Tuesday, November 11, 2025

বসিরহাটে বিজেপি নেতার বাড়িতে বিস্ফোরণ! NSG-NIA-কে তোপ দেগে গ্রেফতারের দাবি তৃণমূলের

Date:

উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদে বিস্ফোরণ। হাসনাবাদে বিজেপি নেতা নিমাই দাসের বাড়িতে বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণে গুরুতর জখম বেশ কয়েকজন। এক ভদ্রমহিলা পাশেই জলে গিয়ে ঝাঁপ মারেন। যদিও ওই মহিলা কোথায়, এখনও জানা যায়নি। বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাসনাবাদ থানার পুলিশ। এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, আজ শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ বসিরহাটের হাসনাবাদের শিমুলিয়া কালীবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িটি বিজেপি নেতা নিতাই দাসের ভাইয়ের।
গত বিধানসভা ভোটে হিঙ্গলগঞ্জের বিজেপি প্রার্থী ছিলেন নিমাই দাস।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে জয় আসতেই বিজেপিকে নিশানা করে তৃণমূল। দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি নেতা নিমাই দাসের গ্রেফতারের দাবি তোলেন। তৃণমূলের বদনাম করতে সন্দেশখালির ঘটনার সঙ্গে নিমাই দাসদের কোনও যোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হেফাজতে নিয়ে জেরার দাবি তোলেন। তাঁর কথায়, “অবিলম্বে শুভেন্দু অধিকারী ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা নিমাই দাসকে গ্রেফতার করতে হবে। তাঁকে জেরা করে জানতে হবে এই টিমটা গোটা বসিরহাট জুড়ে এই অস্ত্র পাচারের সঙ্গে যুক্ত কিনা। সন্দেশখালির ফাঁকা বাড়িতে নিমাই দাসরা অস্ত্র রেখে তৃণমূলের বদনাম করতে চাইছে বলেও সংশয় প্রকাশ করেছেন কুণাল ঘোষ।”

অন্যদিকে, ওই বিস্ফোরণের ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও বিজেপিকে নিশানা করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এদিন এক্স হ্যান্ডল লেখেন, ‘‘বসিরহাটের অন্তর্ভুক্ত হিঙ্গলগঞ্জের হাসনাবাদ পঞ্চায়েতে বিজেপির নেতা নিমাই দাসের ভাইয়ের বাড়িতে মজুত রাখা বোমার বিস্ফোরণে আহত বাড়ির বাসিন্দারা।” তাঁর আরও দাবি, প্রবল গরমের মধ্যে মজুত রাখা বোমা ফেটেই ওই বিস্ফোরণ হয়েছে। বেশ কয়েক জন গ্রামবাসী জখম হয়েছেন।

তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “বসিরহাট লোকসভার অন্তর্ভুক্ত হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার হাসনাবাদ পঞ্চায়েতে বিজেপির নেতা নিমাই দাসের ভাইয়ের বাড়িতে মজুত রাখা বোমার বিস্ফোরণে গুরুতর আহত বাড়ির বাসিন্দারা। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ এই প্রবল গরমে মজুত করে রাখা অত বোমায় বিস্ফোরণের ফলেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। প্রসঙ্গত এই পঞ্চায়েতটি বিজেপির দখলে।”

কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কটাক্ষ করে অরূপ লেখেন, “এখানে এনআইএ বাহিনী কিংবা এনএসজির রোবোটিক ডিভাইস আসবে না বোমা উদ্ধার করতে? বিজেপির নেতা কর্মীরা বাড়ি ঘিরে রেখেছে প্রমান লোপাট করতে। অবিলম্বে প্রশাসন ঢুকে ব্যবস্থা নিক।” কুণাল বলেন, এনএসজি নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কুণাল। তিনি বলেন, কোনও দিন দেখা যাবে কালী পুজোর সময় বাজির দোকানে চকলেট বোমা খুঁজতে এনএসজি ডাকবে বিজেপি!

উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার দ্বিতীয় দফা ভোটের দিন মানুষের নজর ঘোরাতে এবং সন্দেশখালি ইস্যু জিইয়ে রাখতেই পরিকল্পিত চিত্রনাট্য রচনা করেছিল বিজেপির, এমনটাই দাবি করে ছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। শুক্রবার সকাল থেকেই সিবিআই সন্দেশখালিতে গিয়ে একটি ফাঁকা বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই বাড়িতে বিশাল অস্ত্র ভাণ্ডারের খোঁজ মেলে। দুপুর গড়াতেই সেখানে অত্যাধুনিক উপকরণ নিয় হাজির হন এনএসজির কম্যান্ডোরাও। আনা হয় রিমোট পরিচালিত বিশেষ রোবট যানও। আনা হয় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্নিফার ডগকে।

