পিছল মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপালের মামলার শুনানি, নজর ঘোরাতেই মামলা! অভিযোগ আইনজীবীর

পদ্ধতিগত ত্রুটি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (CV Anand Bose) মামহানির মামলা শুনানি পিছিয়ে গেল কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার, শুনানিতে বিচারপতি কৃষ্ণা রাও ফের মামলা দায়ের নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার হবে ওই মামলার শুনানি। মামলায় দুই জয়ী তৃণমূল (TMC) প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও রায়াত হোসেন ছাড়াও কুণাল ঘোষকে (Kunal Ghosh) যুক্ত করা হয়েছে।রাজ্যপালের তরফে আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদী এ দিন আদালতে বলেন, “সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছুদিন আগে রাজভবনে গিয়ে শপথ নেবেন না বলে জানান। রাজভবনে যাওয়ার বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও কয়েকদিন আগে তীর্যক মন্তব্য করেছেন রাজ্যপালকে (CV Anand Bose) নিয়ে।”

আদালতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী সঞ্জয় বসু (Sanjay Basu) জানান, “আমরা জানতে পেরেছি যে রাজভবনে মহিলারা নিরাপদ বোধ করেন না- মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের জন্য তাঁর এবং অন্যদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির প্রেক্ষিতে যেখানে মহিলারা রাজভবন সম্পর্কিত অভিযোগ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ হয়েছেন, সেই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মহিলাদের যন্ত্রণার কথা বলা তাঁর পক্ষে যুক্তি সঙ্গত।” এর পরেই নব নির্বাচিত বিধায়কদের শপথ গ্রহণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আইনজীবী সঞ্জয় বসু বলেন, “যদিও আমরা কপিগুলি পাইনি, তবে, মামলাটি অন্যান্য রাজনৈতিক বিষয়গুলি থেকে নজর ঘোরানোর একটি প্রচেষ্টা বলে মনে হচ্ছে। যেমন নির্বাচিত বিধায়কদের স্পিকারের কাছে শপথ নিতে বাধার বিষয়টি আড়াল করতেই এই মানহানির মামলা। আমরা এসব অভিযোগ যথাযথভাবে জানাব।”

এ দিন আইনজীবী ধীরজ ত্রিবেদীর কাছে বিচারপতি জানতে চান, যে সমস্ত সংবাদপত্রের বা সংবাদমাধ্যমের খবরকে ভিত্তি করে রাজ্যপাল মামলা করেছেন, তাদের এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে কি না? আইনজীবী জানান, সেটা করা হয়নি। তারপরই বিচারপতি মামলা পুনরায় নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দেন। বিচারপতির নির্দেশে সব সংবাদমাধ্যমকে মামলায় যুক্ত করা হবে। মামলায় কুণাল ঘোষ ছাড়াও দুই জয়ী তৃণমূল প্রার্থী সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও রায়াত হোসেনকেও মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানি।

কুণাল বলেন, “উপনির্বাচনে নির্বাচিত বিধায়করা অপেক্ষা করছেন। রাজভবন অহেতুক জটিলতা তৈরি করছে। একমাস হয়ে গেল শপথ গ্রহণ হল না, উল্টে তাঁদের মানহানির মামলায় জুড়ে দেওয়া হল।“ কুণালের কথায়, “দুজন বিধায়ক রাজ্যপাল শপথ পাঠ না করালে এমন নয়, তাঁরা বিধায়ক থাকবেন না। অধ্যক্ষ অত্যন্ত উদারতার সঙ্গে রীতিনীতি মেনে চলেছেন। সেই কারণে এখনও তিনি কড়া ব্যবস্থা নেননি। এঁরা যদি বিধানসভায় গিয়ে বসেন তাহলে টেকনিকাল পেনাল্টি ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা নেই।

এরপরেই মানহানির মামলা প্রসঙ্গে কুণাল বলেন, “কেন তিনি (রাজ্যপাল) মানহানির মামলায় নাম জড়াচ্ছেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল পদ এবং রাজভবনকে কোথাও অসম্মান করেননি। রাজভবন থেকে এই সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগ তাঁর কাছে গিয়েছিল, কারণ তিনি পুলিশমন্ত্রী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর কোনও একটা ধারণা, আশঙ্কা, পর্যবেক্ষণ কোনওভাবে প্রকাশিত হয়েছে। এরসঙ্গে রাজ্যপালকে ব্যক্তিগত সম্মানহানি, রাজভবনের মানহানি বা রাজ্যপাল পদের সম্মানহানির কোনও সম্পর্ক নেই।“ টিপ্পনি কেটে কুণাল বলেন, “এখন পড়ল কথা সভার মাঝে, যার কথা তার গায়ে বাজে-ব্যাপারটা সেই জায়গায় চলে গিয়েছে।“




Previous articleসংবিধান বিরোধী মোদির ‘ভোলবদল’! রাজ্যসভায় ওয়াকআউট I.N.D.I.A.-র
Next articleহাথরাসকাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের মামলা! পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের আর্জি