Wednesday, August 27, 2025

আমি জীবন দিতে তৈরি, ভাগ করতে রাজি নই: ছটপুজোয় একতার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

Date:

“আমি জীবন দিতে তৈরি আছি, ভাগ করতে রাজি নই।“ বৃহস্পতিবার ছট পুজো উপলক্ষ্যে তক্তাঘাট ও দহিঘাটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এই ভাবেই একতার বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, বিহারের চেয়ে বেশি ছট পুজো হয় এই বাংলায়। বাংলার সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির পরম্পরা তুলে ধরে তিনি জানান, এখানে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে থাকেন। কোনও উস্কানিতে কেউ যেন পা না দেন সেই সতর্ক করেন মমতা।

এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে একতার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমরা ধর্মের বিভাজন চাই না। সব ধর্মের মানে আছে, জাতির মানে আছে। প্রতিটির নিজের নিজের অধিকার আছে। আমরা কোনও ধর্মের বিরুদ্ধে নয়, সব ধর্মকে ভালবাসি। এখন বিহারে এত ছটপুজো হয় না, যত বাংলায় হয়। এটা আপনাদের মনে রাখতে চাইবে। আজকাল কেউ কেউ বাংলায় বিভাজন করতে চায়, আমি চাই না। আমি জীবন দিতে তৈরি আছি, ভাগ করত ভাগ করতে রাজি নই।“

ভারতের (India) বিভিন্নতার মধ্যে ঐক্যের পরম্পরা তুলে ধরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) বলেন, “এটা ভারত। এই দেশের সব রাজ্যে সবাই থাকে। সব জাতের মানুষ থাকেন। সব কাস্টের মানুষ থাকেন। কেউ ছোট নয়, কেউ বড় নয়। কেউ লম্বা, কেউ বেঁটে, কেউ কালো, কেউ ফর্সা। কেউ বামুন, কেউ কায়স্থ, কেউ এসসি, কেউ এসটি। সব ধর্মের প্রতি আমাদের ভালবাসা রয়েছে, যা ভাঙতে দেব না। ভেঙে ফেলা খুব সোজা, জোড়া লাগানো খুব কঠিন। ভারতে অনেক ভাষা, সংস্কৃতি আলাদা, তবুও আমরা ভারতীয়। তাই বাংলায় এই পরম্পরা স্বাধীনতার সময় থেকে আছে, সারা জীবন থাকবে। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলা সবচেয়ে বেশি লড়াই করেছে। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট গান্ধীজি দিল্লিতে ছিলেন না, ছিলেন বাংলার বেলেঘাটায়।“

হিন্দুদের এই পুজো মূলত বিহারী সম্প্রদায়ের মধ্যে হয়ে থাকে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, নেপালের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও এখন সাড়ম্বরে পালিত হচ্ছে ছট পুজো। মমতা বলেন, “আমরা সব ধর্মকে ভালবাসি। সে কারণেই তো বিহারের চেয়েও এখন বাংলায় বেশি ছট পুজো হচ্ছে।“ সকলকে ছট পুজোর অভিনন্দন জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সকলে ভালো করে উৎসব কাটান। কোথাও যেন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না হয়।“

ছটপুজোকে (Chat Puja) কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে গঙ্গাঘাট এবং নদীর পারগুলিতে প্রশাসনের তরফে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পুণ্যার্থীদের সতর্ক করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুজোর জন্য গঙ্গাঘাটে তাড়াহুড়ো করবেন না। ছোট ছোট গ্রুপ করে করে ধীরে ধীরে ঘাটে যাবেন। কেউ তাড়া দিলেও তাড়াহুড়ো করবেন না। ওতে পদপিষ্ট হয়ে যেতে পারেন। কোনও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে সকলকে নজর রাখতে হবে।”

এবারে ছট পুজো নিয়ে গানও লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার পোস্তা বাজারে জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে নিজেই একথা জানান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ওই গান এদিন গঙ্গার বিভিন্ন ঘাটে বাজানো হয়।







Related articles

তিনিই নিয়োগ করেছিলেন, এবার গৌড়বঙ্গের উপাচার্যকে সরালেন রাজ্যপালই

রাজ্যের তালিকা অগ্রাহ্য করে বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর কার্যত এক নায়কতন্ত্র চালানোয় অভিযুক্ত রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস (C...

ভারতে বসছে দাবা বিশ্বকাপের আসর, কী বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি?

চলতি বছরে ভারতে বসছে দাবা বিশ্বকাপের আসর। ২০০২ সালের পর আবারও দাবা বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চলেছে ভারত। ২৩...

একসঙ্গে গণেশ পুজোয়! সুনিতা বললেন ‘আমার গোবিন্দা শুধুই আমার’

বিচ্ছেদের যাবতীয় গুঞ্জন উড়িয়ে এক সঙ্গে গোবিন্দা-সুনিতা (Govinda-Sunita)। বুধবার বাড়ির গণেশ পুজোয় (Ganesh festival) ভেস্তে দিলেন নিন্দুকদের সব...

আমার ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে: মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজোয় মন্তব্য মমতার

১০১ বছরে পড়ল কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাসের গণেশপুজো (Ganesh Pujo)। বুধবার, সেই পুজোর উদ্বোধন করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়...
Exit mobile version