কর্মবিরতিতে জুনিয়র ডাক্তাররা, বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছে মানুষ! ক্ষোভ প্রকাশ দেশ বাঁচাও গণ মঞ্চের

প্রায় এক মাস হয়ে গেল আন্দোলনের নামে যেভাবে জুনিয়র ডাক্তাররা কর্মবিরতি পালন করছেন এবং নতুন নতুন দাবি পেশ করছেন এটা ব্ল্যাকমেলের সমান, সুপ্রিম কোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ সত্বেও তারা কোন কিছু কর্ণপাত করছেন না তার মানে এরা দেশের সংবিধান মানেন না। মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসা না পাওয়া কোন্নগরীর মৃত যুবক বিক্রম ভট্টাচার্য এর বাড়িতে এসে এইভাবেই ক্ষোভ উগরে দিলেন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চে প্রতিনিধিরা। এদিন বিক্রমের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তাদের মুখ থেকে শোনেন কিভাবে তরতাজা তাদের একমাত্র ছেলেটি চিকিৎসা পেয়ে তিল তিল করে মারা গেছে আন্দোলনের নামে কিভাবে তারা আরজিকরের এ বিল্ডিং থেকে ও বিল্ডিং দৌড়ে বেরিয়েছেন হাতে-পায়ে ধরেছেন চিকিৎসকদের তার ছেলেটাকে বাঁচাবার জন্য তার করুণ কাহিনী।

প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এদিন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন করেন আজকে তিলোত্তমার বিচার চেয়ে আপনারা আন্দোলন করছেন, কিন্তু আপনাদের কর্ম বিরতির ফলে যে ২৩ জন মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে মৃত্যু বরণ করল, তার বিচার কে করবে ? সরকারি হসপিটালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ধ্বংসের পথে এর বিচার চেয়ে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন ,তাদেরও তো বিচার চাইবার অধিকার আছে, তারা যদি আজকে পথে নামে তখন কি হবে? এর সঙ্গে সঙ্গে প্রতিনিধি দলের সদস্য রন্তিদেব সেনগুপ্ত বলেন এ রাজ্যের গরীব মানুষরা সরকারি হসপিটাল পরিষেবা পান, তাদের বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালে যাবার ক্ষমতা নেই , মুমূর্ষ মানুষেরা নিরুপায় হয়ে ঘটিবাটি বিক্রি করে বেসরকারি হসপিটালে যাচ্ছে তাদের প্রিয়জনের চিকিৎসার জন্য।

আর এর পেছনে একটা চক্র যে কাজ করছেনা তাই বা কে বলতে পারে? যতদিন পারো ধর্মঘট চালিয়ে যাও বাধ্য হয়ে এই সমস্ত বেসরকারি হসপিটালে গরিব মানুষরা আসবে। এছাড়াও প্রশ্ন রয়েছে ধর্মঘটরত জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন চলাকালীন তারা কি মাইনে নিচ্ছেননা, যদি মাইনে নেন তাহলে সেই টাকাটা কারা দিচ্ছেন? এই সমস্ত সরকারি হসপিটালের সমস্ত পরিষেবা মেটাবার টাকা আমাদের মতন সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা থেকে যায়,এবার আপনারা চিকিৎসা পরিষেবা দিতে ফিরুন। প্রতিনিধি দলের সদস্য বর্ণালী মুখার্জী বলেন তিলোত্তমার নিশংস ঘটনার আমরাও প্রতিবাদ করেছি আমরাও আন্দোলন করেছি, কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা প্রতিদিন আন্দোলনের নামে নিত্যনতুন দাবি-দাওয়া নিয়ে কর্ম বিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন তা এক প্রকার পরিষ্কার রাজনীতি। সাংবাদিক সুমন ভট্টাচার্য বলেন জুনিয়র ডাক্তার এত দিন ধরে স্বাস্থ্যপরিসেবা বন্ধ রেখেছেন, গরিবরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না অথচ জুনিয়র ডাক্তাররা বলছেন যে স্বাস্থ্য পরিসেবা ঠিকঠাক চলছে তাহলে ধরে নিতে হবে যে সরকারি হাসপাতালে হাজার হাজার জুনিয়ার ডাক্তাররা আছেন তারা সংখ্যার দিক থেকে অতিরিক্ত? এরপর প্রতিনিধি দল রিসড়ায় যান অভিযোগ সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে গত পাঁচ তারিখে পিজি হাসপাতালে রিষড়ার বাগ পাড়ার রাজিব দেব নামে ৩২ বছরের একটি যুবকের মৃত্যু হয়েছে সেখানে গিয়ে তারা রাজিবের মা-বাবার সঙ্গে কথা বলেন এবং প্রকৃত ঘটনাটা শোনেন। এদিনের প্রতিনিধি দলে ছিলেন দোলা সেন, বিশ্বনাথ চক্রবর্তী, রন্ত্রী দেব সেনগুপ্ত, বর্ণালী মুখার্জী, সুমন ভট্টাচার্য সুশান রায়, অভিনেতা বিভান ঘোষ, গায়ক নাজমুল হক, অমিত কালী সহ একাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

আরও পড়ুন- আলোচনা চেয়ে নবান্নে অপেক্ষায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, উপেক্ষা করে কর্মবিরতিতেই অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা