ডিভিসির ছাড়া জল নিয়ে চিন্তায় প্রশাসন। হাওড়া, হুগলির মতো জেলাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। অন্যান্য জেলায় বন্যা পরিস্থিতির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কারণে আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন। দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সতর্কতা না থাকলেও উত্তরবঙ্গে আগামী ৪৮ ঘণ্টা অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। পাহাড়ে রাতভর বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি চলেছে। ফলে একাধিক এলাকায় নতুন করে ধস নেমেছে। বৃষ্টির ফলে একাধিক এলাকায় বিপর্যস্ত জনজীবন।

বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া শুরু রাজ্যের। ডিভিসি-র জল ছাড়া নিয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ ওঠে। রাজ্যের দাবি, জল ছাড়ার কথা সময়মতো জানতে না পরার জন্য এই সমস্যা হয়। জলাধার বা বাঁধ থেকে জল ছাড়ার কথা কিছুটা আগাম সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের জানাতে হবে। আসলে ডিভিসির বিভিন্ন জলাধার থেকে ছাড়া জল মঙ্গলবার সকালের মধ্যেই পৌঁছে যাবে এই রাজ্যের তিন জেলাতে। এই নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সমস্ত আধিকারিকদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিনও ডিভিসি জল ছেড়েছে। তবে ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যাওয়ায় তুলনামূলক কম দল ছেড়েছে ডিভিসি। ঝাড়খণ্ড থেকে আসা জলের চাপ কমাতেই মূলত পাঞ্চেত জলাধার থেকে বাড়তি জল ছাড়া হচ্ছিল গত দু’দিন ধরে।ডিভিসি থেকে জল ছাড়ায় হাওড়া এবং হুগলিতে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা করছে প্রশাসন। মুণ্ডেশ্বরী এবং কানা দামোদর নদীর জলস্তর বেড়েছে। ফলে আমতার দুই ব্লক এবং জগৎবল্লভপুর প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। ভিডিসির জল ছাড়ার ফলে আমতার জয়পুরে বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে মুণ্ডেশ্বরী নদী। জলের তোড়ে রবিবারই ভেঙেছে চারটে বাঁশের সেতু। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন থেকে জেলাবাসীকে হড়পা বানের আশঙ্কার কথা জানিয়ে সতর্ক করেছে। জানানো হয়েছে, আগামী কয়েক দিন অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্যেই জেলার সমস্ত ব্লক প্রশাসনকে যে কোনও ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ জারি করা হয়েছে।

বিধানসভায় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন। প্লাবন জনিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি রাখার তিনি নির্দেশ দেন।, সংশ্লিষ্ট জেলার সমস্ত বিধায়কদের এই মর্মে কড়া নজরদারি ও জলের গতিবিধির উপর সদা সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, তেনুঘাট সবচেয়ে বেশি জল ছেড়েছে। পাশাপাশি মাইথন ও পাঞ্চেত থেকেও বিপুল পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে প্রচুর জল ছাড়া হয়েছে। মন্ত্রী ও বিধায়কদের এই বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। হাওড়া জেলার উদয়নারায়ণপুর, হুগলি জেলার আরামবাগ ও খানাকূল, পূর্ব মেদিনীপুরের ঘাটালকে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
