কোতয়ালির লড়াই নেই, এবারও নেপোয় মারবে দই, নাকি মালদহে খাতা খুলবে তৃণমূল?

এখনও পর্যন্ত এই দুই কেন্দ্রে জয়ের স্বাদ পায়নি রাজ্যের বর্তমান শাসক দল। এবার তাই মালদার দুই আসনকে পাখির চোখ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক

২০১১ সালে বাংলায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে লোকসভায় যে আসনগুলি এখনও অধরা তৃণমূলের তার মধ্যে অন্যতম মালদা জেলার দুটি কেন্দ্র। এখনও পর্যন্ত এই দুই কেন্দ্রে জয়ের স্বাদ পায়নি রাজ্যের বর্তমান শাসক দল। এবার তাই মালদার দুই আসনকে পাখির চোখ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। এই দুই কেন্দ্রে লাগাতার জনসভা, রোড শো করেই চলেছেন তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতৃত্ব।
আগামী ৭ মে মালদার দুই আসনে ভোট। বিশেষ করে কোতয়ালি বাড়ির দুই সদস্যের সম্মুখসমরের কারণে গতবার মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রটি আকর্ষণীয় হয়েছিল। এখানে কংগ্রেস ও তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন এবিএ গণিখান চৌধুরীর পরিবারের দুই সদস্য। তাই বিভ্রান্ত হয়েছিল সংখ্যালঘু ভোট। সেই সুযোগে নেপোয় দই মারার মতো ফটকা কলে ভোট ভাগাভাগির সুযোগে নিয়ে জয় পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু এবার মালদা উত্তরে গণিখান পরিবারের কেউ প্রার্থী হননি। তাই খাতা খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তৃণমূলের পক্ষে।
গনিখান পরিবারের কেউ লড়াইয়ের ময়দানে না থাকলেও এবার মালদা উত্তর কেন্দ্রটি নজরকাড়া। কারণ, এখানে তৃণমূলের প্রার্থী পুলিশের আইজির চাকরি ছেড়ে আসা প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। এখনও তাঁর সাড়ে ৬ বছরের উপর চাকরির মেয়াদ ছিল। ফলে এডিজি হওয়া ছিল কার্যত নিশ্চিত। কিন্তু তিনি স্বেচ্ছাবসর নিয়ে ভোটের ময়দানে। হাওয়া কিছুটা অনুকূলে না থাকলে চাকরি থেকে অন্তত অবসর নিতেন না একজন দুদে আইপিএস!
তথ্য, পরিসংখ্যান বলছে গতবার এই কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভার মধ্যে চারটিতেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল। কিন্তু মালদহ, গাজল এবং হবিবপুরে বিজেপি প্রায় দেড় লক্ষ ভোটে লিড নেওয়ায় পদ্ম প্রার্থী খগেন মুর্মু ৮৪ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। কিন্তু এবার খগেনের লড়াই সহজ নয়। গতবার কোতয়ালির গণিখান পরিবারের কংগ্রেসের ঈশা খান চৌধুরী এবং তৃণমূলের মৌসম নুর প্রার্থী হওয়ায় চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া এবং মালতিপুরের সংখ্যালঘু ভোট আড়াআড়ি দু’ভাগ হয়েছিল। এবার কংগ্রেসের প্রার্থী মোস্তাক আলম, যিনি গণি পরিবারের সদস্য নন, তাই ভোট ভাগাভাগি সীমাবদ্ধ থাকবে হরিশ্চন্দ্রপুরেই। এই চারটি কেন্দ্রে লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের। অনেকটাই পিছনে থাকবে বিজেপি।
অন্যদিকে আদিবাসী, মতুয়া ও রাজবংশী প্রভাবিত গাজোল, হবিবপুর ও মালদহে মূল লড়াই বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের। তবে গতবারের মতো বিজেপি দেড় লক্ষ লিড পাবে না বলেই  মনে করা হচ্ছে। কারণ, মতুয়া ও আদিবাসী ভোট ফেরানোর জন্য দু’বছর ধরে লাগাতার চেষ্টা চালাচ্ছেন প্রবীণ তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়। মমতাবালা ঠাকুরকে দিয়ে বেশ কিছু মিটিং করিয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, সিএএ আসলে বিজেপির ভাঁওতাবাজি। সবমিলিয়ে এবার প্রাক্তন আইপিএস-কে সামনে রেখে মালদায় খাতা খোলার ব্যাপারে আশাবাদী তৃণমূল।

 

Previous articleমেয়েদের প্রিমিয়ার লিগের পিচ তৈরি করে ভারতীয় ক্রিকেটে ইতিহাস তৈরি করেছেন জেসিন্থা কল্যাণ
Next article“ঘৃণাই পরম সত্য” ! শেক্সপিয়রের কালজয়ী ক্লাসিক নিয়ে ‘অথৈ’ বার্তা বড়পর্দায়