মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিজেপি বি.কৃত করে বিভ্রান্ত করছে, তোপ কুণালের

কারণ, সীমান্তটা বিএসএফ দেখে। সীমান্তটা কেন্দ্রীয় সরকার দেখে।

বাংলাদেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার যে সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ করেছিলেন, তার মিথ্যা এবং বিকৃত করছে বিজেপি। সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সাফ জানালেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। রবিশঙ্কর প্রসাদ সাংবাদিকদের যা বলেছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, বিকৃত এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য এই ধরনের বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। কুণাল বলেন, বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন যে এটি আন্তর্জাতিক বিষয়, এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলবেন না, এ নিয়ে কেন্দ্র মন্তব্য করবে। এরই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, যদি কেউ বিপদে পড়ে তার পাশে থাকতে বাংলা প্রস্তুত। তার সেই বক্তব্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন যে যারা বিপদে পড়বে বাংলা তাদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। তার অর্থ এই নয়, যে বাংলা সরাসরি কাউকে ডাকবে। কারণ, সীমান্তটা বিএসএফ দেখে। সীমান্তটা কেন্দ্রীয় সরকার দেখে।

কুণালের সাফ কথা,কেন্দ্রীয় সরকার ছাড়পত্র না দিলে কেউ বাংলাদেশ থেকে এখানে আসবেন কী করে? কেন্দ্রীয় সরকার যদি অনুমতি দেয়, বিএসএফ যদি বৈধ ছাড়পত্র দেয় তাদের, তবে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিয়ম নীতি মেনে প্রতিবেশী হিসেবে বাংলা তাদের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। এই কথার বিকৃত অর্থ করছে বিজেপি। মনে রাখতে হবে সীমান্তটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক দেখে। রাজ্য সরকার যদি মনে করে বাংলাদেশ থেকে কাউকে এখানে আশ্রয় দেবে তা কখনোই পারেনা। কেন্দ্রীয় সরকারকে আগে বাংলাদেশে বিপদে পড়া লোককে আসতে দিতে হবে। তবেই তাদের আশ্রয়ের প্রশ্ন আসছে। যদি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত তাদের আসতে দেন, সেক্ষেত্রে বাংলা প্রস্তুত আশ্রয় দেওয়ার জন্য। অথচ এর সঙ্গে সিএএ-এনআরসি মিশিয়ে মিথ্যাচার করছেন রবিশংকর প্রসাদরা।
কুণাল স্পষ্ট জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের, তৃণমূলের নীতি হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নীতি। সংহতি, ঐক্য, সম্প্রীতির নীতি। বিজেপি সিএএ-এনআরসি করছে ধর্মের ভিত্তিতে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, কেউ বিপদে পড়লে আশ্রয় দেবেন। তার সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। বাংলাদেশের এখন যা পরিস্থিতি চলছে সেখানে ধর্মের কোনও বিভাজন নেই। আর বিজেপি ধর্মীয় বিভাজনের নীতিতে বিশ্বাস করে, তাই বিষয়টাকে গুলিয়ে দিতে চাইছে।

এদিন কুণাল মনে করিয়ে দেন, যারা পড়তে গিয়েছেন, যারা চাকরির জন্য গিয়েছেন, যারা ব্যবসার জন্য গিয়েছেন তাদেরকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই। কুণালের সাফ কথা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও ধর্মের কথা বলেননি। বিজেপি মিথ্যাচার করছে, মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। বিজেপির মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা করছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে আসার জন্য আন্তর্জাতিক সীমানা পেরোতে হয় অথচ মিথ্যাচার করে যে টুইট অমিত মালব্য এবং বিজেপি নেতারা করছেন তার কোনও অর্থ নেই। বিজেপি তো উগ্র হিন্দুত্বের বিকৃত মনোভাব নিয়েই চলে এবং বিপণন করে। সনাতনী হিন্দুত্বের যে বার্তা তা বিজেপি মানে না।

আরএসএস প্রসঙ্গে কুণালের মন্তব্য, বিজেপির অন্তরাত্মা আর এই সরকারের অন্তরাত্মা হল এক। এদিন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বলেছেন, আমাদের সংগঠন আছে কিন্তু আমরা ভোট করাতে জানি না।কুণালের কটাক্ষ, আসলে নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা। যখন ওনারা কিছু ভোট পেয়েছিলেন, ভোট বেড়েছিল তখন তো এই কথা বলেননি। এগুলো ওদের ঘর সংসারের শরিকি বিবাদ। সুকান্ত মজুমদার বলছেন, বিজেপি নতুন দল। সুকান্ত মজুমদার সভাপতি হওয়ার পর বিজেপি তৈরি হয়েছে! এটা কেউ বিশ্বাস করবে? এদের থেকে অনেক এগিয়ে শুভেন্দু অধিকারী। কারণ, তৃণমূলে থেকে এখান থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে গিয়েছে। বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আমাদের সঙ্গে।। এখন বিজেপির ভরাডুবি হয়েছে, সুকান্ত-দিলীপ-শুভেন্দু নিজেদের মধ্যে দলাদলি করছে। কুণালের কটাক্ষ, বিজেপি তো তৃণমূল থেকে অনেককে নিয়ে গেল। তারা ভোট করানো জানতো বলেই তো নিয়ে গিয়েছিল। তার মানে কি কোচিং ক্লাসটা ঠিকমতো হয়নি? বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীকরণ দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যাবে। শুভেন্দুর দিলীপ-সুকান্তর থেকে অনেক বড় স্প্যানে কাজ করা নেতা। তারাও ব্যার্থ হচ্ছে, সেই কারণে এখন মারামারি চলছে।

 

Previous articleঅপরাধের ছক বানচাল! কলকাতায় ২ বাংলাদেশী-সহ পুলিশের জালে ৪
Next articleবিহারের ‘স্পেশাল ক্যাটাগরি’ দাবিতে ‘না’ কেন্দ্রের, সরব লালু