চিকিৎসার জন্য় বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে একটা বড় ভরসার জায়গা ভারত। কলকাতা থেকে দক্ষিণের রাজ্য এমনকি দিল্লিতেও প্রতিদিন হাজার হাজার বাংলাদেশের নাগরিক চিকিৎসার জন্য আসেন। আর তাঁদের বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে শরীর থেকে বের করে নেওয়া হত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সেই অঙ্গ নিয়ে রাজধানী দিল্লিতে চলত বিরাট এক পাচারচক্র। দিল্লি পুলিশের তৎপরতায় সেই চক্রের সাত জন গ্রেফতার হল, যার মধ্যে একজন ডাক্তারও রয়েছেন।

বাংলাদেশের দালাল ও ভারতের দালাল, সেই সঙ্গে ডাক্তারদের যৌথ উদ্যোগে চলত গোটা পাচারচক্র। দিল্লি পুলিশের দাবি, বাংলাদেশের দালালরা প্রথমে সেখানকার রোগীদের চিহ্নিত করতেন। তাঁদেরকে নিয়ে আসতেন বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের জন্য। তাদের থেকে নিয়ে নেওয়া হত অঙ্গ। তবে এই দালালদের আরও ভূমিকা ছিল এই পাচারচক্রে। যাঁদের শরীরে সেই সব অঙ্গের প্রয়োজন থাকত, তাদের অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যেত এই দালালরাই। ফের অস্ত্রোপচার করে তাঁদের দেশে ফেরানোর দায়িত্বও থাকত এদেরই।

পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, গোটা প্রক্রিয়াটাই চলত অবৈধ সীমান্ত পারাপারের মধ্যে দিয়ে। যাঁরা অস্ত্রোপচারের জন্য আসতেন জাল পরিচয়পত্র নিয়ে। এমনকি চিকিৎসার জাল কাগজপত্রও তৈরি করতেন এই দালালরা। ভারতীয় দালালদেরও ভূমিকা ছিল জাল নথি তৈরিতে। বাংলাদেশের তিনজন দালালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

যে সাতজনকে দিল্লি পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তার মধ্যে একজন দিল্লির এক মহিলা ডাক্তারকেও রয়েছেন। তিনি দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়া করতেন। সেই ডাক্তারের দুই সহকারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিডনির অস্ত্রোপচার করা সেই মহিলা ডাক্তার ২০২১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত এভাবে অস্ত্রোপচারের কাজ করেছেন।
