আর জি করে (R G Kar Medical College And Hospital) তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের নৃশংস ঘটনায় প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু তার পরেও বিরোধীদের চক্রান্ত ও উস্কানিতে উত্তাল বাংলা। শুক্রবার আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে ও দোষীদের শাস্তির দাবিতে রাজপথে মিছিল করলেন তৃণমূল (TMC) সুপ্রিমো। একই সঙ্গে ফের একবার তিনি স্লোগান তুললেন, “আমি এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। রবিবারের মধ্যে ফাঁসি চাই।“

এদিন দুপুরে মৌলালি থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করেন তৃণমূল সভানেত্রী। সঙ্গে ছিলেন দলীয় সাংসদ শতাব্দী রায়, মহুয়া মৈত্র, জুন মালিয়া, সায়নী ঘোষ, রচনা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, শর্মিলা সরকার, মিতালি বাগ, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, শিউলি সাহা, বিধায়ক লাভলি মৈত্র, অদিতি মুন্সি, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেত্রীরা। ডোরিনা ক্রসিংয়ে প্রতিবাদ সভা থেকে মমতা স্পষ্ট ঘোষণা করেন, ”সিবিআই যদি রবিবারের মধ্যে দোষীকে ধরতে না পারে, তাহলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে। দিল্লিতে গিয়ে আমরা ধর্না দেব। সোমবার, রাখিবন্ধনের দিন আমাদের কর্মসূচি হবে সব ভাইবোনদের রক্ষার জন্য়।”

মমতা (Mamata Banerjee) স্পষ্ট জানান, ”আমরা কেউ এই ঘটনাকে সমর্থন করি না। দোষীদের ফাঁসির দাবিতে আগামিকাল সব ব্লকে মিছিল হবে।” তিনি বলেন, ”ফেক ভিডিও তৈরি করে মানুষকে উত্তেজিত করে দিচ্ছে কেউ কেউ। সব সংবাদ সত্য নয়, সোশ্যাল মাধ্যমে পয়সা কামানোর জন্য, রাজনীতি করার জন্য মিথ্যে ঘটনা বানানো হচ্ছে।”

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ”দোষীদের ফাঁসি হোক, আমরা ফাঁসির পক্ষে। রাজ্য সরকার পুলিশকে সবরকম সাহায্য করবে। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীদের কথা শুনে কলকাতা পুলিশ কাজ করেছে। সবরকম পরীক্ষা করেছে, ডগ স্কোয়াড পাঠিয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ থেকে শুরু করে, যত এভিডেন্স, সব সংগ্রহ করেছে। রাত দুটো পর্যন্ত আমি ওদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলাম।” তাঁর অভিযোগ, দেহ নিয়ে যাওয়ার সময় নামিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বিজেপি-র এক নেত্রী।


পুলিশকে তদন্তের সময় দেওযা হয়নি বলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর। তিনি দাবি করেন, কলকাতা পুলিশ আর জি করের তদন্ত অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করছিল। মমতার কথায়, ”সেদিন রাতে যা ঘটেছিল, পুলিশের কাছে যা যা ছিল, পুলিশ দিয়ে দিয়েছে। পুলিশ ৯০% এভিডেন্স সংগ্রহ করেছিল, ১৬৪ জনের টিম তৈরি করেছিল। মৃতার বাবা-মা বলেছিল, ভরসা আছে তদন্তে। আমি রবিবার অবধি সময় চেয়েছিলাম। আরও অনেককে ডাকার কথা ছিল, আপনারা সময় দিলেন না। ৩৪ জনকে ডেকেছিল, জিজ্ঞাসাবাদের সময় পায়নি। আপনাদের তর সইল না। আপনারা মমতা ব্যানার্জিকে অপমান করতে চাইলেন। লজ্জা করে না বিজেপি আর সিপিএম? একটা অমানবিক ঘটনা নিয়ে দানবিকতা করে চলেছেন।”


এরপর মমতা দাবি করেন, ”আমি এটা নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। রবিবারের মধ্যে ফাঁসি চাই। মণিপুরে মহিলাদের যখন নির্যাতন করা হয়েছে, তখন কেন্দ্রীয় সরকার ক’টা দল পাঠিয়েছে? সত্য ঘটনা সামনে আসুক। কিন্তু অসত্য প্রচার করবেন না।” এদিন প্রতিবাদ মঞ্চ থেকে আওয়াজ ওঠে, ”তাড়াতাড়ি বিচার চাই।”
