বন্যা বিধ্বস্ত অসমের কথা সংসদে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিলেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। সেই সঙ্গে হিংসা বিধ্বস্ত মণিপুরের বিবদমান দুই গোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি সোমবার। দেশের মানুষদের ফেলে, দেশের দুঃখ দুর্দশার কথা পাশে সরিয়ে রেখে যেদিন দেশের প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া সফরে গেলেন সেদিনই বিরোধী দলনেতার উত্তর পূর্ব ভারত সফর নির্বাচন পরবর্তী রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল। অসমের বন্যায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৬০ জনের। ৫৩ হাজার মানুষ ঘরছাড়া। সেই পরিবারগুলির সঙ্গে সমবেদনা জানাতে ও বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সোমবার অসম যান রাহুল গান্ধী। ফুলেরতাল এলাকায় একটি ত্রাণশিবিরে উদ্বাস্তু হয়ে আসা বাসিন্দাদের সঙ্গে দেখা করেন। অসম প্রদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সংসদে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দাবি পেশের আবেদন করা হয় বিরোধী দলনেতার কাছে।

এরপরই রাহুল গান্ধীর দাবি, ঘরছাড়া ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সংখ্যাটা বিজেপির ডবল ইঞ্জিন রাজ্য অসমের ভয়ঙ্কর অব্যবস্থাকে প্রতিফলিত করছে, যারা বন্যা-মুক্ত অসমের প্রতিশ্রুতিতেই ক্ষমতায় এসেছিল। অসমের মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে তাঁর দাবি তিনি সংসদে তাঁদের সৈনিক। কেন্দ্রের কাছে অসমের বন্যা নিয়ন্ত্রণে সামগ্রিক ও সহানুভূতিপূর্ণ মনোভাবের দাবি করেন তিনি। সেই সঙ্গে সামগ্রিকভাবে উত্তরপূর্ব ভারতের জলভাগ পরিচালনার মাধ্যমে অসমের বন্যা পরিস্থিতি থেকে মুক্তির দাবি জানান। এই দাবি সংসদে জানানোর বার্তা দেন তিনি।

অসম থেকে সোমবারই মণিপুরে যান লোকসভার বিরোধী দলনেতা। সেখানে একদিকে মেইতি গোষ্ঠীর মানুষদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। অন্যদিকে পার্বত্য এলাকার সংঘর্ষ বিধ্বস্ত চূড়াচাঁদপুরেও যান তিনি কুকি জনগোষ্ঠীর মানুষের সঙ্গে কথা বলার জন্য। মইরাংয়ে মেইতি গোষ্ঠীর আশ্রয় শিবিরে গিয়ে কথা বলেন মানুষের সমস্যা নিয়ে। অন্যদিকে চূড়াচাঁদপুরে প্রবল উৎসাহে তাঁকে স্বাগত জানান স্থানীয় কুকি সম্প্রদায়ের মানুষ। সেখানেও মানুষের দাবি নিয়ে কথা বলে তিনি।

রাহুলের মনিপুর সফর যে রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ছিল তাও স্পষ্ট করে দেন তিনি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে। রাজ্যপাল অনুসূইয়া উইকেইয়ের সঙ্গে দেখা করে মণিপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিরোধী হিসাবে যা যা সহায়তা করা প্রয়োজন, তার প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার মণিপুর নিয়ে যেভাবে এগোচ্ছে তাতে যে তিনি সন্তুষ্ট নন, তাও স্পষ্ট করে দেন।
