দিলীপকে সরিয়ে অগ্নিমিত্রা! মানতে পারছেন না মেদিনীপুরের বিজেপি কর্মীরা

তিনি রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন বিজেপি বাংলার বুকে প্রথমারের জন্য লোকসভায় ১৮টি আসন জিতেছিল। বিধানসভায় ৭৭টি।

সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর সফলতার হার ১০০ শতাংশ। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে প্রথমবারের জন্য খড়গপুর (সদর) কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। হারিয়ে ছিলেন আটবারের “অপরাজেয়” কংগ্রেস বিধায়ক জ্ঞান সিং সোহন পালকে। আড়াই বছরের মধ্যে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ফের পদ্ম প্রতীকে দাঁড়িয়ে ছিলেন মেদিনীপুর কেন্দ্রে। প্রবল প্রতিপক্ষ তৃণমূলের মানস ভূঁইয়াকে পরাজিত করে চমকে দিয়েছিলেন। তিনি রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন বিজেপি বাংলার বুকে প্রথমারের জন্য লোকসভায় ১৮টি আসন জিতেছিল। বিধানসভায় ৭৭টি।

এহেন এক সফল নেতাকে এবার কার্যত হেনস্থা করল তাঁর দল বিজেপি। অনেক টালবাহানার পর টিকিট দিলেও, তাঁর নিজের তৈরি করা জমি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার দিলীপ ঘোষকে তাঁর কেন্দ্র মেদিনীপুর থেকে সরিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে। বুকে অভিমান চেপে নিয়েই লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ।

এদিকে মেদিনীপুর আসনে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিকে টিকিট না দেওয়ায় চরম ক্ষুব্ধ দিলীপ অনুগামীরা। দ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছে আদি-নব্যের। এর মধ্যেই মেদিনীপুরে মাটিতে পা রাখলেন এই লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল। কর্মীদের ‘সন্তুষ্ট’ করতে তিনি জানালেন, দিলীপ ঘোষের হাত ধরেই আমি রাজনীতিতে এসেছি। সমর্থকদের মন তাতে গলবে কী, সে প্রশ্ন থাকছেই।

গত রবিবার রাতে প্রার্থীতালিকা প্রকাশ করে বিজেপি। সবাইকে কার্যত চমকে দিয়ে মেদিনীপুর আসনে প্রার্থী করা হয় অগ্নিমিত্রা পলকে। রাজনৈতিক মহলের মতে, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও ‘কলকাঠি’ নেড়েছেন বিরোধী দলনেতাই। মেদিনীপুর আসনে তিনি চাইছিলেন ভারতী ঘোষকে। কিন্তু মেদিনীপুরে ভারতীর ভাবমূর্তি ‘কাঁটা’ হতে পারে, এই আশঙ্কায় বিরোধী দলনেতার ঘনিষ্ঠ অগ্নিমিত্রাকে প্রার্থী করা হয়।

এই দাবিকে মান্যতা দিচ্ছেন দিলীপ অনুগামীরাও। তাঁদের দাবি, দিলীপ ঘোষের হাত ধরেই বাংলায় বিজেপির উত্থান। কিন্তু তাঁকেই ‘ষড়যন্ত্র’ করে সরিয়ে দেওয়া হল। দলের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ কর্মীদের একাংশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকেই। অগ্নিমিত্রা মেদিনীপুর শহরে পা রাখলেও তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে ছিলেন না দিলীপ ঘনিষ্ঠ অনেক নেতাই। আবার অগ্নিমিত্রা যখন বেলদায় পা রাখেন, তখন আরও বেশি করে প্রকট হয় দলের কোন্দল। প্রার্থীকে অভ্যর্থনা জানাতে ২০০ মিটার দূরে দুই জায়গায় পৃথক পৃথকভাবে জমায়েত করে বিজেপি। সবমিলিয়ে মেদিনীপুরে অগ্নিমিতার পাশে নেই দিলীপ অনুগামী বিজেপি নেতাকর্মীরা।

Previous articleমোদির ফোনে কি আদৌ ড্যামেজ কন্ট্রোল হবে?সন্দেশখালির রেখায় অশনি সঙ্কেত দেখছে বিজেপি
Next articleরাজ্যপালকে কালো পতাকা! রাজ্যকে এড়িয়ে সমাবর্তন আয়োজনের প্রতিবাদ