‘এই কলকাতা আমার অচেনা’, প্রতিবাদী আন্দোলনে হেনস্থার শিকার ঋতুপর্ণা এখনও আতঙ্কে

কল্লোলিনি তিলোত্তমায় যাঁর ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা, এই শহরেই ‘তিলোত্তমা’র বিচারের দাবিতে ‘মেয়েদের রাত দখল ‘ আন্দোলনে সামিল হতে গিয়ে আন্দোলনকারীদের কাছে হেনস্থার শিকার হলেন টলিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত (Rituparna Sengupta)। বুধবার মধ্যরাতের ঘটনায় নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে সর্বত্র। তবু নাগরিক সমাজের একাংশ এখনো নীরব। সোশ্যাল মিডিয়ার (Social media) একাংশ এখনও অভিনেত্রীর সঙ্গে হওয়া ঘটনার সমর্থন করে চলেছে। এ কেমন কলকাতা (Kolkata)? নিজের চেনা শহর আজ হঠাৎ করেই অচেনা হয়ে গেছে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রীর কাছে।

আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College and Hospital)চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুর ২৬ দিন পরেও তদন্তের কুলকিনারা করে উঠতে পারিনি কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই (CBI)। সুবিচার চেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ের প্রতিবাদী জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেখানে উপস্থিত হয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। কথা বলতে চেয়েছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গে। কিন্তু নারী হেনস্থার বিরুদ্ধে বিচারের আন্দোলনে তাঁকেই যে এভাবেই অপমান করা হবে তা দুঃস্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি অভিনেত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর শঙ্খ বাজানোর ভিডিও ঘিরে যে ট্রোলিং শুরু হয়েছিল তার চরম রূপ দেখা গেল বুধবার মধ্যরাতে। এখনও সেই আতঙ্ক কাটেনি নায়িকার। ঋতুপর্ণা বলছেন, ‘বিচারের দাবিতে জমায়েতে যোগ দিয়ে মোমবাতি জ্বালাই। কিন্তু, কিছু ক্ষণের মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা।আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লাম।আমার উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন অনেকে। চার পাশ থেকে উলুধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ। এতে কিছু মনে করেছি, এমন নয়। কিন্তু তার পর গাড়িতে জুতো ছোড়া হল। তখন আমি দরজা খুলে বলি আপনারা এমন করবেন না। আপনাদের সঙ্গে কথা বলতেই এসেছি, বসতে এসেছি। কিন্তু কেউ কোনও কথাই শুনলেন না।’ ভিড়ের মধ্যে যে বর্বরতা অসভ্যতা চলল তাতে অযোগ্য নায়িকার প্রশ্ন, “আমার সমবেদনা জানানো কি অন্যায়?”

 

অভিনেত্রী মনে করেন, যাঁরা এটা করলেন তাঁদের মুখ্য উদ্দেশ্য আন্দোলন করা নয়। একজন তারকাকে হেনস্থা করা। তাঁর গাড়ি তুবড়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এতটাই অশান্ত হয়ে পড়ে যে একটা সময় প্রাণহানি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছিল নায়িকার মনে। তবু রাগ করছেন না ঋতুপর্ণা। বলছেন,” আসলে হয়তো এই মানসিকতা আমাদের বর্বরতার দিকে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছে।” ঘটনার নিন্দায় সরব টলিউডের একাংশ। এটা কাঙ্ক্ষিত ছিল না, এটা এতদিনের চেনা কলকাতা হতে পারে না। কিন্তু আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা কিংবা তথাকথিত নাগরিক সমাজের শিক্ষিত ব্যক্তিরা এই নিয়ে একটা শব্দও খরচ করলেন না।


Previous article“মেয়েদের বাঁচাতে না পারলে কন্যাশ্রী-বেঁটি বাঁচাও প্রকল্পের মানেই নেই!” বিস্ফোরক দেব
Next articleআসন্ন আইএসএল-এ নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে চায় মহামেডান, চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি সাদা-কালো কোচ