ইজরায়েল গতকাল বৃহস্পতিবার লেবাননের দক্ষিণ বেইরুটে টানা ১১টি বিমান হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহ সূত্রে জানা গিযেছে, ইজরায়েল গত সপ্তাহে লেবাননে স্থল অভিযান শুরু করে। এর পর থেকে এখনও পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলেও দাবি করা হয়েছে। দক্ষিণ বেইরুট হিজবুল্লাহর শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত।লেবাননের রাজধানী বেইরুট ও দূরবর্তী এলাকায় অবস্থানরত এএফপির প্রতিনিধিরা বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজ শুনতে পান। এসব শব্দ আসছিল বেইরুটের দক্ষিণ উপকণ্ঠ থেকে। ইজরায়েলের সামরিক বাহিনী হাদাথ অঞ্চলের বাসিন্দাদের এলাকা খালি করার নির্দেশ দেওয়ার পর এই হামলার ঘটনা ঘটল।
হিজবুল্লাহ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, দক্ষিণাঞ্চলের উপকণ্ঠে ১১ বার ধারাবাহিকভাবে বিমান হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল।লেবাননের জাতীয় সংবাদ সংস্থা (এনএনএ) বলেছে, এখনও পর্যন্ত টানা ১০টির বেশি হামলার তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। লেবাননে ইজরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর এটি অন্যতম শক্তিশালী অভিযান। বেইরুটের বাইরে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতেও এই হামলার প্রভাব পড়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ইজরায়েলি সামরিক বাহিনীর আরবি ভাষার মুখপাত্র আভিচায় আদরায়ি দক্ষিণ বেইরুটের বুর্জ এল-বারাজনেহ এলাকার বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়ার জন্য একটি জরুরি সতর্কতা জারি করেন। পরে ওই মুখপাত্র বেইরুটের দক্ষিণে হাদাথ এলাকার জন্যও একটি উচ্ছেদের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন।সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে আভিচায় আদরায়ি বলেন, আপনারা হিজবুল্লাহর ঘাঁটি ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট এলাকার কাছে অবস্থান করছেন। আর আইডিএফ আগামিদিনে তাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে।
হিজবুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে বেইরুট বিমানবন্দরের পাশে একটি ওয়্যারহাউস লক্ষ্য করে আরেকটি হামলা চালানো হয়। তবে ওয়্যারহাউসটিতে কী ছিল, তা জানা যায়নি। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, এর আগে হিজবুল্লাহর জনসংযোগ দফতরের ভবন লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছিল। যদিও ভবনটি থেকে সব মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।প্রায় এক বছর ধরে লেবানন ও ইজরায়েলের মধ্যকার সীমান্তে হিজবুল্লাহ ও ইজরায়েলি সেনাদের মধ্যে লড়াই চলছিল। চলতি সপ্তাহে দেশটিতে স্থল অভিযান শুরু করে ইজরায়েল। এর ফলে গাজা থেকে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে লেবাননেও। এই সময়ে লেবাননে ইজরায়েলি হামলায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন হাজারো মানুষ।গত সপ্তাহে দক্ষিণ বেইরুটে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইজরায়েল। এর আগে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাটির বাসিন্দারা ইজরায়েলি বোমা হামলার কারণে পালিয়ে যান।