হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। তারপরেই মহালয়া। বাঙালির উৎসবের ঢাকে কাঠি। আর জি করের নৃশংস ঘটনার প্রেক্ষিতে সবারই মন ভারি। কিন্তু তারপরেও উমার আগমনের বার্তা রাজ্যজুড়ে। বছরে একবারই এত বড় উৎসবে প্রস্তুত নিচ্ছেন অনেকেই। বিচারের দাবির পাশাপাশি চলছে দুর্গাপুজোর প্রস্তুতিও। কিন্তু আরজিকর কাণ্ডকে হাতিয়ার করে একদল ফেসবুকীয় কমরেড ঘোষণা করেছিলেন, “উৎসবে ফিরছি না”। মহালয়ার আগের শেষ রবিবার শপিংমলে তাঁদেরই একজনকে দেখা গেল ছোট্ট মেয়ের হাত ধরে পুজোর কেনাকাটা করতে। যাদবপুরের সেই সিপিআইএমের যুবনেতা শতরূপ ঘোষের ছবি পোস্ট করে ফেসবুকে লেখা হল,

“উৎসবে ফিরছি না,
কিন্তু উৎসবের শপিংয়ে আছি।”

তিলোত্তমার ঘটনার তীব্র নিন্দা হয়েছে সর্বস্তরে। কিন্তু তার জন্যে দুর্গাপুজোকে বানচাল করার অর্থ একটা অন্যায়ের প্রতিবাদে আরেকটা অন্যায় করা। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে সাধারণ খেটেখাওয়া মানুষের রুটি-রুজি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও বাংলায় দুর্গোৎসব হয়। বরং সেই উৎসবকেই আন্দোলনের মঞ্চ করা হয়। আর অভয়ার কাণ্ডের জেরে “উৎসবে থাকছি না” বলে সংবাদ মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় শিরা ফুলিয়ে অনেক বক্তব্য দিয়েছিলেন এই শতরূপ ঘোষের মতো বাম নেতারা। অথচ এর আগে দেখা গিয়েছে সিপিএমের মুখপত্র ‘গণশক্তি’-ও শনিবার প্রথম পাতায় জ্যাাকেট করে জুতোর বিজ্ঞাপন ছেপেছে, যার ট্যাগ লাইন- ‘দুর্গাপুজো উদ্যাপন করুন গৌরবের সাথে’। পুজোর ভিড়কে কাজে লাগিয়ে নিজেদের বই বিক্রির জন্য পুজো প্যান্ডেলের পাশেই বইয়ের স্টল করে বামেরা। আর এবার পুজোর শপিংয়ে মেতে উঠলেন শতরূপ।

পুজোয় অংশগ্রহণ করা মানে তিলোত্তমার দ্রুত বিচার বা নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদ থেকে সরে আসা নয়- এই কথাটাই অধিকাংশ মানুষ বলছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পুজো বানচাল করতে মহালয়ার দিন ভোরে মিছিল বা মহাষ্টমীতে রাত দখল কর্মসূচি রেখেছে কমরেডরা। অথচ নিজেরা মেতেছে পুজোর শপিংয়ে এই দ্বিচারিতার কী জবাব দেবেন তাঁরা? ফেসবুকে এই ছবি পোস্ট করা মাত্রই কমেন্টে নিন্দার ঝড়।

আরও পড়ুন- ‘লাইফ সাপোর্ট নিয়ে নয়া নির্দেশিকা কেন্দ্রের, বির্তক চিকিৎসক মহলে
