Saturday, May 3, 2025

রাজ্যের ২৫ হাজার শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সোমবারের পরে মঙ্গলবার ফের সর্বোচ্চ আদালতে সওয়াল এসএসসি ও রাজ্য সরকারের। হাইকোর্টের রায়ে যে ১৭ থেকে ১৮ হাজার শিক্ষক শিক্ষাকর্মী বাতিল হয়েছেন তাতে রাজ্যের ছয় ভাগের এক ভাগের সমান। তালিকায় অনৈতিকভাবে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের জন্য কখনই সওয়াল করবে না কমিশন, সর্বোচ্চ আদালতে জানান আইনজীবী। যোগ্য ও অযোগ্য চাকুরিজীবীদের আলাদা করা সম্ভব, দাবি করে মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে জানায় কমিশন। যদিও কমিশনের এই বিভাজনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়। কীভাবে গোপণীয় একটি সংরক্ষণের কাজে বহিরাগত সংস্থাকে নিয়োগ করে হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

মঙ্গলবার শুনানির শুরুতেই কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল প্রশ্ন তোলেন যে মামলায় রাজ্যের একাধিক দফতর জড়িত সেই মামলায় স্থগিতাদেশ দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত। এই কারণেই প্রত্যেককে সিবিআই তদন্তের অধীনে নিয়ে আসার সওয়াল করেন তিনি। রাজ্যের পক্ষে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত সওয়াল করেন এই মামলায় চাকরিপ্রাপকদের চারটি শ্রেণি রয়েছে – নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক, গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি অশিক্ষক কর্মীরা। চাকরিজীবীদের পক্ষে সওয়াল শুরু হতেই প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি।

তিনি প্রশ্ন করেন, নাইসা নামে যে সংস্থাকে ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের সম্পর্কে কমিশনের চেয়ারম্যানও কেন জানতেন না। কমিশনের কাছে প্রতিলিপিও রাখা হয়নি কেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। এরপরই টেন্ডারের ভিত্তিতে কোনও সংস্থাকে সরকারি কর্মী নিয়োগের কোনও দায়িত্ব দেওয়া আদৌ উচিত নয় বলে পর্যবেক্ষণে জানান প্রধান বিচারপতি। এক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের তথ্য সংরক্ষণের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সেখানেও বহিরাগত প্রবেশ করলে সুপ্রিম কোর্টের কর্মীরা তা অবশ্যই নজরে রাখেন বলে জানান তিনি।

সেই সঙ্গে কমিশনের এই তথ্য রাখার প্রক্রিয়াকে জালিয়াতি বলে ভর্ৎসনা করেন প্রধান বিচারপতি। তিনিন বলেন, এসএসসি-র কর্তব্য ছিল সার্ভারে তথ্য সংরক্ষণ করা। সেই কাজ বহিরাগত সংস্থাকে আউটসোর্স করে নিরাপত্তায় বিরাট ফাঁক রেখেছে এসএসসি। আবার সেই সংস্থা অন্য কোনও সংস্থাকে সেই কাজের ভার দিয়েছে, যা কমিশনের জানাই ছিল না। এভাবেই সরকারি কাজে জালিয়াতি হয়েছে। এবং এই কারণেই সাধারণ মানুষের সরকারি সংস্থার উপর থেকে ভরসা উঠে যাচ্ছে, বলে পর্যবেক্ষণে জানান তিনি।

এরপরই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন তাহলে কমিশনের কাছে কোনও তথ্য নেই। রাজ্যের আইনজীবী উত্তরে ডিজিটাল তথ্যের ভিত্তিতে মামলা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি সওয়াল করেন যাদের ওএমআর শিট কমিশনের তথ্যের সঙ্গে মিলছে না তাদের আলাদা করে বিচার করা পক্ষে। কমিশনের পক্ষে আইনজীবী হেগড়ে সওয়াল করেন ১৭-১৮ হাজার শিক্ষক শিক্ষাকর্মীর পক্ষে। সেখানেই তিনি দাবি করেন রাজ্যের স্কুলগুলির দুরবস্থার পক্ষে, যেখানে অনেক ক্ষেত্রে স্কুলের প্রধানশিক্ষকও চাকরি হারিয়েছেন। এখানেই তিনি সওয়াল করেন, মাথায় ব্যথা হলে পুরো মাথা কেটে ফেলা হয় না, বলে।

Related articles

মাধ্যমিকের মতো মাদ্রাসাতেও! কন্যাশ্রীরাই সফল ফলাফলে

একটা সময় নারী শিক্ষায় রাজ্যের অবস্থান ছিল তলানিতে। আজও দেশের, বিশেষত উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতে নারী শিক্ষার হার লজ্জাজনক।...

ফের অগ্নিকাণ্ড শহরে! এবার কেষ্টপুরের স্কুলে আগুন 

কলকাতায় একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা আতঙ্কে ফেলেছে শহরবাসীকে। বড়বাজারের মেছুয়া এলাকার আগুন লাগার কয়েকদিনের মধ্যেই আবার...

দেশ-বিদেশ মিলছে এক সুরে! ভক্তি-ভিড়ের স্রোত দিঘার জগন্নাথ ধামে

সমুদ্রের গর্জন আর ভক্তির সুরে মিশে এক নতুন তীর্থক্ষেত্র হয়ে উঠেছে দিঘার জগন্নাথ ধাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্বোধনের...

স্থানীয় মদতে পহেলগাম হামলা! মৌলানা আজহার-ইতিহাস স্মরণ করালেন ফারুক

জঙ্গিমুক্ত কাশ্মীরের যে প্রচার নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর বিজেপি চালিয়েছে গোটা দেশজুড়ে, সেই বার্তা যে আদতে নিজেদের ব্যর্থতা...
Exit mobile version