যে ১৭ জন ফিরে যান পিটকায়ের্ন দ্বীপে। বাকিরা নরফক দ্বীপেই স্থায়ীভাবে থেকে যান।

অন্যদিকে, পিটকায়ের্ন দ্বীপের সঙ্গে বাইরের জগতের কোনও যোগাযোগ না থাকার কারণে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ওই দ্বীপের মহিলাদের উপর।দ্বীপের অধিকাংশ মহিলাই যৌন নির্যাতনের শিকার হন বলে প্রকাশ্যে আসে।এরপর, ১৯৯৯ সালে ওই দ্বীপে ব্রিটেনের এক পুলিশ আধিকারিক পৌঁছালে তার কাছে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে ১৫ বছরের এক নাবালিকা। এরপর নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ ওই দ্বীপে পৌঁছালে তাদের কাছেও যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের ওই দ্বীপের মহিলারা।

 

spot_img

Related articles

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...