গো-মাংসের চোরাচালানের “ছাড়পত্র” পিছু ২০০টাকা নেন শান্তনু! বিস্ফোরক দাবি পাচারকারীর

সীমান্তে চোরাচালানকে মদত দিতে গিয়ে একেবারে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রে মোদি মন্ত্রিসভার সদস্য শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)! তাঁর বিরুদ্ধে গো-মাংস চোরাচালানের মতো বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে। শান্তনু ঠাকুর নিজের পদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে চোরাচালানের পাস ইস্যু করেন বলেই অভিযোগ উঠছে। তাঁর লেটারহেডে প্রতিটি পাস পিছু ২০০টাকা করে বিজেপি সাংসদের লোকেরা নিতেন বলে জানা যাচ্ছে। নিজের লেটারহেডে দিনে ৫ থেকে ৬টি এরকম পাস ইস্যু করতেন শান্তনু ঠাকুর। আর এই ঘটনা সামনে আসতেই তোলপাড় রাজ্য ও জাতীয় রাজনীতি!

ঘটনার সূত্রপাত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) লেটারহেডে সই করা একটি ‘ছাড়পত্র’ কে কেন্দ্র করে। শান্তনু ঠাকুর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় অবাধে চোরাচালান চালাতে মদত দিচ্ছেন। আর সেটাই এখন জাতীয় স্তরে বিতর্কের কেন্দ্রে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় অবৈধ কারবারে কীভাবে ব্যবহার হতে পারে এই ছাড়পত্র? এই প্রশ্ন এখন সর্বত্র। বেকায়দায় বিজেপি। গো-সংরক্ষণের পক্ষে সওয়ালকারী বিজেপির টিকিটে জিতেই দ্বিতীয়বার মোদির মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। তিনিই নিজের লেটার হেডে জনৈক জিয়ারুল গাজিকে বিনা বাধায় গো-মাংস কারবার চালানোর সুপারিশ করেছিলেন। অবাধে জিয়ারুলকে ব্যবসা চালিয়ে যেতে বর্ডার সিকিওরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) কর্তাকে লিখিত আবেদন করেছিলেন কেন্দ্রীয় জাহাজ ও বন্দর রাষ্ট্রমন্ত্রী। দিল্লি সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএসএফ কর্তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, এই ধরনের পারমিটে কীভাবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় ব্যবসায় ছাড় দেওয়া হয়?

গত, রবিবার রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ জিয়ারুলকে সীমান্তে গো-মাংসের চোরাচালানের পারমিট ইস্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। নিজের পদ ব্যবহার করেই শান্তনু ঠাকুর পাচারের মতো বেআইনি কাজকে মদত দিচ্ছেন বলে দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন।

 


যেখানে শান্তনুর বিরুদ্ধে এই বিস্ফোরক অভিযোগকে আরও ইন্ধন দিয়েছেন ওই জিয়ারুল গাজি। রবিবার জিয়ারুল দাবি করেছিলেন, বাড়িতে গো-মাংস নিয়ে যাওয়ার জন্য স্থানীয় এমপির পারমিট দিয়েছিলেন বিএসএফের হাতে। কিন্তু এরপর তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অনুগামীরা জোর করে তাঁকে সাংবাদিক সম্মেলনে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে বাধ্য করা হয় সাংবাদিকদের সামনে ওইসব কথা বলতে। পাশাপাশি এই পারমিট হাতে পেতে তাঁকে টাকা দিতে হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন জিয়ারুল। স্বরূপনগরের হাকিমপুর এলাকায় শান্তনু ঠাকুরের নির্বাচনী এজেন্ট এভাবে পারমিট বিক্রি করে টাকা তোলেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিয়ারুলের এই দাবি মাননে চাননি। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। ওই ব্যক্তি গতকাল নিজেই সব কথা বলেছিলেন। আমাদের হয়ে যাঁরা কথা বলেন, তৃণমূল তাঁদের ভয় দেখিয়ে মিথ্যা বলায়। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’

আরও পড়ুন:৩১বুথে বিজেপির শূন্য ভোট! ডবল ইঞ্জিন রাজস্থানে ধাক্কা

 

Previous articleটেটের ওএমআর শিটের তথ্য উদ্ধারে সাইবার বিশেষজ্ঞদের শরণাপন্ন সিবিআই
Next articleপুলিশি অত্যাচারে মৃত্যুর অভিযোগে তুলকালাম ঢোলাহাট, পরিস্থিতি সামাল দিতে নামলো ব়্যাফ