কাদের জন্য কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা! তালিকা বেরোতেই পর্দাফাঁস বিজেপি নেতাদের

পূর্ব মেদিনীপুর ও ভোটের আগে শিরোনামে আসা সন্দেশখালির বহু লোককে, অধিকাংশই বিজেপি নেতাকর্মী, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার

জনগণের করের টাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পাচ্ছিল কারা, নিরাপত্তা প্রত্যাহারের তালিকা বেরোতেই পর্দাফাঁস হল বিজেপির নেতা কর্মীদের। সেই সঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে মানুষের সমর্থন হারানো বিজেপি কীভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে একেবারে গ্রামাঞ্চল থেকে, তার আসল ছবিটাও বেরিয়ে পড়ল। ভোটে যখন এত সাজগোজ করেও মানুষের রায় বিজেপির বিপক্ষে গিয়েছে, তখন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়ারই সিদ্ধান্ত নিল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর ও সন্দেশখালি এলাকার বিজেপি নেতাকর্মীদের তালিকা প্রকাশ করে বিজেপির চক্রান্ত ফাঁস করলেন প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ।

গত ৩ সেপ্টেম্বর স্পেশাল সিকিউরিটি গ্রুপ, সিআইএসএফের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয় বাংলায় বেশ কিছু ব্যক্তিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। ২ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয় সিআইএসএফ-কে সেই ব্যক্তিদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার জন্য। সেই মতো ৩ সেপ্টেম্বর থেকে নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয় পূর্ব মেদিনীপুরের ২৪ জন ও উত্তর ২৪ পরগণার ১৩ জনের। রীতিমত তালিকা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রত্যাহার করা হয় এই ব্যক্তিদের।

সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই দেখা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গড়ের ২৪ বিজেপি নেতা কর্মী ‘উপভোগ’ করছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা। নির্বাচনে জনগণের রায়কে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পটাশপুর, নন্দীগ্রাম, খেজুরি, ভূপতিনগরের নেতাদের সুরক্ষিত করে রেখেছিল বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক্স ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাচ্ছিল এই নেতারা। অর্থাৎ প্রত্যেক নেতার সঙ্গে দুই সশস্ত্র জওয়ান। বিরোধী দলনেতার ‘সম্মান বাঁচাতে’ মাঠে নেমেছিলেন খোদ অমিত শাহ, বাহিনী প্রত্যাহারেই তা পরিষ্কার।

লোকসভা নির্বাচনে টাকা ছড়িয়ে, পরিবেশ উত্তপ্ত করে, গোটা দেশের নজর ঘুরিয়ে সন্দেশখালি জয়ের চেষ্টা করেছিল বিজেপি। বারবার সেই সব ভিডিও প্রকাশ্যে এসে পড়ার পরে কার্যত পর্দাফাঁস হয়ে গিয়েছিল বিজেপির মিথ্যাচারের। সিআইএসএফের নিরাপত্তার তালিকা প্রকাশ্যে আসার পরে দেখা যাচ্ছে যে ১৩ জনকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল তারা প্রায় সবাই ন্যাজাট ও সন্দেশখালি থানার বাসিন্দা। মূলত এই এলাকা থেকেই সন্দেশখালিতে বিষ ছড়ানোর কাজ করেছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই স্পষ্ট হিংসা ছড়াতে কীভাবে দিল্লি থেকে নিরাপত্তার মোড়কে রাখা হয়েছিল বিজেপি নেতা কর্মীদের।

সিআইএসএফের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কুণাল ঘোষের দাবি, “বিরোধী দলনেতার জেলা পূর্ব মেদিনীপুর ও ভোটের আগে শিরোনামে আসা সন্দেশখালির বহু লোককে, অধিকাংশই বিজেপি নেতাকর্মী, কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এখন কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের এক নির্দেশে এঁদের সবার নিরাপত্তা একসঙ্গে তুলে নেওয়া হল।”

Previous articleশীতলকুচির গণধর্ষণে দোষীদের ২৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড
Next articleকংগ্রেসে যোগ দিতেই বিনেশকে তোপ দাগলেন ব্রিজভূষণ