Tuesday, December 23, 2025

ডায়ামন্ড হারবার কফি হাউসের জমজমাট বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান

Date:

Share post:

কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসের কথা সকলেই জানে। কলেজ স্ট্রিট, যাদবপুর এবং শ্রীরাপুরের পথ ধরে ডায়মন্ড হারবারে কফিহাউস এক বছর আগে ৪ আগস্ট উদ্বোধন হয়েছিল। দেখতে দেখতে এক বছর অতিক্রম করে সকলের কাছে প্রিয় জায়গা হিসাবে স্থান পেয়েছে ইতিমধ্যেই। নানা ধরনের কফির পাশাপাশি চিকেন স্যান্ডুইজ, কবিরাজি, চিকেন ওমলেট, ফিস ফ্রাই সব রকমই নস্টালজিক খাবার এই ডায়ামন্ড হারবারের কফি হাউসে পাওয়া যায়। এছাড়া সেই খাবার ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে পেয়ে যেতে পারেন আপনিও।

এদিন কফি হাউসের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কলেজ স্ট্রিট কফি হাউস কোঅপারেটিভ সোসাইটির অবৈতনিক উপদেষ্টা বিশিষ্ট কবি প্রসূন ভৌমিক সহ পুরপ্রধান অনুপ দাস এবং দুই পুরমাতা ও ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক হিমাদ্রি পাল। এই অনুষ্ঠানের প্রধান আকর্ষণ ছিল কবি প্রসূন ভৌমিক এর কবিতা ও নবীন গায়িকা ঋষিকা ভৌমিক-এর গানের যুগলবন্দী: পিতপুত্রীর কথকতা যা মুগ্ধ করে উপস্থিত সকলকে। পরে লোকগানের সম্ভার নিয়ে মাতিয়ে তোলেন তীর্থ বিশ্বাসের সহজ মানুষ। বিশিষ্ট কবি, নাট্যকার ও রাজনৈতিক কর্মী সৌমিত বসু স্বকীয় ভঙ্গিতে সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

ডায়মন্ড হারবার কফি হাউসের মালিক নুর ইসলাম লস্কর বলেন, ‘আগে বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে কলকাতার কফি হাউসে যেতাম। সুযোগ পেয়ে কফি হাউসকে ডায়মণ্ডহারবারে নিয়ে এসেছিলাম। দেখতে দেখতে এক বছর অতিক্রম করেছি। এই কদিনে সবার ভালোবাসা পেয়েছি এবং এইভাবেই আমরা এগিয়ে যেতে চাই’।

উল্লেখ্য বই পাড়ার মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রাচীন ইতিহাস। কলকাতার প্রাক্তন অ্যালবার্ট হল থেকে রূপান্তরিত হয় ঐতিহাসিক অধুনা কফি হাউসে। সেই সময়ের অ্যালবার্ট হল হয়ে উঠেছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের গর্ভগৃহ। রাজনৈতিক মতাদর্শের জন্মস্থান, ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসের প্রত্যেক টেবিল অনেক বিপ্লবের নীরব সাক্ষী, তা নকশাল আন্দোলন হোক বা নতুন লেখক এবং লিটল ম্যাগাজিন তৈরি করা হোক অথবা কোনও সাংস্কৃতিক বা সাহিত্যিক বা বুদ্ধিবৃত্তিক উত্থান- সবই আছে। রাতারাতি কলকাতার বুদ্ধিজীবী থেকে কবি সাহিত্যিক, শিল্পী এবং কলেজ-পড়ুয়াদের মৌতাত জমে উঠেছিল ইনফিউশনের কাপে। সঙ্গী থাকত কবিরাজি, চিকেন-অমলেট থেকে মোগলাই। প্রাচীন অ্যালবার্ট হল থেকে অধুনা কফি হাউসের এই ঘর রবীন্দ্রনাথ, সুভাষচন্দ্র থেকে সত্যজিৎ ,ঋত্বিক, মৃণাল, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায় সহ অমর্ত্য সেন– সকলের পদধূলিধন্য।
শুরুতে কফি হাউসের অভিভাবক ইণ্ডিয়ান কফি বোর্ড থাকলেও পরে ১৯৫৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর হস্তক্ষেপে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায়ের সহায়তায় কফি হাউস পরিচালনার ভার নেয় কর্মচারী সমবায়। সেই থেকে আজ অবধি একই ভাবে হাল ধরে‌ রেখেছেন তাঁরাই। কফি হাউস কোঅপারেটিভ, কর্মী ও কর্মচারীদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে।

 

spot_img

Related articles

আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শহরের বাসিন্দাদের বাড়ির জন্য নয়া উদ্যোগ রাজ্য সরকারের

আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া শহরের বাসিন্দাদের মাথার উপর নিজস্ব ছাদ নিশ্চিত করতে নতুন উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার (West...

প্রত্যন্ত এলাকার মানুষকে শুনানির নোটিশ! হয়রানির প্রতিবাদে কমিশনে তৃণমূল

দ্বীপ এলাকার বাসিন্দাদের নির্বাচন কমিশনের শুনানির জন্য হাজির হতে হবে সরকারি দফতরে। তাও সেটা খুবই সামান্য নামের বানানের...

সামশেরগঞ্জে বাবা-ছেলে খুনে ১৩ দোষীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ জঙ্গিপুর মহকুমা আদালতের

সামশেরগঞ্জে (Samsherganj) হরগোবিন্দ দাস ও চন্দন দাসকে খুনের ঘটনায় দোষী ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল জঙ্গিপুর মহকুমা...

ফের সিইও দফতরের সামনে বিএলওদের বিক্ষোভ-অশান্তি

ফের বিএলওদের বিক্ষোভে (BLO Protest) ধুন্ধুমার কাণ্ড সিইও দফতরের (CEO Department) সামনে। পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার অপরাধে আটক ৭...