Tuesday, August 12, 2025

‘অপরাধী’ বিষ্ণোই প্রশ্নে কানাডা সংঘাত: গুজরাটের গোকুলে বাড়ার অভিযোগ সাকেতের

Date:

এক অপরাধীর প্রকাশ্য হুঁশিয়ারি দিয়ে খুন জনপ্রিয় রাজনীতিক, সমাজকর্মীকে। এবার সেই লরেন্স বিষ্ণোই নিয়ে এবার আন্তর্জাতিক সম্পর্কে প্রশ্নের মুখে মোদি সরকার। কার্যত কানাডা থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হল ভারতের হাইকমিশনার (Indian High Commissioner) সহ ছয় কূটনীতিককে। পাল্টা কানাডার ছয় কূটনীতিককে বিতাড়ন করল ভারত সরকার। কিন্তু তাতে দুই দেশের সম্পর্ক যে আরও তলানিতে গিয়ে ঠেকছে তা বলাই বাহুল্য। তবে যে লরেন্স বিষ্ণোইকে (Lawrence Bishnoi) নিয়ে আতঙ্কে দেশের বাণিজ্য নগরী এমনকি দ্বন্দ্বে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশ, সেই বিষ্ণোইকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ অমিত শাহ (Amit Shah) ও অজিত ডোভালের (Ajit Doval) বিরুদ্ধে তুললেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখলে (Saket Gokhale)। গুজরাটের জেলে বন্দি বিষ্ণোইকে নিরাপত্তা কারা দিচ্ছেন, তা স্পষ্ট করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ।

খালিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের খুনের পরেই কানাডার (Canada) সঙ্গে সংঘাতে শুরু ভারতের। বারবার সেই খুনে ভারতকে দায়ী করা হলেও ভারতের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো (Justin Trudeau) দাবি করেন, নিজ্জর খুনের অভিযুক্ত লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্যরা ভারতের মদতে কানাডার মাটিতে খুন করেছিল। সেই তথ্য প্রমাণ রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (Royal Canadian Mounted Police) হাতে এসেছে। সেই প্রমাণ তুলে ধরতেই সংঘাতে ভারতীয় হাইকমিশনার। সেই অভিযোগে হাইকমিশনার সঞ্জয় ভর্মা (Sanjay Verma) সহ ছয় জনকে বিতাড়নের সিদ্ধান্ত নেন ট্রুডো সরকার।

কানাডার এক শ্রেণির ভারতীয় যদিও এই পদক্ষেপকে নির্বাচনের আগে ট্রুডোর ভোট ব্যাঙ্ক রাজনীতি (vote bank politics) বলে দাবি করেছে। তাঁদের দাবি, খালিস্তানিদের একটা বড় ভোট ব্যাঙ্ক ট্রুডোর পক্ষে রয়েছে। ভারত বিরোধিতা করে সেই খালিস্তানিদের কাছে টানতে চাইছেন ট্রুডো। সেই যুক্তি গ্রহণযোগ্য হলেও কানাডা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ যে তথ্য প্রমাণ তুলে ধরার চেষ্টা করেছে তা যে মোদি সরকার ও তাঁর কূটনীতিকরা অগ্রাহ্য করেছেন তা স্পষ্ট। সোমবার কানাডা সরকারের কূটনীতিক বিতাড়নের সময় প্রমাণ তুলে ধরার কথা ট্রুডো জনসমক্ষে ঘোষণা করার পরেও ভারতের বিদেশমন্ত্রকের (Ministry of External Affairs) পক্ষ থেকে সে কথা অস্বীকার করা হয়েছে।

সব থেকে বড় বিষয়, যে লরেন্স বিষ্ণোইকে নিয়ে সংঘাত দুই দেশের, সেই বিষ্ণোইয়ের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনি মোদি সরকার। কার্যত গুজরাটের জেলে রেখে তাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত। ওয়াশিংটন পোস্ট (Washington Post)-এর খবর উল্লেখ করে তিনি তুলে ধরেন, কানাডার গোয়েন্দাদের সঙ্গে গত সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে (Singapore) বৈঠক করেছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল (Ajit Doval)। সেখানে বিষ্ণোইয়ের (Lawrence Bishnoi) বিরুদ্ধে সব তথ্য প্রমাণ তুলে ধরা হয়। ডোভাল প্রাথমিকভাবে বিষ্ণোইকে চিনতে অস্বীকার করলেও পরে বিষ্ণোইয়ের ক্ষমতা নিয়ে মারাত্মক তথ্য তুলে ধরেন। যেখানে তিনি বলেন, বিষ্ণোই যে কোনও জায়গা থেকে যে কোনও ধরনের বড় নাশকতামূলক কাজ করতে পারে।

তবে শুধু কানাডা নয়। ৯ অক্টোবর মুম্বইয়ে খুন হন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন কংগ্রেসের মন্ত্রী বাবা সিদ্দিকি (Baba Siddiqui)। খুনের দায় নেয় লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং (Bishnoi gang)। এরপরই সাকেতের প্রশ্ন, যদি কানাডার দাবি ভুলও হয়ে থাকে তাহলেও কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। “গুজরাটের জেলে থাকা সত্ত্বেও লরেন্স বিষ্ণোই এত প্রভাবশালী কীভাবে? গুজরাটের বাইরের অন্য রাজ্যের অপরাধের ঘটনায় বিষ্ণোইকে গুজরাটের জেল (Gijarat Jail) থেকে অন্যত্র সরানোর সব প্রচেষ্টা মোদি সরকার কেন নাকচ করে দিয়েছে? জেলের মধ্যে থেকেও কীভাবে দেশে এবং বিদেশে খুন, অপহরণের মতো ঘটনা সংঘটিত করতে পারে বিষ্ণোই? কে লরেন্স বিষ্ণোইকে নিরাপত্তা দিচ্ছে, কার নির্দেশে তিনি কাজ করছেন?” সেই সঙ্গে সাকেতের প্রশ্ন, “বিষ্ণোই কী গুজরাটের জেলে রয়েছেন, নাকি অমিত শাহ ও অজিত ডোভালের জন্য কাজ করার জন্য তাঁদের নিরাপত্তায় রয়েছেন।”

Related articles

ভুয়ো থানার নেপথ্যে বিভাস অধিকারীর পুরনো রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ

ভুয়ো থানা, জাল পুলিশ পরিচয়—বিভাস অধিকারীর কাণ্ড ইতিমধ্যেই জনমানসে রীতিমতো বিস্ময় ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু শুধু প্রতারণা...

শ্রীলঙ্কার মন্ত্রী ও শীর্ষ অর্থনৈতিক বিশিষ্টদের সঙ্গে নৈশভোজ-আলোচনা বাঙালি শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের 

বাংলা শিল্পোদ্যোগী প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের আয়োজিত এক বিশেষ নৈশভোজে হাজির হলেন শ্রীলঙ্কার তিন শীর্ষ অর্থনৈতিক নীতি-নির্ধারক। তারা হলেন শ্রম...

সোনামুখীতে তৃণমূল বুথ সভাপতিকে গুলি করে খুন! এলাকায় চাঞ্চল্য 

বাঁকুড়ার সোনামুখী ব্লকের চকাই গ্রামে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন তৃণমূলের বুথ সভাপতি আয়ুব খান। রবিবার রাতে এই ঘটনায়...

পুলিশের উপর বিরোধীদের হামলা-কুকথা: মঙ্গলবার পথে নামছে পুলিশ পরিবার

আন্দোলনের নামে কলকাতা শহর-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা আর সেটার রুখতে গিয়ে বারবার আক্রমণের শিকার পুলিশ...
Exit mobile version