ট্রেনের বার্থ ভেঙে মৃত যাত্রী! সহযাত্রীর উপর দায় চাপাল রেল

স্লিপার কোচের বার্থ ছিঁড়ে নিচের যাত্রীর শরীরে পড়ে মৃত্যু হয় কেরালার এক বাসিন্দার। বার্থ ছিঁড়ে পড়ার ঘটনা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে গোটা ঘটনার দায় সহযাত্রীর উপর চাপালো রেল কর্তৃপক্ষ। রেলের অব্যবস্থা ও নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে সাম্প্রতিককালে যতবার প্রশ্ন উঠেছে, ততবার রেল কারো ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দায় এড়াতে চেষ্টা করেছে। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

কেরালার বাসিন্দা আলি খান ১৬ জুন এরনাকুলাম-হজরৎ নিজামুদ্দিন মিলেনিয়াম সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের স্লিপার ক্লাসে আগ্রা যাচ্ছিলেন। লোয়ার বার্থে ছিলেন ৬২ বছরের ওই বৃদ্ধ। উপরের বার্থ ভেঙে তাঁর উপরে পড়লে তিনি গুরুতর চোট পান। তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গালের কাছে এই দুর্ঘটনার পরে তেলেঙ্গানাতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখানেই ২৪ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। এরপরই রেলের এই অব্যবস্থার খবর ছড়িয়ে পড়তেই মিথ্যার ফানুস ওড়াতে শুরু করে রেল দফতর।

দুর্ঘটনার পরে রেল দাবি করে, এরনাকুলাম থেকে নিজামুদ্দিনগামী ট্রেনের এস-সিক্স কামরার ৫৭ নম্বর সিটের যাত্রীর উপর আপার বার্থ খুলে পড়ে আহত হন লোয়ার বার্থের যাত্রী। আপার বার্থটি সেই আসনের যাত্রী সঠিকভাবে চেন দিয়ে রাখতে পারেননি বলে বার্থটি খুলে যায়। তাতেই আহত হন লোয়ার বার্থ ৫৭ নম্বরের যাত্রী। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। রেলের তদন্তকারী দল পরে সিটগুলি পরীক্ষা করে দেখেন তাতে কোনও সমস্যা ছিল না।

অর্থাৎ সহযাত্রী বার্থ চেন দিয়ে বেঁধে না রাখায় মৃত্যু হয় বছর ৬২-র ওই যাত্রীর। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে, রেলের তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে আপার বার্থ খুলে পড়ে যায়। সেক্ষেত্রে আপার বার্থ আলাদাভাবে চেন দিয়ে বাঁধতে হয় না। সেটি প্রথম থেকে লোহার রড দিয়েই আটকানো থাকে। তবে কী সেই রড খুলে পড়ে গিয়েছিল, যা গাফিলতির দায় রেলেরই। অন্যদিকে, মিডল বার্থ যাত্রীদের শিকল দিয়ে লাগাতে হয়। অথচ রেলের তদন্ত বলছে, মিডল বার্থের যাত্রীর আপগ্রেডেশ হওয়ায় তিনি এসি কোচে চলে যান। অর্থাৎ মিডল বার্থে কেউ ছিলই না। এভাবেই আরও একটি প্রাণের দায় নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে নিরপরাধ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করতে চলেছে রেল আরও একবার।

Previous articleআগামিকাল কোপার ম্যাচে নামছে ব্রাজিল, প্রতিপক্ষ প্যারাগুয়ে
Next articleফের কলকাতা বিমানবন্দরে বোমাতঙ্ক! লাগেজ চেকিংয়ের সময় আটক যাত্রী