জুনিয়র ডাক্তারদের ‘অরাজনৈতিক’ ধর্নায় রাম-বাম মদতের ছবি, কটাক্ষ কুণাল-সায়নদেবের

আর জি কর কাণ্ডের (RG Kar Medical College and Hospital) বিচার চেয়ে কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্য সরকার (Government of West Bengal) বারবার আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জট কাটছে না। কেন? আসলে ‘অরাজনৈতিক’ বলে দাবি করা জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের নেপথ্যে রাম-বাম মদত। তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) এই অভিযোগ যতবারই করেছে ততবারই সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ রে রে করে তেড়ে এসেছে। কিন্তু যেভাবে বামনেত্রী দীপ্সিতা ধর (Deepsita Dhar) স্বাস্থ্যভবনের সামনে বিক্ষোভরত চিকিৎসকদের আন্দোলনকে হাওয়া দিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যে চেয়ে পোস্ট করেছেন, কিংবা লোকসভা ভোটে তাঁর হয়ে প্রচার করতে দেখা গেছে নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Narayan Banerjee) মতো সিনিয়র ডাক্তারবাবুকে, তাতে তো বিধানসভায় শূন্য হয়ে যাওয়া রামেদের মদত নিয়ে আর কোন প্রশ্নই থাকেই না।আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখ জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর বাম সমর্থনের নানা ছবি তো সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল। পিছিয়ে নেই রামেরাও। শর্বরী, পামেলার পর এবার চিকিৎসকদের আন্দোলন মঞ্চে বিজেপির যুব মোর্চার উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি সুবোধ দাসের (Subodh Das)। রসদসহ সদলবলে তাঁর উপস্থিতির ছবি পোস্ট করে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।

দিন দিন ধরে আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে অপেক্ষা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নের (Nabanna ) দোরগোড়ায় পৌঁছেও আলোচনায় গেলেন না বিক্ষোভরত জুনিয়র ডাক্তাররা। উল্টে প্রশাসনিক জটিলতার উপর দায় চাপিয়ে তাঁরা ফের স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না মঞ্চে উপস্থিত। মুখে অরাজনৈতিক আন্দোলনের বুলি, অথচ বিক্ষোভের শামিল বাম বিজেপি নেতৃত্বরা। খাবার আসছে যাদবপুরের ক্যান্টিন থেকে। সমাজমাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে উস্কানি দেওয়ার কাজ চলছে। জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থনকারী সিনিয়র চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখা যাচ্ছে বাম নেত্রী দীপ্সিতার প্রচারমঞ্চে। ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদিকা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও এই ডাক্তারবাবুর ছবি বেশ ভাইরাল। অন্যদিকে মাদক কান্ডে অভিযুক্ত বিজেপি নেত্রী পামেলা গোস্বামী ডাক্তারদের পাশে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন, পদ্মনীতির শর্বরী মুখোপাধ্যায় হাতপাখা নিয়ে চিকিৎসকদের বিক্ষোভের পালে হাওয়া দিচ্ছেন। এই আন্দোলনকে অরাজনৈতিক বলা যায় কি? ছবি পোস্ট করে ঠিক এই প্রশ্নই তুলেছেন তৃণমূল নেতা (TMC ) সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়। বর্ষীয়ান মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ছেলে সমাজমাধ্যমে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জুনিয়র চিকিৎসক অনিকেত মাহাতোর (Aniket Mahato) ছবি পোস্ট করেন যাতে তাঁদের বামপ্রীতি এবং প্রত্যক্ষ সমর্থন একেবারে স্পষ্ট।

অন্যদিকে রাজ্যসভার প্রাক্তন সংসদ তথা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় বিজেপির যুব মোর্চার উত্তর কলকাতা জেলা সভাপতি সুবোধ দাসের রসদ সরবরাহের ছবি পোস্ট করে আন্দোলনের অরাজনৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। যেভাবে প্রশাসনের বিশ্ব মহল থেকে শুরু করে স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার সমস্যা মেটানোর জন্য সদিচ্ছা দেখাচ্ছেন, সেখানে নানা বাহানায় আন্দোলনকারীদের অসহযোগিতা কি প্রমাণ করে না যে আসল উদ্দেশ্য, বিচার নয় বরং চেয়ার দখল? এ প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষের মনেও।


Previous articleসন্দীপের শ্যালিকার বাড়ি থেকে উদ্ধার মেডিক্যাল পরীক্ষার উত্তরপত্র!
Next article‘খাঁচাবন্দি তোতাপাখি’! ১১ বছর পরে ফের শীর্ষ আদালতে ভর্ৎসিত CBI