“সকলেই বিচার চাইছে। আমরাও বিচার চাইছি। বিচার তো দেবে আদালত। সুপ্রিম কোর্ট বলার পরেও ডাক্তারবাবুরা (Doctor) আন্দোলন তুলছেন না। কর্মবিরতি চলছেই। ওঁদের কি সুপ্রিম কোর্টেও আস্থা নেই? এভাবে চলতে থাকলে আমাদের মতো আর কোথায় যাব? নিরপরাধ, অসহায় রোগীরা কেন শাস্তি পাবে?’’ পরিবারের এক বয়স্ক সদস্যকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে এমনই আক্ষেপ ঝরে পড়ল এক ব্যক্তির। হাড় ভেঙে হাসপাতালে ভর্তি তাঁর আত্মীয়। চিকিৎসা করাতে এসে জেরবার হচ্ছেন ওই ব্যক্তি। এসএসকেএম চত্বরে দাঁড়িয়েই যাবতীয় অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি।

অন্যদিকে, আচমকা মায়ের শরীর খারাপ হতে শুরু করেছিল। তড়িঘড়ি মা’কে নিয়ে আর জি করে ছুটে এসেছিলেন সোদপুরের এক গৃহবধূ। তাঁর মা ব্রেস্ট ক্যানসারে আক্রান্ত। আর জি করেই চিকিৎসা করাচ্ছিলেন মায়ের। কিন্তু সেই ভরসা আর থাকল কই! যে ডাক্তার (Doctor) আগে তাঁর মা’কে দেখেছিলেন, এদিন তিনি ছিলেন না। অগত্যা ইমার্জেন্সিতে একটি ইনজেকশন দেওয়ার পর মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হলেন ওই গৃহবধূ। যাওয়ার সময় বললেন, “আবার আসতে হবে। শুধু শুধু খরচ হচ্ছে। এখনই এই আন্দোলন বন্ধ হওয়া দরকার।”

এদিকে পড়ে গিয়ে হাত ভেঙেছেন এক মহিলা সব্জি বিক্রেতা। তাঁর ছেলে মা’কে নিয়ে ট্যাংরা থেকে এসেছিলেন এনআরএস হাসপাতালে। ছেলের অভিজ্ঞতা, “মায়ের হাতে প্লেট বসাতে হবে বলল। কিন্তু এখন শুধু প্লাস্টার করে ছেড়ে দিল। আর কোথায় যাব বলুন তো? আমাদের মতো গরিবদের তো নার্সিংহোম বা অন্য কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। একটাই কথা জানতে চাই, এই আন্দোলন আর কতদিন চলবে? আমাদের অবস্থা তো শোচনীয় হয়ে উঠছে।”

এমনটা নয় যে, রোগী বা তাঁর পরিজনেরা আর জি করে নির্যাতিতার বিচার চাইছেন না। সকলেই দ্রুত বিচার চাইছেন। একইসঙ্গে প্রতিবাদও চলুক। কিন্তু সবার একটাই বক্তব্য, “আমরা সবাই ওই জঘন্য ঘটনার দোষীদের চরম শাস্তি চাই। এ ঘটনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু ডাক্তারবাবুরা এভাবে দিনের পর দিন আন্দোলনে ব্যস্ত থাকলে তো মৃত্যুমিছিল শুরু হবে। এবার অন্তত সব কিছু স্বাভাবিক হওয়া দরকার।”


আরও পড়ুন: নজরে স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা, একগুচ্ছ নির্দেশিকা জারি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের
