Thursday, August 21, 2025

সেনাকর্তার বান্ধবীর পোশাক খুলে মারধর পুলিশের! ওড়িশায় প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি

Date:

Share post:

বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে বারবার অসহিষ্ণুতার প্রমাণ রেখেছে ওড়িশা (Odisha)। এবার মহিলাকে থানার ভিতরে মারধরের পাশাপাশি পোশাক খুলে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠে এল। ঘটনাচক্রে অভিযোগকারিনী ভারতীয় সেনার (Indian Army) ক্যাপ্টেন পদাধিকারী অধিকারিকের বান্ধবী। সেই সেনা ক্যাপ্টেনকেও বেআইনিভাবে জেলে বন্দি করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার পরে মোহন মাঝি প্রশাসন পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও এই ঘটনায় প্রবল ক্ষোভে ফেটে পড়েছে ভারতীয় সেনা আধিকারিকরা। ওড়িশা হাইকোর্টের (Odisha High Court) প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন তাঁরা।

কিছু যুবকদের আশালীন আচরণ ও হেনস্থার শিকার হয় ভারতীয় সেনার ২২ শিখ রেজিমেন্টের এক ক্যাপ্টেন ও তাঁর বান্ধবী। ভুবনেশ্বরের কাছে এই ঘটনার পরেই স্থানীয় ভরতপুর থানায় (Bharatpur police station) অভিযোগ জানাতে যান তাঁরা। সেখানে ওই ক্যাপ্টেনকে লকআপে ঢুকিয়ে আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেনা আধিকারিককে জেলে ভরা আইনত অপরাধ বলে প্রতিবাদ করতেই সেই বান্ধবীর উপর চড়াও হয় দুই মহিলা পুলিশ কর্মী। তাঁকে একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁরই জ্যাকেট দিয়ে তাঁর হাত বাঁধা হয়। মহিলা পুলিশকর্মীর থেকে পুরুষ পুলিশ কর্মীরাও ওই অবস্থায় তাঁকে মারধর করে।

এরপরই ঘটে মারাত্মক ঘটনা। প্রবল যন্ত্রণায় চিৎকার করতে থাকেন মহিলা। সেই সময় এক পুলিশ আধিকারিক ঘরে ঢুকে প্রথমে মহিলার প্যান্ট খুলে দেন। তারপর নিজের প্যান্ট খুলে যৌনাঙ্গ বের করে অশালীন ইঙ্গিত করতে থাকেন। পরে থানা থেকে মুক্তি পাওয়ার পরে মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। তাঁর চোয়ালের হাড় সরে যায় মারধরের ফলে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গোটা ঘটনা জানিয়ে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন সেনা ক্যাপ্টেন ও তাঁর বান্ধবী। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সরব হয় বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা। পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি (Mohan Manjhi)।

ঘটনার পরপরই ওড়িশা পুলিশ দাবি করে মহিলা মদ্যপ অবস্থায় থানায় ঢুকে ভাঙচুর করেন। সঙ্গে তাঁরা পুরুষ বন্ধুও ছিলেন। তাঁদের গাড়ি থেকে মদের বোতল উদ্ধার হয়েছে। যদিও পরে চাপে পড়ে মোহন মাঝি সরকার এক পুলিশ ইন্সপেক্টর, এক পুরুষ কনস্টেবল, এক মহিলা সাব-ইন্সপেক্টর ও দুই মহিলা সাব-ইন্সপেক্টরকে সাসপেন্ড করে।

তবে প্রশাসনিক পদক্ষেপে কোনও ভরসা নেই সেনাবাহিনীর। তাঁরা চিঠি লিখেছেন ওড়িশা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি (Chief Justice) চক্রধারি চরণ সিংকে। তাঁরা বিচার বিভাগীয় হেফাজতে গোটা বিষয়টির তদন্ত চেয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন অভিযোগকারিনী নিজেও একজন অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ারের কন্যা। ঘটনার তদন্ত কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সেনার পক্ষ থেকে দাবি করা হয় বিজেপি শাসিত ওড়িশায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ভেঙে ভরতপুর থানায় (Bharatpur police station) কোনও সিসিটিভিও (CCTV) বসানো নেই।

spot_img

Related articles

যোগীরাজ্যের পাঠ্যপুস্তকে বাদ কেন রবীন্দ্রনাথকে? সাংসদ ঋতব্রতর প্রশ্নে অস্বস্তিতে কেন্দ্র

উত্তরপ্রদেশের দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে কি বাদ দেওয়া হয়েছে? তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নে স্পষ্টতই...

প্রয়াত সিপিএম নেতা-প্রাক্তন মন্ত্রী দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া

প্রয়াত সিপিএমের বর্ষীয়ান নেতা দীনেশচন্দ্র ডাকুয়া। বুধবার এনআরএস হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।...

উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে ডাক মেলেনি! শীর্ষ আদালতে শান্তা দত্ত 

স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ইন্টারভিউ পর্বে ডাক পাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত। যোগ্য হয়েও তাঁকে সুযোগ দেওয়া...

১৫ দিনেই রেকর্ড সাফল্য! রাজ্যে সাড়া ফেলল ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি

মাত্র পনেরো দিনেই নজির গড়ল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন কর্মসূচি, ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’। রাজ্যের মানুষের হাতে উন্নয়নের...