নেতা গ্রেফতার হতেই ‘ষড়যন্ত্র’ তত্ত্ব! আন্দোলন হাইজ্যাকের পরিকল্পনা বামেদের

শনিবারই রাজ্যে থানা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে বামেরা। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিকেও যে তাঁরা হাইজ্যাক করতে চলেছেন

স্বাস্থ্যভবনের বাইরে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান মঞ্চে হামলার ছক কষেছিলেন, লালবাজারের বামেদের অবস্থান মঞ্চ থেকেই গ্রেফতার হলেন ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্ত। শুক্রবার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ সেই ভাইরাল অডিও (অডিও-র সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি) তুলে ধরার পরেই তৎপর হয় পুলিশ। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিধাননগরের কমিশনারেটের তরফে দাবি করা হয় ভাইরাল অডিও সম্পূর্ণভাবে সত্যি। ফলে কলতান দাশগুপ্তর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার দিকে এগোতেই এবার ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাঁড়া করা শুরু করছে বামেরা। সেই সঙ্গে শনিবারই থানা ঘেরাওয়ের পরিকল্পনা ঘোষণা করে ডিওয়াইএফআই।

শহরে লালবাজারের বাইরে অবস্থানে সিপিআইএম কর্মীরা। অন্যদিকে বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর অবস্থান চলছে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে। আর জি করের নির্যাতিতার দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে যেখানে সরব হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী, সেখানে বারবার আন্দোলনের নামে অরাজকতা তৈরির চেষ্টায় রাজনীতিকে টেনে এনেছে বামেরা। সেখানেই এবার আন্দোলনকারীদের উপর হামলার মতো চক্রান্ত করতেও পিছপা হননি বামযুব নেতা। আর পুলিশের জালে সেই চক্রান্ত ধরা পড়তেই পিঠ বাঁচাতে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব বাম যুবনেত্রী মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায়ের।

মীনাক্ষি এদিন দাবি করেন, “আন্দোলনকে ভাঙার জন্যই এইসব পরিকল্পনা মাফিক ষড়যন্ত্র করে করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্র যারা করছেন তাদের স্পষ্ট বলছি, সমস্ত বামকর্মীদের জেলে ভরে দিলেও এই লড়াই থামবে না।” কার্যত চিকিৎসকদের আন্দোলন হাইজ্যাক করার ভঙ্গিতে হুঁশিয়ারি দেন বাম যুবনেত্রী। আর জি করের ঘটনা নিয়ে আন্দোলনকে রাজনীতির ছাঁচে ফেলার উদ্যোগ নিয়ে শনিবারের রাত দখলের ডাক দেওয়া চিকিৎসকদের আন্দোলনে লোক ভরাতে নিজেদের দলের কর্মীদের ডাক দেন মীনাক্ষি।

তবে বামেদের হাতে পড়ে চিকিৎসকদের আন্দোলন যে এবার বাম আন্দোলন হয়ে যাওয়ার দিকে, তাও স্পষ্ট মীনাক্ষির কথাতে। বামনেত্রী বলেন, “কলতানকে পরিকল্পনামাফিক গ্রেফতার করা হয়েছে। বিচারের দাবির পাশাপাশি গ্রেফতারির প্রতিবাদে লড়াই চলবে।” শনিবারই রাজ্যে থানা ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে বামেরা। সেই সঙ্গে চিকিৎসকদের কলকাতা পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবিকেও যে তাঁরা হাইজ্যাক করতে চলেছেন, সে কথাও জানান। তিনি দাবি করেন, “বিনিত গোয়েলের অপসারণের দাবি থেকে আমাদের সরিয়ে আনা যাবে না।”

শনিবার ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তকে সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। মারাত্মক এই হামলার আশঙ্কা নিয়ে তদন্ত করে কার্যত এর পিছনে মূল মাথাদের ধরার দাবি তোলে তৃণমূল। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষের দাবি, “যদি সত্যি এটা কলতানের গলা হয়, তাহলে কলতান সম্পর্কে আমি যা শুনি, তাতে আসল মাথাদের ধরতে হবে। কলতান একা এত বড় প্লট করছে এটা হতে পারে না। যারা কলতান বা সঞ্জীবদের দিয়ে এই কাজ করাচ্ছে তাদের ধরতে হবে। কে সাহেব, কে দাদু, কলতানকে এই ঘটনা ঘটাতে কারা নির্দেশ, প্ররোচনা দিচ্ছে এই ব্যাপারগুলো এবার সামনে আসবে।”

Previous articleপথের নামার রাজনীতিতে চ্যালেঞ্জ? ‘দিদি’কেই ফর্মে ফেরালেন আজকের মুখ্যমন্ত্রী
Next articleকলতান গ্রেফতারিতে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বামেদের, বিরোধীদের অডিও মানেই চক্রান্ত? প্রশ্ন কুণালের