টালবাহানার পরও মিলল না জামিন! পঞ্চম দফা পর্যন্ত তিহার জেলই ঠিকানা কেজরিওয়ালের

দীর্ঘ টালবাহানার পরও মিলল না অন্তর্বর্তীকালীন জামিন (Interim Bail)! আগামী ২০ মে পর্যন্ত তিহার জেলেই (Tihar Jail) থাকতে হবে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে (Aravind Kejriwal)। আগামী বৃহস্পতিবার ফের এই মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court of India)। মঙ্গলবার মামলার সওয়াল-জবাব চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানায়, অরবিন্দ কেজরিওয়াল দিল্লির নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী। আর সেকারণেই তাঁর ভোটপ্রচারের প্রয়োজনীয়তার কথা এদিন বিবেচনা করে দেখার কথা জানায় দেশের শীর্ষ আদালত। এরপর থেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন আম আদমি পার্টির নেতা কর্মীরা। কিন্তু, শেষমেশ লাভের লাভ কিছুই হল না, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শেষ পর্যন্ত পিছিয়ে গেল আপ সুপ্রিমোর জামিনের আবেদনের শুনানি। পাশাপাশি, এদিন মণীশ সিসোদিয়ার গ্রেফতারির আগে এবং পরে আবগারি মামলার তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Enforcement Directorate) কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।

তবে এদিন আবগারি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে। মঙ্গলবার কেজরিওয়ালের আবেদন মামলায় এবার ইডির সামনে বড়সড় প্রশ্ন তুলল দেশের শীর্ষ আদালত। এদিন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ সাফ জানায় আম আদমি পার্টির সুপ্রিমোর দায়ের করা মামলা আর পাঁচটা সাধারণ মামলার মতো নয়। এরপরই ইডির উদ্দেশে বেঞ্চ সাফ জানিয়ে দেয় কেজরিওয়াল একজন মুখ্যমন্ত্রী। কাউকে জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। পাশাপাশি এদিন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের উদ্দেশে শীর্ষ আদলতের বেঞ্চের প্রশ্ন, ১০০ কোটির মামলা কী ভাবে আচমকা ১১০০ কোটির হয়ে গেল? পাশাপাশি এদিন কেজরিওয়ালের জামিন প্রসঙ্গে বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ জানায়, যদি কেজরিওয়ালকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দেওয়া হয়, তবে আদালত চায় না তিনি সরকারি কোনও কাজে যুক্ত থাকুন। না হলে বিতর্কের সৃষ্টি হতে পারে। তবে নির্বাচন না হলে এই জামিনের বিষয় বিবেচনা করা হত না।

মঙ্গলবার শুনানির সময় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর জামিনের প্রসঙ্গ ওঠে। এদিন কেজরিওয়ালের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি শীর্ষ আদালতের বেঞ্চকে সাফ জানান, লোকসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়া অরবিন্দ কেজরিওয়ালের গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এরপরই বিচারপতি খান্নার বেঞ্চ জানান, তাঁরা আপ প্রধানের অন্তর্বর্তিকালীন জামিনের আবেদন শুনবে। এরপরই বেঞ্চ কারণ হিসাবে জানিয়ে দেয় কেজরিওয়াল একজন জনপ্রতিনিধি। তিনি নির্বাচনে জিতেছেন, আর সেকারণে নির্বাচনে প্রচারের প্রয়োজন রয়েছে তাঁর। তবে এদিন কেজরিওয়ালের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আদালতে জানায়, ফৌজিদারি মামলায় ধৃত সকলের অধিকার সমান। কিন্তু কেজরিওয়ালকে জামিন দিলে তা জনমানসে ভুল বার্তা যাবে। পাল্টা সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দেয়, এখন দেশে সাধারণ নির্বাচন হচ্ছে, আমরা কখনোই তা উপেক্ষা করতে পারি না। তবে এদিন কেজরিওয়ালের আইনজীবী আদালতে জানান, লেফটেন্যান্ট গর্ভনর না বললে কোনও সরকারি কাজ করবেন না তাঁর মক্কেল। কিন্তু শেষমেশ সব শুনলেও সুপ্রিম কোর্ট কেজরিওয়ালের জামিনের আবেদন খারিজ করে ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Previous articleঅন্নকূটে তিন হাজার কেজির ভোগ নিবেদন নৈহাটির বড়মাকে!
Next articleযোগী-রাজ্যে ভোটের লাইনে সংখ্যালঘুদের পিটিয়ে ‘খুন’, কোথায় কমিশন! পুরুলিয়ার সভায় হুঙ্কার মমতার