টানা তিন দিনের টানাপোড়েনের পরে অবশেষে গজলডোবায় তিস্তা ব্যারাজ থেকে ক্যানালে জল ছাড়ল সেচ দপ্তর। শনিবার দুপুরের পরে জল ছাড়া শুরু হয়। প্রায় বাইশ কিলোমিটার লম্বা ক্যানাল থেকে ওই জল মহানন্দা ব্যারাজে পৌঁছনোর পরে শিলিগুড়ির পুরসভার জল প্রকল্পে পৌঁছতে আট থেকে দশ ঘণ্টা সময় লাগল।তার পরে সেই জল পুরসভার পুকুরে জমা করার পরে শোধন করে শহরে বিলি করা শুরু হয় রবিবার বিকেল থেকে। সোমবার সকাল থেকে পুরনিগমের তৎপরতায় স্বাভাবকি হয়েছে শিলিগুড়ির জল পরিষেবা। মেয়র গৌতম দেবের উদ্যোগে দ্রুত পরিষেবা পাওয়ায় খুশি শিলিগুড়ির বাসিন্দারাও।

শিলিগুড়ির এই পানীয় জল প্রকল্পটি তৈরিই হয়েছে তিস্তা ক্যানাল এবং মহানন্দা ব্যারাজের সংযোগে। সেচ দফতর গজলডোবায় ক্যানালে জল পাঠানো বন্ধ রেখে বাঁধ মেরামতিতে নামায় শিলিগুড়িতে জলের সঙ্কট সৃষ্টি হয়। পুরসভার জল প্রকল্পের পুকুরে সঞ্চিত জল শেষ হয়ে গেলে পিএইচই-র পক্ষ থেকে মহানন্দা থেকে জল তোলা শুরু হয়। প্রথম দিকে জলের গুণমান ঠিক থাকলেও পরে জলের মান নেমে যায়।পুর এলাকার বাসিন্দা জানিয়েছেন, জল দূষিত হওয়ার পর মেয়র নিজে বাসিন্দাদের সতর্ক করেছিলেন। পানীয় জলের যোগান দিতে প্রচুর জলের পাউচ দেওয়া হয়েছে। জলের গাড়িও পাঠানো হয়েছে । মেয়র দাঁড়িয়ে থেকে জল বন্টনের তদারকি করেছেন। রাত জেগে কাজ করেছেন কাউন্সিলররা। মেয়ররের ঘোষণা মত সোমবার সকাল থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক হয়েছে।
পরিষেবা সম্পূর্ণভাবে স্বাভাবিক হওয়ার পর সাংবাদিক বৈঠকে মেয়র গৌতম দেব জানান, একেবারে আগের মতোই জল পাবেন বাসিন্দারা। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পক্ষ থেকে শিলিগুড়ি পুরনিগমের কমিশনারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিল পরিষেবার স্বাভাবিক হওয়ার কথা। সেই চিঠিও পড়ে শোনান তিনি। উল্লেখ্য, সিকিমের বন্যার ফলে ভেঙে যায় তিস্তার বাঁধ। নির্মাণের কাজ চলছিল। সেই সময়ই পুরএলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছিল মহানন্দার জল। হঠাৎ করে ওই জলে বিওডি(বায়োকেমিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড) মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই জল পানীয় হিসাবে ব্যবহারে নিষেধ করা হয় পুরনিগমের তরফে। এই বিষয়টি বিরোধীরা নোংরা রাজনীতির খেলায় নামে। মেয়রের কাজে বাধা দেওয়া হয়। তবে বাম-বিজেপির সমস্ত বাধা নস্যাৎ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই জল পরিষেবা স্বাভাবিক করে পুরনিগম।
