বিচারাধীন বিষয়ে লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়: ২ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষার পরে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

২ ঘণ্টা ১০ মিনিট অপেক্ষা করার পরে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন বিষয় নিয়ে লাইভ স্ট্রিমিং হতে পারে না। তিনবারের চিঠির পরে আর জি কর ইস্যুতে বৈঠক করতে বৃহস্পতিবার নবান্নের সামনে গিয়েও অনমনীয় জুনিয়র ডাক্তাররা। লাইভ স্ট্রিমিংয়ের বায়না ধরে বাইরেই থাকলেন আন্দোলনকারীরা। নবান্ন সভাঘরে ভিতরে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও স্বরাষ্ট্রসচিব নন্দিনী চক্রবর্তীকে নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থা, ডিজি রাজীব কুমার-সহ সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা দফায় দফায় জুনিয়র চিকিৎসকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। ফলে ভেস্তে গেল বৈঠক। মমতা বলেন, আজ আমরা ২ঘণ্টা ১০মিনিট অপেক্ষা করেছি। ৩ দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠকের জন্য সময় দিচ্ছি। মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, ওরা ছোট। তাই এর জন্য ওঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেব না। শুধু অনুরোধ বাংলার মানুষের স্বার্থে, রোগীদের স্বার্থে কাজে ফিরুন।

দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা ডাক্তারদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে আলোচনায় রাজি ছিলাম। ৩৪ জন ডাক্তার এসেছিলেন, সবাইকে ঢুকতে অনুমতি দিয়েছিলাম। তার পরও তাঁরা লাইভ স্ট্রিমিং দাবিতে অনড়। বিচারাধীন মামলার কারণেই লাইভ সম্প্রচারে সমস্যা আছে আমরা বলেছিলাম, খোলা মনে আলোচনায় আসুন“। মমতা বলেন, সুপ্রিম কোর্ট লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারে, সরকার পারে না।

এদিন ১৫জনের কথা বলেও তাঁদের ৩০ জন প্রতিনিধিকেই রাজ্য সরকার বৈঠকে থাকার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবি না মানায় বৈঠকে ঢোকেননি আন্দোলনকারীরা। এদিন ৫টায় বৈঠক হওয়ার কথা থাকায়, দেড় ঘণ্টা ধরে নবান্ন সভাঘরে অপেক্ষা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যসচিব মনোজ পন্থা, ডিজি রাজীব কুমার-সহ সরকারের শীর্ষ আধিকারিকরা দফায় দফায় জুনিয়র চিকিৎসকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু জুনিয়র ডাক্তাররা জানিয়ে দেন, লাইভ স্ট্রিমিং না হলে বৈঠকে যাবেন না তাঁরা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৩ দিন অপেক্ষা করলাম। ওরা এলেন না। আজও ২ ঘণ্টার বেশি অপেক্ষা করেছি। ওরা এসে সভাঘরে ঢুকলেনই না। কেন ঢুকলেন না জানি না। তাও আমরা কোনও ব্যবস্থা নেব না। ছোট ভাইবোনেদের ক্ষমা করে দেব। ওরা ছোট, বড়দের উচিত ছোটদের ক্ষমা করে দেওয়া। আমরাও ক্ষমা করে দেব।”

মমতার কথায়, “শুভবুদ্ধির উদয় হোক। জেদাজেদি করবেন না। এত মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যাচ্ছেন। আমার হৃদয় কাঁদছে। ২৭ জন মারা গিয়েছেন। ৭ লক্ষ মানুষ চিকিৎসা পাননি। ডাক্তারেরা ভগবান। কিন্তু আমার হৃদয় কাঁদছে।”

মমতা বলেন, ”আমি তিন বার চেষ্টা করলাম। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে। ইতিমধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৩২ দিন হয়ে গেল। অনেকেই কাজ করছেন না। সাত লক্ষ মানুষ পরিষেবা পাননি। যে কোনও মৃত্যু মর্মান্তিক। কিন্তু এত মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছেন না। এর থেকে লজ্জার কী হতে পারে?” মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানান, এখনও তিনি কোনও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন না।

Previous articleমহিলা চিকিৎসককে আরজি কর করে দেওয়ার হুমকি, ধৃত অভিযুক্ত
Next article‘সময় শেষ’, রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা জহরের