ওষুধের নামে ট্যালকম পাউডার! উত্তরপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্রে হাওলায় জাল ট্যাবলেট

হাওলার (hawala channel) মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা এই জাল ওষুধের চক্রীরা আদান প্রদান করেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে সেই টাকা গিয়েছে

ট্যাবলেটের মূল উপকরণ ট্যালকম পাউডার (talcum powder) আর স্টার্চ (starch)। সরকারি হাসপাতালে সেই ওষুধই পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। আর মুনাফার কোটি কোটি টাকা হাওলার মাধ্যমে সাবাড় করছে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। দেশের মানুষের জীবন নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলার শুরুটা যোগীরাজ্যের হরিদ্বারে (Haridwar)। আর শেষ অর্থাৎ সরবরাহ হচ্ছিল বিজেপির সহযোগী রাজ্য মহারাষ্ট্রে (Maharashtra)। জাল ওযুধের এই রমরমা উঠে এসেছে জাল ওষুধ সরবরাহের ফেব্রুয়ারির একটি মামলার ১,২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিটে। চাঞ্চল্যকরভাবে শুধুমাত্র মহারাষ্ট্র নয়, এই ওষুধ বিষিয়েছে ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডের মানুষকেও।

২০ সেপ্টেম্বর মহারাষ্ট্রের হাসপাতালে জাল ওষুধ (fake drug) সরবরাহের মামলায় ১,২০০ পৃষ্ঠার চার্জশিট প্রকাশ করা হয়েছে। সেই অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, হরিদ্বারের এক পশু রোগের ওষুধ (veterinary medicine) তৈরির পরীক্ষাগারে তৈরি করা হয়েছে নকল অ্যান্টিবায়োটিকগুলি (antibiotic)। মহারাষ্ট্রের কমলেশ্বরে প্রথম জাল ওষুধের অভিযোগ উঠে আসে। তার প্রেক্ষিতে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) তদন্তে নামে। তদন্তে ক্রমশ চাঞ্চল্যকর ও মারাত্মক সব সত্যি সামনে আসতে থাকে।

নাগপুরে (Nagpur) সরকারি হাসপাতালে ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকের স্টার্চের মধ্যে পাওয়া গেল ট্যালকাম পাউডারের নমুনা। এই চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরে নকল ওষুধের টেন্ডারে অংশ নেওয়া হেমন্ত মুখ্য নামে এক ব্যক্তিকে প্রধান অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত কর হয়েছে চার্জশিটে (chargesheet)। এছাড়াও মিহির ত্রিবেদী এবং বিজয় চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। মহারাষ্ট্র, ছত্তিশগড়, উত্তরপ্রদেশ এবং ঝাড়খণ্ডের হাসপাতাল-সহ ভারতজুড়ে এই নকল ওষুধ সরবরাহ করা হয়েছিল।

২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রিশন (FDA) এই চক্রের কথা ফাঁস করে। ইন্দিরা গান্ধী সরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নাগপুর সিভিল সার্জনের অধীনে ওষুধের দোকান থেকে প্রায় ২১,৬০০ সিপ্রোফ্লক্সাসিন ৫০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট (tablet) বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। এরপর সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় সরকারি পরীক্ষাগারে। সেখানেই এই তথ্য সামনে আসে। সেই সঙ্গে ফাঁস হয় আরেক বিরাট হাওলা কেলেঙ্কারি। হাওলার (hawala channel) মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা এই জাল ওষুধের চক্রীরা আদান প্রদান করেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে উত্তরপ্রদেশের সাহারানপুরে সেই টাকা গিয়েছে। যা জাল ওষুধের কারবারিদের বিজেপি রাজ্যের সঙ্গে যোগকে আরও প্রমাণ করেছে।