তবে গোটা ঘটনাকে সন্দেশের চোখেই দেখছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোটের মাঝে বাংলার বদনাম করতে, বাংলাকে কালিমালিপ্ত করতে সাজানো কোনও চিত্রনাট্য নয় তো? এমন সিনেমাটিক ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির পরিকল্পনা থাকতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল। সন্দেশখালির এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “সন্দেশখালি ইস্যু জিইয়ে রাখার জন্য পরিকল্পিত চক্রান্তে অতিনাটকীয় কাজকর্ম করে ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা হচ্ছে দিল্লির তরফ থেকে। আগাম সাজানো নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। খবর ছড়িয়ে, যন্ত্র নামিয়ে বাজার গরম করছে। পুলিশের আরও সতর্ক থাকা দরকার।”

কুণাল আরও বলেছিলেন, “আদৌ ঘটনা নাকি পরিকল্পিতভাবে সাজানো, সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। হতে পারে লোকসভা ভোটকে প্রভাবিত করতেই বেছে বেছে ভোটের দিনেই সন্দেশখালির প্রসঙ্গ সামনে আনা হল। যদি কিছু ভোাটরকেও প্রভাবিত করা যায়! ওখানে অস্ত্র ভাণ্ডার ছিল নাকি বদনাম করার জন্য় অন্য় কেউ রেখে গেছে, সেটা স্পষ্ট করে এখনই বলা সম্ভব নয। এর আগেও তো কেন্দ্রীয় বাহিনী সন্দেশখালিতে তল্লাশি চালিয়েছে। তখন তো কিছু পাওয়া যায়নি। সেক্ষেত্রে ঘটনা জিইযে রাখার জন্য়ও এগুলো করা হচ্ছে কি না, সেটা খতিযে দেখা দরকার। তাছাড়া কী পাওয়া গেছে, কী উদ্ধার হয়েছে এ ব্যাপারে অফিসিয়ালি তো এখনও কিছু জানায়নি কেন্দ্রীয় এজেন্সি। ফলে শুধুমাত্র সূত্রের খবরের ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া দেওয়াটা সম্ভব নয়।”

সন্দেশখালি অস্ত্রকাণ্ডে কুণালের নিশানায় বামেরাও সন্দেশখালিতে মজুত বিপুল অস্ত্র ভাণ্ডার নিয়ে সিপিএমের কড়া মন্তব্যের বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি সিপিএমের আমলে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছিল। তার মধ্যে মহাকরণ, লালবাজারের পাশেই বৌবাজারে রশিদের বাড়ি বিস্ফোরণের পুরনো ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি দাবি করেন, সিপিএমের এসব নিয়ে কথা বলা সাজে না। তাঁর দাবি, “মহাকরণ, লালবাজারের পাশেই বৌবাজারে রশিদের বাড়ি বিস্ফোরণ। আরডিএক্স। শতাধিক হতাহত। নয়ের দশকেই বাংলাকে, খোদ কলকাতাকে জঙ্গিদের ডেরা বানিয়েছিল সিপিএম। ভুলে গেলে চলবে কমরেড?”

 

Related articles

ধর্মেন্দ্রর অবস্থার অবনতি, রাতেই হাসপাতালে ছুটলেন শাহরুখ-সলমন

বর্ষীয়ান বলিউড অভিনেতা ধর্মেন্দ্রর (Dharmendra) শারীরিক অবস্থার অবনতি। রাতেই ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে গেলেন শাহরুখ-সলমানরা (Shahrukh Khan - Salman...

সলমনই হামলার মাস্টারমাইন্ড? দিল্লি বিস্ফোরণে গ্রেফতার ব্যবহৃত গাড়ির মালিক

সাদা রঙের একটি হুন্ডাই আই–২০ গাড়ি ধীরে ধীরে এসে ট্রাফিক সিগন্যালের সামনে থামতেই মুহূর্তের মধ্যে ঘটে বিস্ফোরণ। সোমবার...

দিল্লি বিস্ফোরণের জের: কলকাতার সব থানাকে সতর্ক করেছে লালবাজার, গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চলছে নাকা চেকিং

দিল্লির লালকেল্লার কাছে মেট্রো স্টেশনের এক নম্বর গেটের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে দেশের রাজধানীর পাশাপাশি হাই অ্যালার্ট (High...

দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনায় শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রীর! ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, গ্রেফতার গাড়ির মালিক

দিল্লির বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেফতার ১। বিষ্ফোরণ হওয়া গাড়ির মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রসঙ্গত, শনিবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের...
Exit mobile version