৪০০ পারের ফানুস চুপসে সরকার গড়তেই হিমশিম NDA! মোদিকে হিমালয় যাওয়ার ‘পরামর্শ’ জয়রামের

লোকসভা ভোটের (Loksabha Election) আগে অনেক লম্ফঝম্প করেছিলেন। আচমকা অযোধ্যায় রাম মন্দির তৈরি থেকে শুরু করে ভোটের শেষ দফা মেটার আগে কন্যাকুমারীতে গিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশে ধ্যানমগ্ন হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। কিন্তু মঙ্গলবার ভোটের ফলাফল বেরতেই দেখা গেল অন্য ছবি। মোদি তথা বিজেপি নেতাদের গাল ভরা মিথ্যাকে একেবারেই প্রশ্রয় দিল না দেশবাসী। এদিন ফলাফলের ট্রেন্ড ঘোষণা হতেই স্পষ্ট হয়ে যায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া তো দূরস্ত, আড়াইশোর গণ্ডি টপকাতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা গেরুয়া শিবিরের। যদিও ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রথম থেকেই মোদি দাবি করেছিলেন এককভাবে ৩৭০ আসনে জিতবে বিজেপি। কিন্তু সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে মোদির যাত্রাভঙ্গ করলেন বিরোধী জোটের প্রতিনিধিরা।

তবে ভোটগণনার যে প্রবণতা সকাল থেকে দেখা যাচ্ছে, তাতে পরিষ্কার ২০১৪ এবং ২০১৯-এর মতো এবার আর সংসদের নিম্নকক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না বিজেপি। আব কি বার ৪০০ পারের যে দুঃস্বপ্ন মোদি দেখিয়েছিলেন তার কাছে পৌঁছনো তো দূর মাঝ পথেই থেমে গেল জয়ের রথ। ৫৪৫ আসন বিশিষ্ট লোকসভায় ম্যাজিক ফিগার ২৭৩। কিন্তু দিনের শেষে ট্রেন্ড যেদিকে এগোচ্ছে তাতে বলা চলে আড়াইশোর আগেই এবার থেমে যেতে পারে বিজেপির সব দৌড়! চলতি লোকসভা নির্বাচনের শুরু থেকেই মানুষকে রাম নামে ভর করে ভোট টানার চেষ্টা করেছিলেন মোদি, কিন্তু সেই অযোধ্যাতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। তবে শুধু অযোধ্যা বললে ভুল হবে, ভোটের প্রচারে বাংলা-সহ বিরোধী রাজ্যগুলিতে লাগাতার প্রচার করে একের পর এক মিথ্যাচার মোদি সরকারের। পাশাপাশি বাংলার খেটে খাওয়া মানুষদের টাকা আটকে লাগাতার পেটে লাথি মারার অভিযোগও উঠেছে দিল্লির শাসক দলের বিরুদ্ধে। এছাড়া বিজেপির এমন ফলের পিছনে মণিপুর যে অত্যন্ত বড় ফ্যাক্টর তা হয়তো ঠারে ঠারে বুঝতে পারছে গেরুয়া ধ্বজাধারীরা। তবে ইতিমধ্যে মোদির প্রতিশ্রুতির মিথ্যা ফানুস ফুটো হয়ে যেতেই সরকার গড়ার লক্ষ্যে ময়দানে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। সূত্রের খবর, ফল ঘোষণা হতেই এদিন বিকেলে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার বাসভবনে নয়া প্ল্যান কষতে বৈঠকে বসেছে বিজেপির হাইকম্যান্ড। তবে এদিন মোদির ভাঁওতাবাজির তীব্র কটাক্ষ করে কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের কটাক্ষ ঝোলা উঠিয়ে এবার হিমালয়ে পাড়ি দিন। একইসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর মোরাদাবাদে বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমার সঙ্গে ওরা কী এমন করতে পারে? বলুন না আপনারা। আমি একজন গরিব মানুষ। ঝোলা উঠিয়ে বেরিয়ে পড়ব। জয়রাম রমেশের প্রশ্ন, এবার সেই সময় এসে গিয়েছে। আপনার ঝোলা ওঠান আর হিমালয়ের দিকে যাত্রা করুন।

তবে চলতি ভোটে কেন্দ্রে সরকার গড়ার জন্য এনডিএ-র দুই শরিক, চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি এবং নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর উপর নির্ভর করতে হবে মোদিকে। ইতিমধ্যে দুটি দলের সঙ্গেই জোর কথাবার্তা শুরু করে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। এদের মধ্যে কেউ একজন বেঁকে বসলে তা মোদির জন্য ভালো বার্তা হবে না তা ভালমতো জানেন গেরুয়া শিবির। সেকারণেই ভোটের ফলাফল বেরতেই এবার নয়া আশঙ্কা শুরু হয়েছে। কিন্তু এদিন নীতীশ ও চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ শুরু করেছে কংগ্রেসও। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, যদিও বারবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ INDIA-র শীর্ষ নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন চলতি ভোটে আর যাই হোক দেশবাসী মোদিকে সরকারে দেখতে চায় না। আর এদিন ফলাফল প্রকাশ হতেই দেখা গেল এনডিএ নয়, প্রত্যাশ্যার থেকে অনেক ভালো ফল করে মোদি সরকারের বিড়ম্বনা বাড়াল INDIA।

Previous articleতরুণ ব্রিগেডেও ডাহা ফেল! বাংলায় হাল ফিরল না লালের
Next articleবুমেরাং সন্দেশখালি! বসিরহাটে খড়কুটোর মতো উড়ে গেল বিজেপি