‘বস্তাপচা পদ্ধতি’! আমেরিকার এক চতুর্থাংশ অর্থনীতি ছুঁতে ভারতের ৭৫ বছর লাগবে!

বড়লোক হতে গিয়ে ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে দেয় দেশ। যার ফলে ভারতের মতো দেশের প্রতি নাগরিকের মাথাপিছু ১০ শতাংশ করে আমেরিকান ডলার ধার

0
1

আমেরিকার উপার্জনের এক চতুর্থাংশে পৌঁছাতে ভারতের আরও ৭৫ বছর সময় লাগবে। চিন যা আগামী দশবছরে করে ফেলতে পারবে, তা সাত গুনেরও বেশি সময়ে করবে ভারত। বিশ্বব্যাঙ্কের সাম্প্রতির পরিসংখ্যানে দাবি করা হল এমনটাই। বিশ্বের মধ্য-উপার্জনের দেশগুলির মাপকাঠিতেও ভারতের এই অর্থনৈতিক দুরবস্থার জন্য বিশ্বব্যাঙ্কের বিশেষজ্ঞরা ভুল নীতিকেই দায়ী করছেন। মোদি সরকার প্রতিবার বাজেট পেশ করে দেশের জিডিপি বা পার ক্যাপিটা ইনকামের যে ঢাক বাজায়, আদতে তা কতটা ফাঁপা তা বিশ্বব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।

কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের সময় যে কোনওভাবে হিসাব মিলিয়ে জিডিপির বৃদ্ধি বা দশ বছরে মাথা পিছু উপার্জনের পরিমাণ ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪২ শতাংশতে নিয়ে যাওয়ারও দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। নির্বাচনী প্রচার থেকে ভোট পরবর্তী ময়দানে কেন্দ্রের আর্থিক নীতি নিয়ে যে প্রচার চালিয়েছে মোদির সাকরেদরা, তার পর্দা ফাঁস করে দিল বিশ্বব্যাঙ্ক। ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট ২০২৪: দ্য মিডল ইনকাম ট্র্যাপ শীর্ষক প্রবন্ধে বর্তমান প্রবণতা নিয়ে একাধিক দাবি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, আমেরিকার মাথা পিছু রোজগারের এক চতুর্থাংশে পৌঁছাতে চিনের সময় লাগবে অন্তত ১০ বছরের বেশি। ইন্দোনেশিয়ার লাগবে প্রায় ৭০ বছর এবং ভারতের সময় লাগবে ৭৫ বছর।

এর কারণ হিসাবে দায়ী করা হয় ভারতের উন্নয়নে বস্তাপচা ধ্যান ধারণাকে। যে পন্থা অবলম্বন করে ভারতের মত মধ্য উপার্জনের দেশগুলি উন্নয়নের পথে যাচ্ছে তা গত শতাব্দীর, দাবি করেন অর্থনীতিবিদ ও বিশ্বব্যাঙ্কের আধিকারিকরা। এই পদ্ধতিতে অর্থনৈতিকভাবে জিতে যাওয়া বা হেরে যাওয়া হতে পারে, কিন্তু তার স্থায়িত্ব থাকে না। যার ফলে একটা শতকের মাঝামাঝি এসে এদের অর্থনীতির দৌড়টাই থেমে যাবে, দাবি করা হয় বিশ্লেষণে। কোনও গাড়িকে প্রথম গিয়ারে রেখে জোরে চালানোর প্রয়াসে সঙ্গে এই পন্থার তুলনা করা হয়।

মূলত ধার করে অর্থনীতি সচল রাখার পন্থাকেই বস্তাপচা চিন্তাভাবনা বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্টে। ২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত ১০৮টি দেশকে মধ্য উপার্যনের দেশ হিসাবে চিহ্নিত করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। অথচ এই দেশগুলিতেই বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশ বসবাস করেন। রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বড়লোক হতে গিয়ে ঋণের ফাঁদে পা দিয়ে দেয় দেশ। যার ফলে ভারতের মতো দেশের প্রতি নাগরিকের মাথাপিছু ১০ শতাংশ করে আমেরিকান ডলার ধার হয়ে যায়। ঠিক একইভাবে ভারতের অর্থনীতি খুল ভালো চলছে দেখাতে গিয়ে মোদি সরকারও প্রতি ভারতীয়ের মাথাপিছু প্রায় ৮ হাজার আমেরিকান ডলার ঋণের বোঝা চাপিয়ে চলেছেন।