ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’-র সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ২৩ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত রাজ্যের ৯ জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ডানা-র গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখার জন্য জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। তিনি জানান, ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে। নবান্নের (Nabanna) পাশাপাশি জেলাস্তরেও কন্ট্রোল রুম (Control Room) খোলা হচ্ছে। বিপজ্জনক এলাকার বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
আন্দামান সাগরে তৈরি ঘূর্ণাবর্ত বঙ্গোপসাগরে এসে শক্তি বাড়িয়ে বুধবার প্রবল ঘূ্র্ণিঝড়ের আকার নেবে। বৃহস্পতির সকালে বা রাতে ওড়িশা বা বাংলা আছড়ে পড়বে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে পুরী ও সাগরদ্বীপের মধ্যে আছড়ে পড়ার সম্ভবান। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে প্রবল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাংলার উপকূলবর্তী এলাকায়। এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক প্রশাসন। ইতিমধ্যেই বহু মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে আসা হয়েছে। এলাকায় থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের। প্রধান সচিব পদমর্যাদার আধিকারিকদের পর্যবেক্ষক হিসেবে ওই সাত জেলায় পাঠানো হয়েছে। পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতার কথায়, ২৪ তারিখ ল্যান্ডফলের কথা থাকলেও দুর্যোগ যে কোনও সময় আসতে পারে। সেই কারণেই ২৩ থেকে ২৬ তারিখ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে প্রয়োজনে বিপর্যস্ত মানুষকে স্কুলভবনে রাখা যাবে।

- পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, কলকাতা, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে
- ফেরি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে
- মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে
- পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছে
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যেই উপকূলের জেলাগুলিতে মাইকিং শুরু হয়েছে। নীচু এলাকা থেকে বাসিন্দাদের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান মমতা। বলেন, “আলিপুর আবহাওয়া দফতর অনুযায়ী ২৪ অক্টোবর রাত থেকে ২৫ অক্টোবর সকালের মধ্যে পুরী এবং সাগরদ্বীপের মাঝে ল্যান্ডফল হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর। এফেক্ট পড়বে হাওড়া , হুগলি, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা, পর্যটকদের সমুদ্রের ধার থেকে সরানোর কথা বলা হয়েছে।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, “সাত জন প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে সাত জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২৪ তারিখে ক্যাবিনেট বৈঠক আছে। কিন্তু সেখানে আবার দুর্যোগের কবলে যে জেলাগুলি রয়েছে সেখানকার মন্ত্রীদের আসতে নিষেধ করা হয়েছে।” একইসঙ্গে আর্থিক সাহায্য নিয়ে এদিন ফের একবার ক্ষোভ উগরে দেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে। বলেন, “পর পর একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলেও কেন্দ্রের তরফ থেকে সেইভাবে কোনও অর্থ সাহায্য মেলে না।”
