অরবিন্দ কেজরিওয়ালই (Arbind Kejriwal) প্রথম যিনি পদে থাকা অবস্থাতে গ্রেফতার হলেন। এর আগেও ৩ মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয় কিন্তু তাঁরা গ্রেফতারের সম্ভবনা দেখা দিতেই পদে ইস্তফা দেন। তালিকায় রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের ২, বিহারের ১, তামিলনাড়ুর ১জন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের সবার বিরুদ্ধেই আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ ছিল। তবে, সবক্ষেত্রেই যে কেন্দ্র বিরোধীদলের মুখ্যমন্ত্রীদের উপরই এই খাঁড়া নেমে এসেছে, তা কিন্তু নয়।

আবগারি দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করেছে ED। এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে ৯ বার তলব করেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। কিন্তু তিনি হাজিরা দেননি। এর পর বৃহস্পতিবার সন্ধে ৭টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় ইডি। ঘণ্টা দুয়েকের তল্লাশি অভিযান শেষে রাত ৯টা নাগাদ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতার করা হয়।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও গ্রেফতার হয়েছেন অনেক রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ৩১ জানুয়ারি জমি জালিয়াতি সংক্রান্ত বেআইনি আর্থিক লেনদেন মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত সোরেন (Hemant Soren)। ৬০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশির পরে হেমন্তকে গ্রেফতার করা হয়। তার আগে রাজভবনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন তিনি।

২০০৬ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ঝাড়খণ্ডের চতুর্থ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন নির্দল বিধায়ক মধু কোড়া (Madhu Kora)। খনি কেলেঙ্কারিতেও নাম জড়িয়েছিল মধুর। তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপ এবং হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তি রাখার অভিযোগ উঠেছিল। এর পরে গ্রেফতার হন মধু। তবে, তিনি তাঁর আগে রাজভবনে ইস্তফা দিয়ে আসেন।

গ্রেফতারির কারণে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফার নজির অবশ্য হেমন্তের আগে ২ মুখ্যমন্ত্রীর আছে। বিহারের লালুপ্রসাদ এবং তামিলনাড়ুর জয়ললিতা (Jaylalita)। পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ায় লালুর। ১৯৯৭ সালের ২৩ জুন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ (Lalu Prasad)-সহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে CBI। মাস খানেক পরে ২৫ জুলাই লালুকে গ্রেফতার করতে আধা সেনা দিয়ে বাড়ি ঘিরে ফেলেন সিবিআইয়ের তৎকালীন যুগ্ম অধিকর্তা উপেন বিশ্বাস। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের জোরে গ্রেফতার না হলেও, পদে ইস্তফা দেন লালু। সেই পদে বসান স্ত্রী রাবড়ী দেবীকে। ৩০ জুলাই সিবিআই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জেলে যান লালু।

আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির মামলায় ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুর বিশেষ আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন এডিএমকে নেত্রী জয়ললিতা। পদে ইস্তফা দিয়ে জেলেও গিয়েছিলেন তিনি।

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীদের তালিকায় আছেন হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমপ্রকাশ চৌতালা, অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন চন্দ্রবাবু নায়ডু, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির বিএস ইয়েদুরাপ্পা, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী ডিএমকের নেতা এম করুণানিধি। এঁদের সবার বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তবে, মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেননি কেজরিওয়াল (Arbind Kejriwal)। আপের তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে জেলে বসেই সরকার চালাবেন কেজরি। দিল্লির মন্ত্রী তথা আপ নেত্রী অতিশী মারলেনা জানিয়েছেন, কেজরিওয়াল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। জেলে বসেই তিনি সরকার চালাবেন।
