সন্দেশখালি (Sandeskhali) মামলার তদন্ত করবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)। সোমবার এমনটাই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court of India)। এই মামলায় আগেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Kolkata High Court)। আর সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা দায়ের করেছিল রাজ্য। তবে এদিন সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিল সন্দেশখালি মামলার তদন্তভার থাকবে সিবিআইয়ের হাতেই। এই ইস্যুতেই এদিন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট কীভাবে সিবিআইয়ের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করছেন? কুণাল প্রশ্ন তোলেন, সিবিআই বিজেপি পরিচালিত, সেকারণেই তদন্ত প্রভাবিত হলে তা কীভাবে সুনিশ্চিত হবে? সন্দেশখালিতে জমি দখলের যে অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। পাশাপাশি নারী নির্যাতনের যে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছিল বিজেপির তরফে তা দলের নেতা গঙ্গাধর কয়ালই স্বীকার করে নিয়েছেন। এমনকি রাষ্ট্রপতি ভবনে যেসব মহিলারা গেলেন সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র বললেন ওরা নির্যাতিত নন। এরপরই কুণালের প্রশ্ন যদি সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় সংস্থা গঙ্গাধর কয়ালকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে? নাকি সিবিআই তাদের হেফাজতে নেবে? সিবিআইয়ের তদন্তের নিরপেক্ষতা তৃণমূল কংগ্রেস দাবি করছে বলেই জানান কুণাল।

সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিআর গাভাই এবং বিচারপতি কেভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি উঠলে বিচারপতিদের প্রশ্ন, যেখানে সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতনের এত অভিযোগ উঠেছে, যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে কেন রাজ্য আলাদা করে আগ্রহ দেখাচ্ছে। কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কী না তা নিয়েও এদিন উষ্মাপ্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। উল্লেখ্য, চলতি বছরের শুরু থেকেই রেশন বন্টন মামলাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো অশান্ত হয়ে ওঠে সন্দেশখালি। শেখ শাহজাহানের বাড়িতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র অভিযানকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এরপর সেই ঘটনায় জোর করে রাজনীতির রং লাগিয়ে লোকসভা নির্বাচনের আগে ফায়দা তুলতে মরিয়া ছিল রামধনু জোট। কিন্তু বিরোধী জোটের সমস্ত মিথ্যাচারের জবাব দিয়ে ফের বাংলায় বিপুল ভোটে জয় পায় তৃণমূল কংগ্রেস। এরমধ্যেই সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং জমি দখলের অভিযোগ নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছিল কলকাতা হাই কোর্ট। এরপরই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয়।

যদিও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য। গত ২৯ এপ্রিল শীর্ষ আদালতে মামলাটি উঠে। কিন্তু সে সময়ে রাজ্যের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ভি সওয়াল করেছিলেন, এই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্য সামনে এসেছে, সেগুলি আদালতে জমা করতে ২-৩ সপ্তাহ সময় লাগবে। সে সময় শুনানি মুলতুবি রাখা হলেও, তদন্ত প্রক্রিয়া যাতে কোনওভাবে ব্যাহত না হয়, তার নির্দেশ দেন বিচারপতি গাভাই। এদিন মামলার শুনানি ছিল। এদিনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের পর্ষবেক্ষণ, নারী নির্যাতনের এত ভয়ঙ্কর অভিযোগ যেখানে রয়েছে, সেখানে কেন সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করা হচ্ছে? তবে কী কাউকে আড়াল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে? নাকি এর পিছনে অন্য কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে? এদিন সরাসরি এমনই প্রশ্ন তোলে দেশের শীর্ষ আদালত।
