Tuesday, May 20, 2025

“জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে”! ফের দিলীপের নিশানায় শুভেন্দু-সুকান্ত

Date:

Share post:

হারের জ্বালা কিছুতেই মিটছে না দিলীপ ঘোষের। ভোটের আগে যেমন নিয়ম করে বিরোধীদের আক্রমণ করতেন, ভোটে হারের পর ঠিক একইভাবে দলীয় নেতৃত্বকে দুষছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের নিশানায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

দলের রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলছেন,লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এখন জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে। মেদিনীপুরে লড়তে দেওয়া হয়নি, রেজাল্ট দেখা গিয়েছে। এত সাংসদ বিধায়ক ছিল, তাহলে ভোট কমল কেন? দেবশ্রী চৌধুরীর আসন বদল নিয়েও নিশানা দিলীপের। দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতাদের হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল?

নাম না করে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন, “পার্টির প্রোগ্রামে আমি ৪ বছর ধরে যাই না। আমাকে কেউ ডাকেও না। আমার মতামতও নেয় না। আমি পার্টির কর্মীদের সঙ্গে থাকি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকি। আমি যতদিন রাজনীতি করব আমি এরকমই থাকব। রাজনীতি ছেড়ে দিলে অন্যভাবে মানুষের পাশে থাকব। মানুষের কাছে যেতে কেউ কাউকে আটকাতে পারে না।”

নিজের কেন্দ্র মেদিনীপুরে টিকিট দেওয়া হয়নি দিলীপ ঘোষকে। সেই মেদিনীপুরে বিজেপি হেরে গিয়েছে। আবার বর্ধমান দুর্গাপুরের যে আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে সেখানেও হার হয়েছে বিজেপির। গতবার এই দুই আসন বিজেপির দখলে ছিল। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘পর্যালোচনা হওয়া উচিৎ। কর্মীরা বলবেন কি সমস্যা হয়েছে এখানে। আমি আমার লোকসভায় সময় দিয়েছি। তারপর কিছুদিন অন্য একটি রাজ্যে সময় দিয়েছি। গত ১ বছর ধরে সম্পূর্ণ সময় মেদিনীপুরে দিয়েছিলাম। টাকা- পয়সা, সময় সব দিয়েছি। আমাকে লড়তে দেওয়া হয়নি। তার রেজাল্ট সবাই দেখে নিয়েছে।’

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ‘১০০ বিধানসভায় লিড, ধাক্কা মারলেই ১৩০, হাওয়া ঘুরিয়ে দেব।’ সুকান্তর দাবিকে কার্যত খারিজ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে আমরা এগোই। বিধানসভায় পিছিয়ে থাকি। ১৯ এর লোকসভায় আমরা ৪১ শতাংশ পেয়েছিলাম। ২১ এর বিধানসভায় সেটা নেমে ৩৮ শতাংশ হয়। এবার লোকসভাতে ৪১ শতাংশ তো পার হওয়া উচিত ছিল। সেটা কমে গেল তো। আবার ৩৮ এ ফিরে এলো। এটাই তো পর্যালোচনার বিষয়। ভোট কমল কেন? এতো নেতা এসে গেছে। বলছে সংগঠন বেড়েছে। এবার তো প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় গেছেন। এতো সাংসদ বিধায়ক ছিল। তাহলে ভোট কমল কেন? ভাবার দরকার আছে।’

এখানেই থেমে থাকেননি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি নাকি মেদিনীপুরে দাঁড়ালে হেরে যাব। কারণ ওখানে নাকি কুরমিরা আমাদের বিরুদ্ধে। যেখানে কুরমি ভোট বেশি সেই পুরুলিয়া আসনে বিজেপি জিতেছে। আমার বিরুদ্ধে কুরমিদের খ্যপানো হয়েছিল। আমাকে সরানোর জন্য এটা করা হয়েছিল। দেবশ্রী যেখানে কাজ করেছে বা মন্ত্রী ছিল সেখানে আমরা এবারও জিতেছি। একজন কাউন্সিলর ওখানে লোকসভা জিতেছে। তাকে কেউ চিনতই না। একটা গ্রামীণ পুরসভার নেতা। তাহলে দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। কিছু তো একটা ব্যাপার আছে। নাহলে যারা পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতা তাদের কি হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল? লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এতো দেখছি জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

 

spot_img

Related articles

IPL-এর জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে সম্মেলনের প্রচার SFI-এর! কী বলছেন সৃজন

CPIM-এর মতো বাম ছাত্র সংগঠনগুলির সমর্থনও কি তলানিতে? না হলে কেন সর্বভারতীয় সম্মেলনে লোক টানতে আইপিএলকে কাজে লাগিয়েছে...

মামলা যাঁদের, আন্দোলনে উস্কানিও তাঁদের: বাম দ্বিচারিতার পর্দাফাঁস কুণালের

চাকরিহারা শিক্ষকদের নিয়ে দুমুখো রাজনীতি বামপন্থী নেতাদের। একদিকে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন মঞ্চে গিয়ে সহানুভূতি দেখানো, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata...

১৩১ পরিবার পেল মাথার ছাদ! বন্যাদুর্গত মানুষদের জন্য ‘তিস্তাপল্লি’ উপহার মুখ্যমন্ত্রীর

তিস্তা নদীর ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছিল মেজুয়া ও লালডং চুমুকডালি গ্রামের ১৩১ জন মানুষ। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। এবার...

আরও সহজ হল যাত্রা! উত্তরবঙ্গ থেকে দিঘা, আরও ছয়টি সরকারি ভলভো বাস উদ্বোধন মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তরবঙ্গবাসীর জন্য দিঘার জগন্নাথ ধামে যাত্রা এবার আরও সহজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার শিলিগুড়ির ভিডিও কন গ্রাউন্ড থেকে...