“এভাবে চললে রাজনীতিকে টা-টা বলে দেব”! বিজেপিকে ইঙ্গিতপূর্ণ বার্তা দিলীপের

রাজনীতিতে পা রেখেই বিদ্যুতের গতিতে উত্থান। আবার স্বল্প সময়ে ‘সর্বহারা’ বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। প্রথমে রাজ্য সভাপতি। তারপর কিছু মাসের মধ্যেই খড়গপুর (সদর) বিধানসভা উপনির্বাচনে তারকা জায়ান্ট কিলার হয়ে বিধায়ক। এরপর ২০১৯ লোকসভা ভোটে হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়ে সাংসদ! বঙ্গ বিজেপি তাঁর জিমানাতেই লোকসভায় ২ থেকে à§§à§® সাংসদ পেয়েছিল। তাঁর আমলেই বাংলার বিধানসভা ভোট বিজেপির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৭৭টি আসন পেয়েছিল। তিনি রাজ্য সভাপতি থাকালীন সিপিএমের কিংবা কংগ্রেসকে শূন্য করে প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল বিজেপি। তাঁর হাত ধরেই বঙ্গে বিজেপির ভোট শতাংশ বেড়েছে। বিজেপি কর্মী -সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা নজরে এসেছিল প্রথমবার। আসলে দিলীপ ঘোষ তাঁর ছোট্ট রাজনৈতিক কেরিয়ারে যেখানেই স্পর্শ করেছেন, সেখানেই সোনা ফলেছে। এই বছরদুয়েক আগেও দিলীপ ঘোষ বঙ্গ বিজেপির প্রকৃত অর্থেই “পরশ পাথর”!

কিন্তু এখন তিনি বড় নিঃসঙ্গ! দলে কোণঠাসা। একে একে সব পদ হারিয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনে সর্বশেষ পরিচিতি ‘সাংসদ’ তকমাও হারানোর পরে দলের রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এখনও পর্যন্ত তাঁর পরবর্তী দায়িত্ব সম্পর্কে কিছুই জানায়নি। অতঃপর দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) জানিয়ে দিলেন, তিনি রাজনীতি ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আজ, শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে দিলীপ বলেন, ‘‘আমি এ ভাবে থাকতে পারব না। আমার জন্য নির্দিষ্ট কাজ না থাকলে রাজনীতিকে টা-টা, বাই-বাই বলে দেব।’’

দলে ‘পদহীন’ দিলীপের গুরুত্ব যে কমতে সেটা তিনিও অনেক আগেই বুঝেছিলেন। কিন্তু আরও কিছুটা সময় নিচ্ছিলেন, পাছে পরিস্থিতি বদল হয়। কিন্তু না, রাজ্য বা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিলীপকে নিয়ে এখনও উদাসীন। অগত্যা দিলীপ বলছেন, ‘‘আমি অন্য কারও মতো প্রাক্তন পরিচয় নিয়ে কাজ করতে পারব না। যতদিন দলে রয়েছি, ততদিন কাজ করে গেলেও একটা সময়ের পরে তো সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। রাজনীতি ছাড়াও সমাজের অনেক কাজ রয়েছে।’’ কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত তিনি কবে ঘোষণা করবেন? দিলীপ বলেন, ‘‘আরও কিছু দিন অপেক্ষা করব। দলের পক্ষে কিছু জানানো হয় কি না, তার অপেক্ষায় রয়েছি। তবে কাজ করে যাচ্ছি। আজও আমার নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। তবে অপেক্ষার তো একটা সীমা থাকে!’’

দিলীপ যে রাজনীতি ছেড়ে অন্য কাজে যেতে পারেন, তা ঘনিষ্ঠমহলে আগেই বলেছেন। তবে এ বার তাঁর মূল সংগঠন আরএসএস-কেও সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। দিলীপ বলছেন, ‘‘যাঁদের বলা দরকার, তাঁদের বলে দিয়েছি। আমি এ ভাবে কাজ করতে পারব না। আমায় অন্য সংগঠনের দায়িত্ব দিলে সেখানে যেতে পারি। না হলে আমি নিজেই ঠিক করে নেব কোন ধরনের কাজ করা যায়। বসে থাকতে পারব না।’’ খুব তাড়াতাড়িই কি সিদ্ধান্ত ঘোষণা? দিলীপ বলেন, ‘‘সব কিছু ঘোষণা করে করতে হয় না। ভাল কাজ হলে আপনা থেকেই সবাই বুঝতে পারে। তবে এখন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে রদবদলের সম্ভাবনা। রাজ্যেও কিছু পরিবর্তন হতে পারে। সেটা দেখার পরেই সিদ্ধান্ত।’’

আরও পড়ুন: “রাজনীতি করতে চাই না, সরকার ক্ষতিপূরণ বাড়াক”!হাথরসের স্বজনহারাদের কাছে রাহুল