চেষ্টা বিফলে! যৌন হেনস্থায় আরও অস্বস্তি বাড়ল রাজ্যপালের, জনস্বার্থ মামলা ফেরাল হাইকোর্ট

রাজভবনের (Rajbhawan) অস্থায়ী মহিলা কর্মীর যৌন হেনস্থার ঘটনায় লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) আবহে মুখ পুড়েছে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের (CV Anand Bose)। বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কুরুচিকর মন্তব্য বন্ধের আর্জি জানিয়ে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলা শুনতেই চাইল না কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এমনই নির্দেশ দিয়েছে। যদিও হাই কোর্টের সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই বেশ বেকায়দায় রাজভবন। রাজ্যপাল চেয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে ঘৃণ্য অভিযোগ উঠলেও কেউ একটা টুঁ শব্দও তাঁর বিরুদ্ধে করতে পারবেন না। আর সেকারণেই আদালতের দ্বারস্থ হয়ে রক্ষাকবচ চেয়েছিলেন। কিন্তু উল্টে তা যে এভাবে বুমেরাং হয়ে যাবে তা হয়তো নিজেও ভাবতে পারেন নি। যদিও রাজ্যপালের কর্মকাণ্ডে ইতিমধ্যেই তরজা শুরু হয়েছে। রাজ্যপাল হওয়ার কারণে নিজের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছেন আনন্দ বোস, এমন অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।

এদিন হাইকোর্টে আবেদনকারীর বক্তব্য, সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যপালের নিজস্ব রক্ষাকবচ রয়েছে। তারপরও বিনা প্রমাণে তাঁর সম্মানহানি করা হচ্ছে। রাজ্যপালের আইনজীবী তীর্থঙ্কর দে-র সওয়াল, কোনও অভিযোগ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত রাজনৈতিক নেতাদের রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিক আদালত। পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।

তবে এদিন প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এ নিয়ে জনস্বার্থ মামলা হয় না। সেকারণেই আদালত এখন কোনওভাবেই বিষয়টি নিয়ে হস্তক্ষেপ করবে না।

গত ২ মে রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মী হেয়ার স্ট্রিট থানায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ফৌজদারি তদন্ত করতে পারে না। এরপরই পুলিশের কী করনীয় তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এদিকে রাজভবন থেকে বিবৃতি জারি করে সেখানে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেন রাজ্যপাল। যদিও লালবাজার জানায়, কোনও ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে নয়, একটি ঘটনার অভিযোগের অনুসন্ধান করছে পুলিশ। সেই স্বার্থে চেয়ে পাঠানো হয় রাজভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ। এর মাঝেই বুধবার রাজভবনের তরফে সেদিনের বিতর্কিত ভিডিও ফুটেজ জনসাধারণের সামনে নিয়ে আসা হয়। ১ ঘণ্টা ১৯ মিনিটের সেই ফুটেজ প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে জল্পনা।

তৃণমূলের অভিযোগ, কী সিসিটিভি ফুটেজের প্রকাশের দাবি ছিল, আর রাজভবন তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের তরফে কী ফুটেজ দেখানো হল! কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা রাজ্য প্রশাসনকে সেই ফুটেজ দেখাতে অস্বীকার করেন রাজ্যপাল। উল্টে সাধারণ মানুষকে ফুটেজ দেখাবেন বলে জানান। সেই মতো বৃহস্পতিবার ১০০ জনকে ডেকে বিতর্কিত দিনের ফুটেজ দেখানো হয়। কিন্তু সেই ফুটেজে না আছে রাজভবনের অন্দরের ছবি, না বিতর্কিত ঘরের ছবি। শুধু নর্থ গেটের বাইরের পুলিশের ছবি আর এক তরুণী হেঁটে যাচ্ছেন- সেই ছবি ছাড়া কিছুই নেই ফুটেজে।

Previous articleপ্রাথমিক শিক্ষকের ৩৯২৯টি শূন্যপদ নিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ বাতিল, নতুন রায় সুপ্রিম কোর্টের
Next articleআমার অনুমতি ছাড়া ফুটেজ প্রকাশ? আর কত নীচে নামবেন! বোসের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ অভিযোগকারিণীর