Friday, November 7, 2025

ধর্ষণে কঠিন শাস্তির দাবি: প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিতীয় চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর, ব্যাখ্যা মহিলা কমিশনকে

Date:

রাজ্য সরকার মঙ্গলবারই বিধানসভায় ধর্ষণে ফাঁসির শাস্তির আইন আনার জন্য বিল পেশ করতে চলেছে। কেন্দ্রের মোদি সরকার যেন ঠিক সেভাবেই গোটা দেশের নারী নিরাপত্তায় কড়া শাস্তি, এমনকি ফাঁসির শাস্তির আইন আনা নিয়েও বিবেচনা করে, এমনটা দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু রাজ্যের পক্ষ থেকে পাঠানো প্রস্তাব ফিরেও দেখার প্রয়োজন বোধ করেনি অহংকারি মোদি সরকার। পাল্টা মহিলা কমিশনের পক্ষ থেকে রাজ্যে আদালতের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু বাংলার সরকার যে কোনওভাবেই ধর্ষণের মতো অপরাধকে নরম মনোভাব নিয়ে দেখতে রাজি নয়, প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিতীয় চিঠি পাঠিয়ে প্রমাণ করে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে মহিলা কমিশনকে আদালতের হিসাব জানিয়েও পাল্টা চ্যালেঞ্জ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

আর জি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে নারীর নিরাপত্তা নিয়ে যখন গোটা দেশ উত্তাল হয়েছে, তখন রাজ্যের তরফ থেকে ধর্ষকদের ফাঁসির শাস্তির দাবিতে কড়া অবস্থান নেওয়া হয়। বারবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি জানান, গোটা দেশের যে হারে নারীদের শ্লীলতাহানি থেকে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে চলেছে, তাতে একমাত্র আইনি পথে কঠিন শাস্তিই এই ধরনের উৎপীড়কদের মনে ভয় তৈরি করতে পারবে। যেখানে অভিষেক পরিসংখ্যান তুলে ধরে দাবি করেন দেশের প্রতিদিন ৯০ জন ধর্ষিতা ও ১০ দিনে ৯০০ মহিলা এই পাশবিক অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন। সেই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই অপরাধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আইন ও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে দ্রুত শুনানির দাবি তুলে ২২ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রধানমন্ত্রী নিজে তো দূরের কথা তাঁর দফতরও এই বিষয়ে কোনও আগ্রহ প্রকাশ করেনি দেশের নারী নিরাপত্তা শক্তিশালী করতে। কোনও উত্তর আসেনি প্রধানমন্ত্রীর তরফে। উল্টে কেন্দ্রের মহিলা ও শিশু অধিকার মন্ত্রী অন্নপূর্ণা দেবী বাংলার জন্য ১২৩টি ফাস্টট্র্যাক ও পকসো আদালত কেন্দ্রের তরফ থেকে দেওয়ার দাবি করেন। ২০২৩ সালের জুন মাসের হিসাব তুলে দাবি করা হয়, বাংলায় এই সব আদালতে বিচারের কাজ শুরুই হয়নি। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাফ হিসাব পেশ করেন – রাজ্য সরকার নিজেদের উদ্যোগে ১০টি পকসো আদালত চালু করেছে। সেই সঙ্গে ৮৮টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট ও ৬২টি ফাস্ট ট্র্যাক ও পকসো যৌথ আদালতও সচল রয়েছে বাংলায়।

সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, কলকাতা হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে ফাস্টট্র্যাক কোর্টগুলিতে মামলার গুরুত্ব অনুযায়ী স্থায়ী বিচারবিভাগীয় আধিকারিক নিয়োগ প্রয়োজন। আর তার জন্য কেন্দ্র সরকারেরই অনুমোদন প্রয়োজন। কেন্দ্র সরকারের অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলেই এই আদালতগুলি চালু করা শুরু হয়নি, সেকথাও স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

মহিলা ও শিশু অধিকার মন্ত্রীর জরুরি হেল্পলাইন নম্বর নিয়ে তোলা অভিযোগকে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন ১১২ ও ১০৯৮ নম্বর দুটি সন্তোষজনকভাবে চালু রয়েছে। সেই সঙ্গে ১০০ ডায়াল নম্বরও সচল থাকার তথ্য পেশ করেন তিনি। সেই সঙ্গে ধর্ষণের মতো অপরাধ বন্ধ করতে দেশে শক্ত আইন যে কতটা প্রয়োজন, তা আবারও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকার এই চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই মতো পদক্ষেপ নেওয়ায় শুরু হয়েছে। তবে এখানেই থেমে থাকবে না রাজ্যের শাসকদল। দিল্লিতেও এই দাবি নিয়ে আন্দোলন চালানোর বার্তা দিয়েছিলেন সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী আবারও কেন্দ্রের সরকারকে কঠিন আইনের বিষয়টি নিয়ে বিবেচনার আবেদন জানান।

Related articles

ব্রিটিশ-তোষণে লেখা ‘জন গণ মন’! বিজেপি সাংসদের অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

ব্রিটিশদের তোষণ করতেই নাকি লেখা হয়েছিল ‘জন গণ মন’। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই ন্যক্কারজনক মন্তব্য করে ফের...

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...
Exit mobile version