Sunday, November 9, 2025

“জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে”! ফের দিলীপের নিশানায় শুভেন্দু-সুকান্ত

Date:

Share post:

হারের জ্বালা কিছুতেই মিটছে না দিলীপ ঘোষের। ভোটের আগে যেমন নিয়ম করে বিরোধীদের আক্রমণ করতেন, ভোটে হারের পর ঠিক একইভাবে দলীয় নেতৃত্বকে দুষছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। দিলীপ ঘোষের নিশানায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।

দলের রাজ্য নেতৃত্বকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলছেন,লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এখন জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে। মেদিনীপুরে লড়তে দেওয়া হয়নি, রেজাল্ট দেখা গিয়েছে। এত সাংসদ বিধায়ক ছিল, তাহলে ভোট কমল কেন? দেবশ্রী চৌধুরীর আসন বদল নিয়েও নিশানা দিলীপের। দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতাদের হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল?

নাম না করে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে তোপ দেগে দিলীপ ঘোষ বলেন, “পার্টির প্রোগ্রামে আমি ৪ বছর ধরে যাই না। আমাকে কেউ ডাকেও না। আমার মতামতও নেয় না। আমি পার্টির কর্মীদের সঙ্গে থাকি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে থাকি। আমি যতদিন রাজনীতি করব আমি এরকমই থাকব। রাজনীতি ছেড়ে দিলে অন্যভাবে মানুষের পাশে থাকব। মানুষের কাছে যেতে কেউ কাউকে আটকাতে পারে না।”

নিজের কেন্দ্র মেদিনীপুরে টিকিট দেওয়া হয়নি দিলীপ ঘোষকে। সেই মেদিনীপুরে বিজেপি হেরে গিয়েছে। আবার বর্ধমান দুর্গাপুরের যে আসন থেকে তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে সেখানেও হার হয়েছে বিজেপির। গতবার এই দুই আসন বিজেপির দখলে ছিল। এ প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘পর্যালোচনা হওয়া উচিৎ। কর্মীরা বলবেন কি সমস্যা হয়েছে এখানে। আমি আমার লোকসভায় সময় দিয়েছি। তারপর কিছুদিন অন্য একটি রাজ্যে সময় দিয়েছি। গত ১ বছর ধরে সম্পূর্ণ সময় মেদিনীপুরে দিয়েছিলাম। টাকা- পয়সা, সময় সব দিয়েছি। আমাকে লড়তে দেওয়া হয়নি। তার রেজাল্ট সবাই দেখে নিয়েছে।’

রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, ‘১০০ বিধানসভায় লিড, ধাক্কা মারলেই ১৩০, হাওয়া ঘুরিয়ে দেব।’ সুকান্তর দাবিকে কার্যত খারিজ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে আমরা এগোই। বিধানসভায় পিছিয়ে থাকি। ১৯ এর লোকসভায় আমরা ৪১ শতাংশ পেয়েছিলাম। ২১ এর বিধানসভায় সেটা নেমে ৩৮ শতাংশ হয়। এবার লোকসভাতে ৪১ শতাংশ তো পার হওয়া উচিত ছিল। সেটা কমে গেল তো। আবার ৩৮ এ ফিরে এলো। এটাই তো পর্যালোচনার বিষয়। ভোট কমল কেন? এতো নেতা এসে গেছে। বলছে সংগঠন বেড়েছে। এবার তো প্রধানমন্ত্রী সব জায়গায় গেছেন। এতো সাংসদ বিধায়ক ছিল। তাহলে ভোট কমল কেন? ভাবার দরকার আছে।’

এখানেই থেমে থাকেননি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি নাকি মেদিনীপুরে দাঁড়ালে হেরে যাব। কারণ ওখানে নাকি কুরমিরা আমাদের বিরুদ্ধে। যেখানে কুরমি ভোট বেশি সেই পুরুলিয়া আসনে বিজেপি জিতেছে। আমার বিরুদ্ধে কুরমিদের খ্যপানো হয়েছিল। আমাকে সরানোর জন্য এটা করা হয়েছিল। দেবশ্রী যেখানে কাজ করেছে বা মন্ত্রী ছিল সেখানে আমরা এবারও জিতেছি। একজন কাউন্সিলর ওখানে লোকসভা জিতেছে। তাকে কেউ চিনতই না। একটা গ্রামীণ পুরসভার নেতা। তাহলে দেবশ্রী ওখানে জিতত না? এর পিছনে কি আছে? এসব কেন করা হয়েছে এগুলো ভাবতে হবে। কিছু তো একটা ব্যাপার আছে। নাহলে যারা পার্টির প্রতিষ্ঠিত নেতা তাদের কি হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল? লোকে হারা আসন জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এতো দেখছি জেতা আসন হারাবার জন্য প্ল্যানিং হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

 

spot_img

Related articles

বেঁচে থাকলে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত! পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ দেবাংশুর

ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের...

টাকা পেয়েও কাজে দেরি! ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে কড়া প্রশাসন, রিপোর্ট চাইল নবান্ন

প্রথম দফায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়ার পরও বহু উপভোক্তা এখনও ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের কাজ শুরু করেননি।...

ঝুলনের চোখে বাংলার সেরা ক্রিকেটার রিচা, মহিলা ক্রিকেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌরভ

বাংলার বিশ্বকাপ জয়ী একমাত্র ক্রিকেট তারকা রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে শনিবার ইডেন গার্ডেন্সে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন...

সৌরভ ছাড়া অন্য কারও ICC সভাপতি থাকার কথা নয়: বললেন ‘ঠোঁটকাটা’ মমতা

ছিল বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। শনিবার ইডেনে সেই অনুষ্ঠানে বোমা ফাটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের...