ভীমা করেগাঁও মামলায় বিচার বছরের পর বছর চলতেই থাকবে। এমনকি আগামী দশ বছরেও হয়তো এই মামলার নিষ্পত্তি হবে না। সুপ্রিম কোর্টে মঙ্গলবার এই পর্যবেক্ষণেই জামিন মঞ্জুর করলেন সাংবাদিক ও সমাজকর্মী গৌতম নওলাখার। মহারাষ্ট্রের কট্টর ধর্মীয় রক্ষকদের সঙ্গে উপজাতি-দলিতদের সংঘর্ষের ঘটনায় ইন্ধন দেওয়ায় অভিযুক্ত সাংবাদিক ২০২২ সাল থেকে স্বাস্থ্যের কারণে গৃহবন্দি ছিলেন। মঙ্গলবার এই মামলার দীর্ঘ সময় ধরে চলার আশঙ্কায় তাঁর জামিন মঞ্জুর করে সর্বোচ্চ আদালত।

২০১৮ সালে পুনের ভীমা করেগাঁও শহীদ স্তম্ভে শ্রদ্ধার্ঘ্যেকে ঘিরে যে উত্তেজনা ও পরবর্তী অশান্তির ঘটনা ঘটেছিল, সেই ঘটনায় উস্কানিমূলক কাজে যুক্ত হিসাবে গ্রেফতার হন মহারাষ্ট্রের পাঁচ সমাজকর্মী ভার্ভারা রাও, অরুন ফেরেরা, সুধা ভরদ্বাজ, ভার্নান গনসালভেজ ও গৌতম নওলাখাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তদন্তে গঠন করা হয় ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। তবে ধর্মীয় আবেগকে হাতিয়ার করা মোদি সরকার ২০২০ সালে এই মামলা এনআইএ-র হাতে তুলে দেয়। এর ফলে কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে দ্বন্দ্ব বাধে মহারাষ্ট্র সরকারের। এমনকি মহারাষ্ট্র পুলিশ ২০১৮ সালের ঘটনায় দলিত সংগঠনের যোগ অস্বীকার করে। পাঁচ সমাজকর্মীকে গৃহবন্দি হওয়ার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। ২০২২ সালে জামিন দেওয়া হয় ভার্ভারা রাও-কে।

মঙ্গলবার গৌতম নওলাখার জামিন মামলার শুনানিতে বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ ও বিচারপতি এসভিএম ভাট্টির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত চার বছরের বেশি কারাবন্দি। তাই জামিনের আবেদন রদের প্রয়োজন নেই। “এই বিচার বছরের পর বছরের পর বছর নেবে শেষ হতে”। এমনকি অভিযুক্তর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন না হওয়ার জামিন মঞ্জুর করা হয়। তবে গৃহবন্দি থাকার খরচ হিসাবে ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। পর্যবেক্ষণের সময় বিচারপতি মৌখিকভাবে এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করেন যে আগামী দশ বছরেও হয়তো এই মামলার নিষ্পত্তি হবে না।
