আজ ঐতিহাসিক মে দিবস। আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হিসেবে গোটা বিশ্বজুড়ে এই দিনটি পালিত হয় মেহনতী শ্রমিক সমাজকে সম্মান জানিয়ে। এই দিনেই আবেগঘন একটি বিষয় সামনে আনলেন যাদবপুরের সিপিএমের তরুণ প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। এক রিকশাওয়ালার কয়েন কৌটো! সৃজনের নির্বাচনে খরচের জন্য এক মহৎ হৃদয়ের এক “ক্ষুদ্র” প্রয়াস! যখন গোটা দেশজুড়ে বিজেপি সহ বিভিন্ন দল নির্বাচনী বন্ড থেকে ফুলেফেঁপে উঠেছে, তখন অনেকটাই ব্যতিক্রম বামেরা। তবে ভোটের খরচ মেটাতে শিক্ষক থেকে শুরু করে সাধারণ চাকুরীজীবী কিংবা মেহনতী শ্রমিক-কৃষক বাম প্রার্থীদের দিকে আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন বলেই দাবি সিপিএমের।

দীর্ঘ দিনের ‘বামঘাঁটি’ বলে পরিচিত যাদবপুরে শেষ বার বাম প্রার্থী জিতেছিলেন ২০০৪ সালে। সুজন চক্রবর্তী। সে বারের জয়ী প্রার্থী সুজনকে এ বার দমদমে লড়তে পাঠিয়েছে সিপিএম। আর সুজনের শেষ জেতা কেন্দ্র যাদবপুরে তরুণ মুখ সৃজনকে প্রার্থী করেছে সিপিএম। সেই সৃজনই যাদবপুর ‘পুনর্দখলে’ ভরসা রাখছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের উপর।

গরিব প্রান্তিক মানুষও এবার ভোটে বামপন্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে সেটা বোঝাতে শ্রমিক দিবসে একটি পোস্ট করেন যাদবপুরের সিপিএম প্রার্থী সৃজন। তিনি লিখছেন, “আজ মে দিবস। দিনকয়েক আগে টালিগঞ্জের ১১২ নং ওয়ার্ড পরিক্রমা করছিলাম। মিছিলের মাঝে বিভিন্ন এলাকায় মাতৃসমা মহিলারা ফুল মালা পরিয়ে ভরিয়ে দিচ্ছেন ভালবাসায়। থেমে থেমে এগোচ্ছি নতুন গলি মোড় পাড়ার উদ্দেশে। কমরেডরা এসে বললেন, একটি ছেলে আছে, তোমাকে কিছু দেবে।

বললাম, হ্যাঁ, কই সে। দেখি আমার কাছাকাছি বয়সের এক যুবক, একটা নারকেল তেলের কৌটো নিয়ে এগিয়ে আসছে। বুঝিনি প্রথমে। কৌটো হাতে নিয়ে দেখলাম, বেশ ভারি। দু’বার ঝাঁকিয়ে বুঝলাম, কৌটোর ভিতরে ভর্তি কয়েন।

কমরেডরা আলাপ করালেন। ছেলেটি রিকশা চালায়। আমি যবে থেকে প্রার্থী হয়েছি, ওই কৌটোতে সে রোজের আয় থেকে একটাকা দু’টাকা পাঁচটাকা করে জমিয়েছে। কৌটো ভরে গেলে আমার হাতে তুলে দিতে এসেছে, ভোটের খরচ চালানোর জন্য তার তরফ থেকে সাহায্য হিসেবে।
আমার গলার একটা মালা খুলে ওকে পরিয়েছি আপাতত। একদিন ও, আমি, আমরা – সবাই মিলে দুনিয়ার সব শোষিত মানুষের জন্য নিয়ে আসব অনেক সুন্দর একটা সকাল।”