Monday, August 25, 2025

বিজেপিকে ডুবিয়ে এবার ব্যর্থতার দায় এড়াচ্ছে “সেয়ানা” শুভেন্দু!

Date:

তৃণমূল নেতারা শুরু থেকেই বলে আসছেন, শুভেন্দু অধিকারী যেখানে যেখানে বিজেপির প্রচার করবে বা প্রার্থী নির্বাচন করবে অথবা সাংগঠনিক দায়িত্ব নেবে, সেই জায়গায় তৃণমূল সুবিধা পাবে। আসলে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের জন্য পয়া! এবং তথ্য, পরিসংখ্যান বলছে, একুশের বিধানসভা নির্বাচন থেকে সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোট হোক, উপনির্বাচন হোক, পঞ্চায়েত কিংবা পুরভোট, শুভেন্দু যেখানে গিয়েছে, সেখানেই ডুবেছে বিজেপি! সেই শুভেন্দু এবার ব্যর্থতার দায় এড়াচ্ছে। খারাপ ফলাফলের দায় অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। এবার বিজেপির এই দলবদলু নেতার গলায় অন্য সুর। তিনি বলছেন, “সাংগঠনিক ব্যাপারে কোনও হস্তক্ষেপ করি না। প্রার্থী নির্বাচন থেকে প্রচার কৌশল সবটাই সংগঠন ঠিক করে”! অথচ, লোকসভা ভোটের প্রচার পর্বে বঙ্গ বিজেপিকে “হাইজ্যাক” করে নিয়েছিল এই শুভেন্দু।

২০১৯ সালে কার্যত সকলকে চমকে দিয়ে বাংলা থেকে ১৮টি লোকসভা আসনে জিতেছিল বিজেপি। এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে ‘২০০ পার’ স্লোগান দিয়ে ময়দানে নেমেছিল গেরুয়া শিবির। তৃণমূল ভাঙিয়ে তাবড় নেতাদের নিজেদের দিকে টেনেছিল পদ্ম শিবির। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকেই বিজেপি তুরুপের তাস মনে করেছিল। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটে ৩ আসন পাওয়া বিজেপি ২০২১ সালে ৭৭-এ উঠে আসে। তবে ক্ষমতা দখলের থেকে বহু দূরেই থাকে তারা। তবে ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি ফের বাংলায় ‘ম্যাজিক’ দেখাবে বলে আশা করেছিলেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহরা নিজে এসে দাবি করে গিয়েছিলেন যে বাংলা থেকে এবার বিজেপির ফল সবচেয়ে ভালো হবে। এমনকী বঙ্গ বিজেপির নেতারা পর্যন্ত দাবি করেছিলেন, তৃণমূলের থেকে একটি হলেও বেশি আসন এবার বিজেপি পাবে বাংলা থেকে। তবে ২০১৯ সালের ১৮ আসন থেকে বিজেপি ২৪-এ গিয়ে ঠেকেছে ১২-তে। এই ফলের দায় কার? এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এবার অন্য সুর “সেয়ানা” শুভেন্দু অধিকারীর গলায়।

ব্যর্থতার দায় অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দলবদলু নেতা এখন বলছেন, সংগঠনের কাজে তিনি তেমন আগ্রহী নন। এমনকী সংগঠনের হস্তক্ষেপ করেন না। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ লোকসভা ভোটের ফলাফলের পর থেকেই রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে শুরু হয়েছে কোন্দল। বারবার বিভিন্ন তাবড় তাবড় বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন। চলেছে দড়ি টানাটানি। দায় ঠেলাঠেলি। একাধিকবার দলের সিদ্ধান্তকে ‘দায়ী’ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, খোদ বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছিল, সব সিদ্ধান্ত তিনি নেন না, কিন্তু রাজ্য সভাপতি হওয়ার দরুন দায় তাঁকেই নিতেই হবে। রাজনৈতিক কারবারিদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন আকার ইঙ্গিতে এই সকল রাজ্য নেতারা কি বিজেপির ফলাফল খারাপের পিছনে আঙুল তুলছেন শুভেন্দু অধিকারীর দিকে? তাই কি বিরোধী দলনেতার অভিমান করে কৌশলী বার্তা দিয়ে বোঝলেন তিনি সংগঠনের কাজে আগেও হস্তক্ষেপ করেননি?

শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “আমাকে যেখানে প্রচার করতে যেতে বলা হয় সেখানে যাই। সংগঠিত করার কাজ আমার নয়। কেবলমাত্র আমার জেলাতে পার্টির সংগঠনের নেতারা রাজ্যের নির্দেশিকাও যেমন পালন করেন, আমার পরামর্শও মেনে চলেন। এর বাইরে সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি কোনও দিন হস্তক্ষেপ করি না।” একদিকে, যখন সুকান্ত মজুমদারকে বলতে শোনা গিয়েছে, “সিদ্ধান্ত হয়ত অন্য কেউ নেবে। তবে দায় আমাকেই নিতে হবে।” সেখানে আবার বিরোধী দলনেতাও বলছেন, সংগঠিত করা তাঁর কাজ নয়। তাহলে খারাপ রেজাল্টের দায় কার? উত্তর না মিললেও এর দায় ঠেলাঠেলি যে অব্যাহত রয়েছে সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও পড়ুন- রাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ সাংসদ সায়নীর নজরে যুবদের স্কিল ডেভলপমেন্ট

Related articles

গাজায় সাংবাদিকসহ ১৯ জনের মৃত্যু! নীরব নেতানিয়াহু

দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় ফের রক্তক্ষয়ী হামলা চালাল ইজরায়েলি সেনা। সোমবার দুপুরে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও...

শ্রমশ্রী প্রকল্পে ভুয়ো আবেদন রুখতে কড়া নজরদারি রাজ্যের 

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত শ্রমশ্রী প্রকল্পে প্রকৃত ও যোগ্য প্রার্থীরাই সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ...

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...
Exit mobile version