‘কমল’ শূন্য সাহিত্য মহল, থামলো বৃক্ষমানবের সবুজযাত্রা

হারিয়ে গেল অরণ্যের ঘ্রাণ, থেমে গেল সবুজ পাতার কলরব। ভালো পাহাড়ের আজ মন খারাপ। সাহিত্য ভান্ডার যে ‘কমল’হীন! আদ্যন্ত গাছ আর সবুজ প্রকৃতি ভালবাসা রঙিন-কথক কমল চক্রবর্তী (Kamal Chakraborty) প্রয়াত হলেন। ২১ আগস্ট বিকেল থেকেই সংজ্ঞাহীন, গত আটদিন কোমায় ছিলেন। ব্রেনডেথের সম্ভাবনা প্রবল হওয়ার কারণে অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি চিকিৎসকেরা। অবশেষে ৩০ আগষ্ট শেষ হল লড়াই। শোকস্তব্ধ বাংলা সাহিত্য মহল।

কবি ও কথাকার কমল চক্রবর্তী লৌহনগরী জামশেদপুরের মধ্যে যেন এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। আধুনিকতার বিপ্রতীপে একটা অন্য জগৎ তৈরি করেছিলেন তিনি। ‘কৌরব’ নাটক এবং ‘কৌরব’ পত্রিকার গণ্ডি ছাড়িয়ে বৃক্ষহীন প্রকৃতিকে সবুজের সমাহারে ভরিয়ে তুলেছিলেন সাহিত্যিক। শহুরে সভ্যতা থেকে দূরে সরে পাহাড় – পাখি আর ঝরনার কাছে খুঁজেছেন জীবনীশক্তির রসদ। গত শতকের সাতের দশকের দুরন্ত কবি ও কথাকার কমল চক্রবর্তী তাঁর ‘জল’, ‘চার নম্বর ফার্নেস চার্জড’ ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য প্রেমীদের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যাবেন। এক হাতে লিখছেন, অন্য হাতে ছড়িয়েছেন বীজ। স্মৃতি ও সভ্যতার চেনা ছকের বাইরে গিয়ে অচিরেই হয়ে উঠেছেন বৃক্ষমানব। ভালোপাহাড়ে দীর্ঘ সময় ধরে বৃক্ষরোপণ করেছেন কমল। অরণ্য – পাহাড় -পাখিদের গুঞ্জনের মাঝে আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় খুলেছিলেন স্কুল। বোহেমিয়ান জীবনের উত্তেজনা-যাপনের মাঝেই লৌকিক জীবনের সান্নিধ্যে তৈরি হওয়া কমল-কথার পরিসমাপ্তি। এবার হয়তো অন্যলোকে বৃক্ষ বন্দনা শুরু।


Previous articleবইয়ের মাঝেই প্রকৃত শান্তির বার্তা, শারদ বইপার্বণের উদ্বোধনে ব্রাত্য- সঞ্জীব
Next articleমালদহের নির্যাতিতাকে নিজের বাড়িতে রাখার বার্তা, পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বীরবাহার