বরোদায় পুরসভার জমি দখলের অভিযোগের বিরুদ্ধে গুজরাট হাই কোর্টের দ্বারস্থ তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ

বরোদায় পুরসভার জমি দখলের অভিযোগের বিরুদ্ধে গুজরাট (Gujrat) হাই কোর্টের (High Court) দ্বারস্থ হলেন তৃণমূল সাংসদ তথা প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান (Yusuf Pathan)। বহরমপুরে তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হওয়ার পরেই প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠানের বিরুদ্ধে নোটিশ (Notice) পাঠিয়েছিল বরোদা পুরসভা। সেই নোটিশের বিরুদ্ধেই হাই কোর্টে (High Court) গিয়েছেন পাঠান। বরোদা পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান শীতল মিস্ত্রি বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন বলে এড়িয়ে গিয়েছেন।এজেন্সি ও বিচার ব্যবস্থাকে বিরোধীদের হেনস্থা করার অভিযোগ বারবার ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। ফের তারই প্রমাণ মিলল গুজরাটে। তৃণমূলের টিকিটে জিতে সাংসদ হওয়ার পরেই ইউসুফকে (Yusuf Pathan) জমি দখল করে নেওয়ার অভিযোগে নোটিশ পাঠায় বরোদা পুরসভা। দ্রুত জায়গা দখল মুক্ত করতে বলা হয় তাঁকে। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে বহরমপুর কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে জিতেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ। তাঁকে বলা হচ্ছে জায়েন্ট কিলার। তার কারণ তিনি পাঁচ বারের সাংসদ তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে বড় ব্যবধান হারিয়েছেন। ৪ জুন ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ৬ জুন বরোদা পুরসভার তরফে পাঠানকে একটি নোটিশ পাঠানো হয়। বরোদার বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় পাওয়ারের অভিযোগ, ২০১২ সালে একটি জমি কিনে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ইউসুফ, সেটি পুরসভার মালিকানাধীন। পুরসভার অনুমতিও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তৎকালীন গুজরাট সরকার সেই অনুমতি খারিজ করে দেয়। পরে সেই জমি প্রাক্তন ক্রিকেটার দখল করে নেন বলে অভিযোগ।

গত ১৩ জুন জমি দখল সংক্রান্ত অভিযোগ তোলেন বরোদার প্রাক্তন বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় পাওয়ার। তাঁর অভিযোগ, বরোদার তান্দলাজা এলাকায় নিজের বাংলোর পাশে পুরসভার জমি দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। বিজেপি কাউন্সিলর জানান, ২০১২ সালে ইউসুফের নির্মীয়মাণ বাড়ি সংলগ্ন জমিটি চড়া দামে কিনে নিতে চেয়েছিলেন তিনি। পুরসভার বোর্ডের বৈঠকে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। কিন্তু সরকার শেষ পর্যন্ত জমি বিক্রির অনুমতি দেয়নি। অভিযোগ, সেই জমির চারপাশে পাঁচিল তুলে তা দখল করে রেখেছেন ইউসুফ। সেই জমি ফেরানোর আর্জি জানিয়েই বরোদা পুরসভার বর্তমান স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান এবং পুরকমিশনারকে চিঠি দেন বিজয়। পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি তারা জানতে পেরেছে, জমিতে দেওয়াল তুলছেন ইউসুফ। সেই কারণেই দেওয়াল সরাতে বলে নোটিশ পাঠানো হয়েছে। দু সপ্তাহ অপেক্ষা করে পরবর্তী পদক্ষেপের কথা ভাববে বলে জানিয়েছিল বরোদা পুরসভা।

এবার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের অন্যতম চমক ছিলেন ইউসুফ পাঠান। অধীরের ‘গড়’ বলে পরিচিত বহরমপুরে তিনি ছিলেন বাংলার শাসকদলের তুরুপের তাস। ৫২ হাজারের বেশি ভোটে অধীরকে হারিয়েছেন তিনি। আর তারপরেই এই নোটিশকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবেই দেখছে রাজনৈতিক মহল। তাদের মতে, ২০১২-র ঘটনায় এতদিনে কেন নোটিশ দেওয়ার কথা মনে পড়ছে? আর যখন ইউসুর তৃণমূলের টিকিটে জিতলেন তখনই খেয়াল হল তিনি বেআইনিভাবে জমি দখল করে আছেন! আগে কী করছিল তারা! এটা শুধু মাত্র বিরোধীদের উপর চাপ সৃষ্টি করা কৌশল বলে দেখছে রাজনৈতিক মহল। এবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ইউসুফ। এখন উচ্চ আদালত কী নির্দেশ দেয় সেটাই দেখার।





Previous articleবহুতলের ছাদের কার্নিশ ধরে ঝুলে রিল বানালো কিশোরী, শাস্তির দাবিতে তোলপাড় সমাজমাধ্যম
Next article‘কৃষিজীবী’ প্রসন্নর কোটি কোটির সম্পত্তি! বিস্মিত ইডি